মার্কিন ব্যবসায়ীরা নির্বাচন নিয়ে চিন্তিত নন: সালমান এফ রহমান

0

প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান বলেছেন, বাংলাদেশে আসন্ন নির্বাচন নিয়ে মার্কিন ব্যবসায়ীদের মধ্যে কোনো উদ্বেগ নেই। মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (বিডা) ভবনে ইউএস চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।

ইউএস চেম্বারের ৪০ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল বৈঠকে অংশ নেয়। তাদের মধ্যে বিশ্বের বৃহত্তম ট্রিলিয়ন ডলারের মার্কিন ইক্যুইটি সংস্থা ব্ল্যাক স্টোন, প্রযুক্তি সংস্থা মেটা, জ্বালানি খাতের সংস্থা এপিলারেট এনার্জি, শেভরন, ইপনমোবিল এবং বিমান সংস্থা বোয়িংয়ের প্রতিনিধিরা রয়েছেন। বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যকে গতিশীল করতেই এই বৈঠক।

আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে মার্কিন বিনিয়োগকারীদের কোনো উদ্বেগ আছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে সালমান এফ রহমান বলেন, বাংলাদেশে স্বতঃস্ফূর্ত বিনিয়োগে কোনো ঝুঁকি দেখছেন না মার্কিন ব্যবসায়ীরা। নির্বাচন নিয়ে তাদের কোনো চিন্তা নেই। উদ্বেগ থাকলে নির্বাচনের আগে এত বড় প্রতিনিধি দল বিনিয়োগের জন্য বাংলাদেশে আসত না। তারা মনে করেন, বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে তাদের ভালো সম্পর্ক রয়েছে। প্রতিনিধি দলের সদস্যরা প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসা করেন।

সালমান এফ রহমান বলেন, মার্কিন ব্যবসায়ীদের বক্তব্য হচ্ছে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশের অভাবনীয় উন্নয়ন হচ্ছে। এখন এদেশে ব্যবসার পরিবেশ অনুকূল। এজন্য তারা বিনিয়োগে আগ্রহী। অনেক বড় কোম্পানি এসেছে। কোন কোন খাতে বিনিয়োগ করা যায় তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তবে স্বাস্থ্য খাতে আগ্রহ বেশি। তারা মনে করেন, বাংলাদেশের অনেক মানুষ উন্নত স্বাস্থ্যসেবার জন্য বিদেশে যায়। এদেশে উন্নত মানের চিকিৎসা ব্যবস্থা গড়ে তুলে উন্নত স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে পারলে কেউ বিদেশ যাবে না। এখানেই তৈরি হবে স্বাস্থ্যসেবার বড় বাজার। এজন্য তারা এ খাতে ব্যাপক বিনিয়োগ করতে চায়।

সালমান এফ রহমান উল্লেখ করেন, যুক্তরাষ্ট্রের এত বড় ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদল এর আগে বাংলাদেশ সফর করেনি। তিনি বলেন, আমেরিকান ব্যবসায়ীরা বলেছেন, সরকার স্মার্ট বাংলাদেশ করতে চায়, তাদের জন্য অনেক সুযোগ রয়েছে। তারা মনে করেন, বাংলাদেশের সম্ভাবনা খুবই ভালো। এজন্য মার্কিন কোম্পানিগুলো বিনিয়োগ করতে চায়।

তবে তারা তাদের বিভিন্ন অর্থ পরিশোধে বিলম্বের বিষয়টি তুলে ধরেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে তারা বোঝে, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণেই ডলার সংকট। এই সমস্যা কেটে যাবে। এছাড়া স্মার্ট বাংলাদেশ হলে ক্রস বর্ডার লেনদেন হবে ইলেকট্রনিক। বাংলাদেশ ব্যাংক, কাস্টমস ও অন্যান্য সংস্থার মধ্যে সমন্বয় করতে হবে। কারণ ইলেকট্রনিক লেনদেন অনেক দ্রুত হয়ে যায়। এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক মানের ব্যবস্থা করা হবে।

চীন বাংলাদেশে যে পরিমাণ পণ্য রপ্তানি করে তা বাংলাদেশের আমদানি তথ্যের তুলনায় অনেক কম। চীন ও বাংলাদেশের মধ্যে আমদানি-রপ্তানির পরিসংখ্যানে এত পার্থক্য কেন জানতে চাইলে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা বলেন, কাস্টমস আমদানির তথ্য সংগ্রহ করে, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো রপ্তানির তথ্য এবং বাংলাদেশ ব্যাংক পেমেন্ট ও প্রাপ্তির তথ্য সংগ্রহ করে। এই তিনটি প্রতিষ্ঠানের তিন ধরনের তথ্য রয়েছে। যে কারণে তথ্যের মধ্যে অমিল রয়েছে। তবুও তাদের মধ্যে সমন্বয় থাকা দরকার। কিন্তু আমদানি কম করা বিপজ্জনক। এর অর্থ হল কিছু ব্যবসায়ী আন্ডার ইনভয়েসিং করে ভ্যাট ফাঁকি দিচ্ছে। কেউ কেউ হয়তো হুন্ডির মাধ্যমে পরিশোধ করছেন। এটা খুবই উদ্বেগজনক।

এর আগে ইউএস-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট অতুল ক্যাশপ সাংবাদিকদের বলেন, আমেরিকান কোম্পানিগুলো কয়েক দশক ধরে দেশে বিনিয়োগ করে আসছে, যা বাংলাদেশের কর্মসংস্থান ও জিডিপি উন্নয়নে সহায়তা করছে।

তিনি বলেন, মার্কিন ব্যবসায়ীরা মহাকাশ, ডিজিটাল অর্থনীতি, জ্বালানি, স্বাস্থ্য ইত্যাদিতে বিনিয়োগে আগ্রহী। আমরা মনে করি এখানে বিনিয়োগের বড় সুযোগ রয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *