ডেঙ্গু রোগী গণনার বাইরে

0

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সারাদেশে ৭৭টি সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ডেঙ্গু রোগীদের তথ্য দেয়। এ ছাড়া ডেঙ্গুতে আক্রান্ত অনেকেই অনেক হাসপাতাল বা বাড়িতে চিকিৎসা নেন। সেই তথ্য সরকারি হিসাবের বাইরে থেকে যায়। তবে ডেঙ্গু রোগীর তথ্য চেয়ে সব বেসরকারি হাসপাতালে চিঠি দিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ। কিন্তু অনেকেই তার ডাকে সাড়া দিচ্ছেন না।

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে রোগীর সঠিক সংখ্যা ও তাদের অবস্থান জানা জরুরি। সঠিক সংখ্যা না হলে ঠিক কতজন মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হচ্ছেন এবং মারা যাচ্ছেন তার পরিকল্পনা করা কঠিন। স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী, জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন এক লাখের বেশি মানুষ। ৫৬৯ জন মারা গেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ সময়ে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ২ হাজার ২৯১ জন। সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, প্রকৃত ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা অন্তত ১০ গুণ।

ডেঙ্গু আক্রান্তের বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরের প্রতিদিনের তথ্য ছাড়াও দেশে ডেঙ্গু রোগী আছে কি না তা জানতে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে অনুসন্ধান করেছে সমকাল। দেখা যায়, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী অনেকের তথ্য অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। এমনকি ডেঙ্গু নিয়ে অনেক হাসপাতালের সঙ্গে যোগাযোগ করছে স্বাস্থ্য দফতর

এমনকি যারা প্রতিদিন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কন্ট্রোল রুম থেকে সংবাদমাধ্যমে ডেঙ্গু রোগীদের তথ্য দেন তারাও স্বীকার করেন যে ডেঙ্গু আক্রান্ত ও মৃত্যুর প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে। কারণ কন্ট্রোল রুম শুধুমাত্র হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের তথ্য পায়।

জানা গেছে, ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে রাজাধানীর স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ (মিটফোর্ড) হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৪ হাজার ৬০৩ জন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর দেখায় এই সংখ্যা ৪ হাজার ৪২৫। হাসপাতালের তথ্য অনুযায়ী, ছাড় পেয়েছেন ৪ হাজার ২১৮ জন। স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে, ছাড়পত্র নিয়েছেন ৪ হাজার ১৪৫ জন।

রাজধানীর পান্থপথের বেসরকারি হাসপাতাল কমফোর্ট নার্সিংয়ে চলতি আগস্ট মাসে ১৩৭ জনের ডেঙ্গু পরীক্ষা করা হয়। তাদের মধ্যে ৬৭ জন পজিটিভ এসেছে। কিন্তু সে সময় সেখানে মাত্র ১০ জন ডেঙ্গু রোগীর তথ্য দেয় স্বাস্থ্য বিভাগ।

পান্থপথের গ্রিন লাইফ হাসপাতালের মতে, প্রতিদিন ১০০ জনের বেশি ডেঙ্গুর জন্য পরীক্ষা করা হয়। তাদের মধ্যে অন্তত ৩০ জনকে ইতিবাচক হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। তবে মঙ্গলবার এই হাসপাতালে মাত্র ছয়জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। বর্তমানে হাসপাতালে ৪৩ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি রয়েছেন।

কমফোর্ট নার্সিং-এর মহাব্যবস্থাপক সেলিম সরকার বলেন, “স্বাস্থ্য অধিদফতর জানতে চায় না কতজন ডেঙ্গু পজিটিভ। শুধু কতজন রোগী ভর্তি হয়েছে, তাদের তথ্য দিতে হবে। আর অনেকে বাড়ি গিয়ে চিকিৎসা নেন। পজিটিভ হওয়ার পর অন্যান্য হাসপাতালেও।

গ্রীন লাইফ হাসপাতালের সহকারী মহাব্যবস্থাপক মো. সোহরাব আলী বলেন, শুধুমাত্র ভর্তি হওয়া ডেঙ্গু রোগীর তথ্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে পাঠানো হয়। কতজন পজিটিভ, সে তথ্য চাওয়া হয় না।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *