নিখোঁজের তিন মাস পর হত্যার অভিযোগ
টিকটকার সুমাইয়া (১৯) নামে এক গার্মেন্টস কর্মী তিন মাস আগে তার দাদীর বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয়। নিখোঁজের তিন মাস পর তার বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ ওঠে।
অনেক চেষ্টা করেও সুমাইয়া ও তার স্বামী হানিফকে খুঁজে পায়নি স্বজনরা। একপর্যায়ে জয়নাল নামের এক মাদক ব্যবসায়ীর মাধ্যমে সুমাইয়া হত্যার কথা জানতে পারেন স্বজনরা।
এ ঘটনায় নিহতের মা তাসলিমা বাদী হয়ে গত শুক্রবার শ্রীপুর থানায় একটি মামলা করেন। মামলার ভিত্তিতে র্যাব-১ অভিযুক্ত জয়নালকে গ্রেপ্তার করে। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে হানিফকে আটক করা হয়। এরপর হানিফের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে আজ সকাল ১০টা থেকে গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার বড়রিদার চালা গ্রামের এ লতিফের বাগানে র্যাব-১ অভিযান চালায়।
হত্যা মামলার আসামিরা হলেন শেরপুর জেলার নালিতাবাড়ী থানার কাকরকান্দি গ্রামের মৃত জহির উদ্দিনের ছেলে মোঃ হানিফ ও মোঃ জয়নাল আবেদীন (৩৮)।
নিহতের স্বজন ও মামলা সূত্রে জানা গেছে, নিহত সুমাইয়া স্থানীয় অটোস্পিনিং মিলস নামের একটি কারখানায় কাজ করতেন। একই সময়ে, তিনি টিকটক ভিডিও তৈরি করতেন।
এদিকে পরিচয়ের মাধ্যমে সুমাইয়ার সঙ্গে হানিফের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। দুই বছর আগে তাদের বিয়ে হয়। বিয়ের পর হানিফের প্রথম স্ত্রী ও সন্তানের কথা জানতে পারে সুমাইয়ার পরিবার। এ নিয়ে হানিফ ও সুমাইয়ার পরিবারের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এ বিরোধের জেরে গাজীপুর সদরের ভবানীপুরে দাদীর বাড়িতে যায় সুমাইয়া। পরে সেখান থেকে সুমাইয়াকে প্রলুব্ধ করে হানিফ। এরপর থেকে তার পরিবারের কেউ সুমাইয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেনি।
একপর্যায়ে সুমাইয়ার পরিবার জয়নালের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারে, তিন মাস আগে হানিফ তাকে ডেকে বাড়িতে নিয়ে গেছে। জয়নাল সেখানে গিয়ে সুমাইয়াকে মৃত অবস্থায় দেখতে পান।
সুমাইয়ার মৃত্যুর খবর পেয়ে সুমাইয়ার মা তাসলিমা বাদী হয়ে গত শুক্রবার শ্রীপুর থানায় মামলা করেন।
মামলার তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালায় র্যাব-১। এদিকে গ্রেফতারকৃত হানিফ জানায়, সে সুমাইয়ার লাশ লুকিয়ে রেখেছিল। সেই তথ্যের ভিত্তিতে আজ মঙ্গলবার সকালে উপজেলার বেরাইদের চালা গ্রামের এ.লতিফের মালিকানাধীন বহুতল ভবনের পেছনে ছাগল পালনের ছোট কক্ষে অভিযান চালায় র্যাব-১ পুলিশ। এ সময় ওই কক্ষে আরসিসি ঢালাই দেখা যায়। ঢালাই প্রথম স্তর ভাঙতে বালি বেরিয়ে এসেছিল। বালি অপসারণের পরে, ঢালাই আবার বেরিয়ে আসে। প্রায় এক ঘণ্টা চেষ্টা করেও লাশ উদ্ধার করা যায়নি। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
উদ্ধারের পর আনুষ্ঠানিক ব্রিফিং করা হবে বলে জানান র্যাব-১ এর কোম্পানি কমান্ডার।