সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে ঐক্যের আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি

0

রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে এবং সাম্প্রদায়িকতা, অগণতন্ত্র ও সহিংসতার বিরুদ্ধে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।

বুধবার একাদশ জাতীয় সংসদের ১৫তম অধিবেশনে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি এ কথা বলেন।

ধর্ম-বর্ণ-গোত্র নির্বিশেষে জাতির গণতান্ত্রিক যাত্রা ও দেশের অর্থ-সামাজিক উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করে লাখো শহীদের রক্তের ঋণ শোধ করার আহ্বান জানান তিনি।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার অঙ্গীকার বাস্তবায়নে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলের ঐক্য প্রয়োজন।

আবদুল হামিদ বলেন, সুশাসন প্রতিষ্ঠায় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, সুশীল সমাজ ও স্টেকহোল্ডার, দলমত নির্বিশেষে সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে।

রাষ্ট্রপতি রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি সহনশীলতা ও পারস্পরিক শ্রদ্ধার সংস্কৃতি গড়ে তোলার আহ্বান জানান।

চতুর্থ শিল্প বিপ্লব প্রসঙ্গে আবদুল হামিদ বলেন, উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে উত্তরণের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাংলাদেশের চতুর্থ শিল্প বিপ্লবকে কাজে লাগিয়ে দেশের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে হবে।

একই সঙ্গে তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবেলাসহ পুষ্টি ও খাদ্য নিরাপত্তা, ব্যাপক শিল্পায়ন, অর্থনৈতিক সুসংহতকরণ, সুষ্ঠু অবকাঠামো এবং মেধাভিত্তিক সমাজ গড়ে তুলতে হবে। এ লক্ষ্যে সবাইকে নিরলসভাবে কাজ করতে হবে।

সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বিশেষ অধিবেশনে উপস্থিত ছিলেন সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বর্তমান সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের কথা উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, বাংলাদেশ এখন বিশ্ব উন্নয়নের রোল মডেল। উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের ‘উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ’ গড়ার প্রত্যয়ে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।

তিনি সংসদকে জানান, ‘রূপকল্প-২০২১’ সফলভাবে বাস্তবায়নের পর সরকার ‘রূপকল্প-২০৪১ বাস্তবায়ন করছে। সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার সফল সমাপ্তির উপর অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা ২০২১-২০২৫ গৃহীত হয়েছে।

হামিদ বলেন, দেশে পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনা, জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবেশগত বিবর্তনের বিষয়গুলো বিবেচনা করে দীর্ঘমেয়াদি বাংলাদেশ ডেল্টা প্ল্যান-২১০০ প্রণয়ন করা হয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে, সরকার ২০৩১ সালের মধ্যে চরম দারিদ্র্যের অবসান এবং একটি উচ্চ-মধ্যম আয়ের দেশ হিসাবে উত্তরণ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উচ্চ আয়ের দেশে পরিণত করার জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করছে।

সংসদে দেওয়া সংক্ষিপ্ত ভাষণে রাষ্ট্রপতি সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ড তুলে ধরে বলেন, জাতি হিসেবে আমরা একটি ঐতিহাসিক মুহূর্তের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি।

রাষ্ট্রপতি বলেন, নিজস্ব অর্থায়নে স্বপ্নের পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ এখন প্রায় শেষের দিকে। চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর তলদেশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বহুলেনের দ্বিতীয় টানেলের নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। ৫৭তম দেশ হিসেবে বাংলাদেশ মহাকাশে সফলভাবে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করেছে।

তিনি উল্লেখ করেন, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে। সারাদেশে রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা সম্প্রসারণ করা হচ্ছে। ২০২২ সালের বিজয় দিবসের উপহার হিসেবে দেশের মানুষ প্রথম মেট্রোরেলে যাতায়াত করতে পারবে। বাংলাদেশের প্রতিটি ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।

রাষ্ট্রপতি বলেন, এমডিজির সাফল্যের ধারাবাহিকতায় ২০১৫ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত এসডিজির বিভিন্ন সূচকে অনন্য অগ্রগতির স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ সম্প্রতি ‘এসডিজি অগ্রগতি পুরস্কার পেয়েছে।

তিনি বলেন, এই অর্জন আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের জন্য একটি বিশাল অর্জন। এই সম্মান বাংলাদেশের, এই সম্মান সমগ্র বাঙালি জাতির।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *