সহিংসতা, হয়রানি, গ্রেপ্তার কোনোটাই চায় না জাতিসংঘ
জাতিসংঘ নির্বাচনের আগে কোনো সহিংসতা, গ্রেপ্তার বা হয়রানি দেখতে চায় না। বুধবার রাতে নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দফতরে নিয়মিত ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশ সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক এ কথা বলেন।
ব্রিফিংয়ে প্রশ্নোত্তর পর্বে একজন বাংলাদেশি হিউম্যান রাইটস ওয়াচের বিবৃতিটির বিষয়টি তুলে ধরেন। গত মঙ্গলবার পুলিশের গুলিতে তিনজনের মৃত্যুর অভিযোগ তুলে তিনি জানতে চান, জাতিসংঘের মহাসচিব কি বাংলাদেশের পরিস্থিতি জানেন?
জবাবে জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্র বলেন, ‘আমরা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রয়োজনীয়তার কথা খুব স্পষ্টভাবে বলেছি।
আমরা এই পর্যায়ে কোনো সহিংসতা বা নির্বিচারে গ্রেপ্তার বা হয়রানি না করার প্রয়োজনীয়তার কথাও বলেছি।”
এর আগে বুধবার বাংলাদেশে চলমান রাজনৈতিক সংঘাত নিয়ে জাতিসংঘের বিবৃতিতে আপত্তি জানায় সরকার। পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, “জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের বিবৃতিতে উল্লেখিত তথ্য সঠিক নয়। বাংলাদেশ সরকার এই ত্রুটিপূর্ণ বক্তব্যের প্রতিবাদ জানাবে।”
‘গতকাল রাতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ সংক্রান্ত এক প্রজ্ঞাপনে বলেছে, ‘বাংলাদেশ সরকার আশা করছে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয় তাদের আগের বক্তব্য সংশোধন করে সঠিক তথ্য উপস্থাপন করবে। অন্যথায় প্রতিষ্ঠান গ্রহণযোগ্যতা ও বিশ্বাসযোগ্যতা হারাবে।
গত সোমবার নিউইয়র্কে জাতিসংঘের ব্রিফিংয়ে জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক বাংলাদেশে রাজনৈতিক সংঘর্ষে ৯ জনের মৃত্যুর ঘোষণা দেন। জেনেভায় জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের মুখপাত্র লিজ থ্রাসেল পরের দিন মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে এই সংখ্যা ১১ বলে উল্লেখ করেছেন।
প্রসঙ্গত, গত শনিবার ঢাকায় সংঘর্ষের সময় পুলিশের এক সদস্য ও যুবদলের স্থানীয় এক নেতা নিহত হন। পরদিন হরতালে ১৩ জেলায় সহিংসতায় চারজন মারা যান। তাদের মধ্যে পৃথক ঘটনায় হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। গত মঙ্গলবার বিএনপি ও সমমনা দলগুলোর ডাকা অবরোধের প্রথম দিনে আরও চারজন নিহত হয়েছেন।
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয়ের মুখপাত্রের দেওয়া এক বিবৃতিতে হামলাকারীদের পরিচয় সম্পর্কে বিএনপির অভিযোগ অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
এর মাধ্যমে সহিংসতায় সরকার সমর্থিত লোকজনের সম্পৃক্ততারও ইঙ্গিত পাওয়া যায়।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন বলেন, “জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয়ের বক্তব্যের বর্ণনা খুবই ত্রুটিপূর্ণ এবং বাস্তবতা বর্জিত। আমরা এর প্রতিবাদ পাঠাব। আমরা মনে করি তাদের সঠিকভাবে জানানো হয়নি।
তিনি বলেন, জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয়ের তথ্যে ঘাটতি রয়েছে। এ ধরনের প্রতিষ্ঠানের তথ্যে ঘাটতি থাকা খুবই দুঃখজনক।