রাঙামাটি।ভূমিধসের কারণে সড়কের ক্ষতি হয়েছে ১৪ কোটি টাকা।ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৭১টি প্রাথমিক বিদ্যালয়
টানা বর্ষণে পাহাড় ধসে রাঙামাটির বিভিন্ন সড়কের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ অন্তত ১৪ কোটি টাকা। শুধু সড়ক ও জনপথ বিভাগের আওতাধীন রাঙামাটি-চট্টগ্রাম সড়কসহ ছয়টি রুটে ৪৪টি স্থানে ভূমিধসে ৯ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
জেলা প্রশাসন জানায়, টানা ১০ দিনের ভারি বর্ষণ, আকস্মিক বন্যা ও ভূমিধসে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে বাঘাইছড়ি, বিলাইছড়ি, জুরাছড়ি ও বরকল উপজেলায়। এসব উপজেলায় নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ায় প্রায় ৪০ হাজার মানুষ পানিতে আটকা পড়েছে। ২৭৮টি ছোট ও মাঝারি ভূমিধস হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৬ হাজার ৮১২টি ঘরবাড়ি, ৭০টি রাস্তা, ৩৬টি কালভার্ট ও ৩ হাজার ৪১৭ হেক্টর ফসলি জমি। এছাড়া বন্যায় চার শিশুসহ ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে।
রাঙামাটি সড়ক ও গণসড়ক বিভাগ জানায়, তাদের এখতিয়ারে রাঙামাটি-চট্টগ্রাম সড়কে ১০টি, ঘাগড়া-চন্দ্রঘোনা-বাঙ্গালহালিয়া-বান্দরবান সড়কে ২১টি, বাঙ্গালহালিয়া-রাজস্থলী সড়কে ৭টি, মানিকছড়ি-মহালছড়ি-খাগড়াছড়ি সড়কে তিনটি স্থান রয়েছে। সড়ক, বাগছড়ি-নানিয়ারচর সড়ক ও রানীরহাট-কাউখালী সড়কে দুটি। একটি জায়গা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভূমিধসে ক্ষতিগ্রস্ত এসব সড়ক অবিলম্বে মেরামত করে যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত রাখা হয়েছে। তবে সাময়িক সংস্কারের কারণে ঝুঁকি নিয়ে চলছে যানবাহন।
এ ছাড়া স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের আওতাধীন ৪০ থেকে ৫০ কিলোমিটার গ্রামীণ সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসব সড়কও কোনো না কোনোভাবে মেরামত করে যান চলাচল সচল রাখা হয়েছে। এসব সড়কে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ৪ থেকে ৫ কোটি টাকা।
স্থায়ী সরকারি প্রকৌশল অধিদপ্তরের রাঙামাটির নির্বাহী প্রকৌশলী আহমদ শফি জানান, এলাকাবাসীর দুর্ভোগ কমাতে সড়কটি সংস্কার করে তাৎক্ষণিকভাবে চালু করা হয়েছে। রাস্তা স্থায়ী সংস্কার এবং আরও গ্রামীণ রাস্তা নির্মাণের জন্য প্রায় ১০০ কোটি টাকার একটি প্রকল্প তৈরি করে মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে। সড়ক ও জনপথ বিভাগের রাঙামাটির নির্বাহী প্রকৌশলী সবুজ চাকমা জানান, সড়ক ও জনপথ বিভাগ থেকে রাঙামাটিতে ক্ষতিগ্রস্ত সড়কের তালিকা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে বন্যা ও ভূমিধসে রাঙামাটির ১০টি উপজেলায় ৭১টি প্রাথমিক বিদ্যালয় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে রাঙামাটি সদরে আটটি, কাউখালীতে চারটি, নানিয়ারচরে চারটি, বরকলে সাতটি, জুরাছড়িতে ১১টি, বাঘাইছড়িতে ১৪টি, কাপ্তাইয়ে চারটি, রাজস্থানে ১০টি ও বিলাইছড়ি উপজেলায় ৯টি বিদ্যালয় রয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সীমিত আকারে পাঠদান কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে বলে জানা গেছে।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সাজ্জাদ হোসেন জানান, বিদ্যালয়ের ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করে মেরামতের জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হচ্ছে।