তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনে ভূমিকা রাখার আহ্বান

0

ইউরোপীয় কমিশনের ভাইস প্রেসিডেন্টের কাছে ছয় ইইউ এমপির চিঠি।

নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে বাংলাদেশে অবাধ, স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়নকে (ইইউ) ভূমিকা রাখার আহ্বান জানিয়েছেন সংস্থাটির ছয়জন সংসদ সদস্য। তারা মানবাধিকার লঙ্ঘন বন্ধ, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং সরকার, বিএনপি ও অন্যান্য বিরোধী দলের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে চলমান সংকটের টেকসই ও গণতান্ত্রিক সমাধান খুঁজে বের করার আহ্বান জানিয়েছে।

সোমবার ছয়জন সংসদ সদস্য ইউরোপীয় কমিশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট জোসেপ বোরেলকে চিঠি লিখেছেন। ছয় এমপি হলেন- স্টেফানেক ইভান (স্লোভাকিয়া), মাইকেলা সোজদ্রোভা (চেক প্রজাতন্ত্র), আন্দ্রে কোভাতচেভ (বুলগেরিয়া), কারেন মলচিওর (ডেনমার্ক), জাভিয়ের নার্ট (স্পেন) এবং হেইডি হাউতালা (ফিনল্যান্ড)।

ইইউ পার্লামেন্টের বৃহত্তম এবং প্রাচীনতম গ্রুপ, ইপিপি সদস্য স্টেফানেক ইভানের সংসদীয় সহকারী ভেরোনিকা প্রাইসেলোভা সমকালকে একটি ই-মেইলে চিঠিটির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে ২০২২ সালের ২০ জানুয়ারি এমপি স্টেফানেক ইভান বাংলাদেশ ইস্যুতে ইউরোপীয় কমিশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট জোসেফের কাছে একটি চিঠি লেখেন। ওই চিঠিতে তিনি বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনে জড়িত থাকার অভিযোগে র‌্যাবের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপের আহ্বান জানান।

নতুন চিঠিতে বলা হয়েছে, ইইউ নেতৃত্ব কূটনৈতিক যোগাযোগের মাধ্যমে সারা বিশ্বে আইনের শাসন এবং মানবাধিকারের প্রচার করে। বাণিজ্য ও উন্নয়ন সহযোগিতায় দীর্ঘস্থায়ী অংশীদার হিসেবে, আমরা বিশ্বাস করি ইইউ-এর কাছে বাংলাদেশের জনগণের পাশে দাঁড়ানোর শক্তিশালী কারণ রয়েছে। ইইউকে অবশ্যই বাংলাদেশের সাথে মানবাধিকারের বিষয়ে একটি অবিচ্ছিন্ন সংলাপ বজায় রাখতে হবে না, সংলাপ থেকে বাস্তব ফলাফলও আনতে হবে। চিঠিতে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোতে মানবাধিকার লঙ্ঘনের সঙ্গে জড়িতদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করা এবং জিএসপি প্লাস সুবিধা পাওয়ার শর্ত প্রত্যাহার করার মতো সম্ভাব্য পদক্ষেপের সুপারিশ করা হয়েছে।

বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচনের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করে চিঠিতে বলা হয়েছে, নির্বাচন এই বছরের শেষে বা ২০২৪ সালের শুরুতে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। আমাদের মনে রাখতে হবে জনগণ তাদের প্রতিনিধি নির্বাচনের অধিকার রাখে। তবে এই অধিকার এখনো নিশ্চিত করা হয়নি। কারণ বাংলাদেশে কোনো গ্রহণযোগ্য নির্বাচন ব্যবস্থা নেই। কারচুপি, ভোটারদের অংশগ্রহণ না করাসহ নানা কারণে দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ভালো হয়নি। দশম সংসদ নির্বাচনও ছিল অ-অংশগ্রহণমূলক। প্রধান বিরোধী দল বিএনপি তা বয়কট করে। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকেও প্রশ্নবিদ্ধ করা হয়েছিল এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমর্থন পেতে ব্যর্থ হয়েছে বলে জানা গেছে।

এ প্রসঙ্গে ছয় সংসদ সদস্য সুশাসন ও মানবাধিকার বিষয়ক ইইউ-বাংলাদেশ যৌথ কমিশনের ফলাফল এবং এসব বিষয়ে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কাজ করার পরিকল্পনা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চান। চিঠির শুরুতে জাতীয় নির্বাচনে বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়টি তুলে ধরে উদ্বেগ প্রকাশের পাশাপাশি গণতন্ত্র ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রাখার আহ্বান জানানো হয়।

চিঠিতে দাবি করা হয়েছে, বাংলাদেশের বর্তমান সরকার ক্ষমতা সংহত করতে বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের বিচারবহির্ভূত হত্যা, অপহরণ, নির্যাতন ও মিথ্যা মামলা দিচ্ছে। ২০১৮ সালে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন পাসের ফলে সংবাদপত্রের স্বাধীনতাসহ মত প্রকাশের স্বাধীনতা খর্ব হয়েছে বলেও দাবি করা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *