গণপিটুনিতে আহত জাবি ছাত্রলীগ নেতার মৃত্যু
প্রকাশ্যে মারধরের পর পুলিশ হেফাজতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক শামীম আহমেদ ওরফে শামীম মোল্লা গণি মারা গেছেন। আশুলিয়া থানার পরিদর্শক (ওসি তদন্ত) কামাল হোসেন ও শামীমের পরিবার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে বুধবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের পেরিফেরাল গেট সংলগ্ন এলাকায় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা তাকে মারধর করে। রাত সাড়ে ৮টায় আশুলিয়া থানা পুলিশ হেফাজতে নেওয়ার পরে রাত ১২টার দিকে সাভার গণস্বাস্থ্য হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
বুধবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের পেরিফেরাল গেট এলাকায় গণধোলাই শেষে তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরাল বডির কাছে হস্তান্তর করা হয় বলে নিরাপত্তা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। পরে রাত সাড়ে ৮টায় উপাচার্যের উপস্থিতিতে তাকে আশুলিয়া থানা হেফাজতে নেয়। গত ১৫ জুলাই রাতে উপাচার্যের বাসভবনে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগে তাকে আটক ও গণধোলাই করা হয়েছে বলে শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তাকর্মীদের সহায়তায় তাকে নিরাপত্তা শাখায় নিয়ে গেলে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা তাকে আবারও মারে। কিন্তু পুলিশ তাকে থানায় নিয়ে গেলে সে নিজের পায়ে গাড়িতে ওঠে। এমনকি পুলিশের গাড়িতে নিয়ে যাওয়ার আগে তিনি নিজেই ওয়াশরুমে গিয়েছিলেন। পুলিশের একজন সদস্য তাকে টয়লেটে নিয়ে যান, বাকিটা তিনি নিজেই প্রবেশ করেন। তার শরীরের কোথাও রক্তক্ষরণ বা ফেটে যাওয়া ক্ষত নেই বলে তারা নিশ্চিত করেছেন।
এ বিষয়ে প্রক্টর অধ্যাপক রশিদুল আলম বলেন, “অফিসে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি বিপজ্জনক বোধ করেননি। এমনকি পুলিশের গাড়িতেও উঠেছিলেন। হাসপাতালে নেওয়ার পথে এমন একজন আসামির মৃত্যু রহস্যজনক। আমি জানি না। মনে হয় নিশ্চিত না হয়েই এই বিষয়ে মন্তব্য করা উচিত।
নিহত শামীম মোল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৯তম ব্যাচের ছাত্র ও শাখা ছাত্রলীগের জুয়েল-চঞ্চল কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। শামীমের বিরুদ্ধে মাদক সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ, জমি দখল, বিশ্ববিদ্যালয় ও আশপাশের এলাকায় চাঁদাবাজিসহ নানা অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। তার কাছে বেশ কিছু অনিবন্ধিত আগ্নেয়াস্ত্র রয়েছে বলে জানা গেছে। ছাত্রলীগের ভেতরে তাকে ‘শুটার শামীম’ বলা হতো। ১৫ জুলাই রাতে ছাত্রদের ওপর হামলায় তাকে আগ্নেয়াস্ত্র হাতে সামনের সারিতে নেতৃত্ব দিতে দেখা যায়।