ঢাকা-ওয়াশিংটন বৈঠক আজ।শ্রম শর্তের ক্ষেত্রে বাণিজ্যিক সম্পর্ক

0

দীর্ঘদিন ধরেই বাংলাদেশের শ্রম পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন যুক্তরাষ্ট্র। ওয়াশিংটনের দেশটির শ্রম সংস্থার স্বাধীনতা এবং দর কষাকষির অধিকার, জোরপূর্বক শ্রম, শিশুশ্রম এবং কর্মক্ষেত্রের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে। দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যে বাংলাদেশের শ্রম আইন ও নীতি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। ভবিষ্যতের ব্যবসা নির্ভর করবে শ্রম আইন ও নীতির ওপর। এসব বিষয়ে আলোচনা করতে শনিবার বিকেলে বাংলাদেশ সফরে এসেছেন যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধি (ইউএসটিআর) এর দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক ভারপ্রাপ্ত সহকারী সচিব ব্রেন্ডেন লিঞ্চ। তার সফরের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বেগ দূর করতে চায় বাংলাদেশ।

ব্রেন্ডন লিঞ্চ আজ সকাল থেকে শ্রম, বাণিজ্য, কৃষি, ডাক ও টেলিযোগাযোগ এবং শিল্প মন্ত্রণালয়ের সাথে দেখা করার কথা রয়েছে। এ ছাড়া সোমবার সকালে শ্রমিক সংগঠন ও ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গে তার বৈঠকের কথা রয়েছে। ছয়-সাত জনের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে মার্কিন সরকারের এই কর্মকর্তা রয়েছেন।

যুক্তরাষ্ট্র দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশের অন্যতম বড় বাণিজ্যিক অংশীদার। ওয়াশিংটন এক শতাব্দী ধরে শ্রমের অবস্থা এবং মানকে আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে নিয়ে আসার জন্য চাপ দিচ্ছে। তাজরীন ও রানা প্লাজা দুর্ঘটনার পর যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বিশেষ বাণিজ্য সুবিধা জিএসপি স্থগিত করে দেশটি। এরপর পোশাক খাতে ভবন নির্মাণ ও অগ্নি নিরাপত্তায় অগ্রগতি হলেও, সংগঠনের স্বাধীনতা, পেশাগত বৈষম্য, শ্রমিকদের স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা, গ্রহণযোগ্য কর্মপরিবেশ, শ্রমিকদের কর্মঘণ্টা ইত্যাদি বিষয়ে উদ্বিগ্ন বাংলাদেশ। এই বিষয়গুলি সহ শ্রম সম্পর্কে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সার্বিক উদ্বেগ দূর করতে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, বাংলাদেশের শ্রম সমস্যা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বেগ দীর্ঘদিনের। ঢাকা এ নিয়ে সমাধানে আসতে চায়। সম্প্রতি দুই দেশের মধ্যে অংশীদারিত্ব সংলাপে শ্রম খাতের অগ্রগতি তুলে ধরা হয়। সেই সঙ্গে আরও বিস্তারিত জানাতে তাদের বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানানো হয়। তারই পরিপ্রেক্ষিতে বৈঠক হতে যাচ্ছে। ব্রেন্ডেন লিঞ্চের সঙ্গে মূল বৈঠক হবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষের সঙ্গে। বৈঠকে আন্তর্জাতিক শ্রম আইনের মানদণ্ড অনুযায়ী বাংলাদেশে শ্রম আইনের পূর্ণ বাস্তবায়ন চাইবে যুক্তরাষ্ট্র।

কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, দুই দেশের ভবিষ্যৎ দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য নির্ভর করবে বাংলাদেশের শ্রম পরিস্থিতির ওপর। কোনো কঠোর সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে উদ্বেগের বিষয়গুলো সংশোধনের জন্য বাংলাদেশকে সময় দিতে চায় দেশটি। জিএসপি বাতিলের আগে যেমন হয়েছিল। শ্রম পরিস্থিতির অগ্রগতি নির্ভর করবে স্টেট ডিপার্টমেন্টের আন্ডার সেক্রেটারি জোসে ডব্লিউ ফার্নান্দেজের সফরের উপর।

ব্রেন্ডেন লিঞ্চ ঢাকার সঙ্গে বৈঠকে বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে নকল পণ্য পাঠানোর বিষয়টি তুলে ধরবেন। সেই সঙ্গে মেধাস্বত্ব আইন নিয়েও দুই দেশের মধ্যে আলোচনা হবে। এরই মধ্যে ওয়াশিংটন থেকে ঢাকাকে এ বিষয়ে জানানো হয়েছে। তবে স্বল্পোন্নত দেশের মধ্যে থাকার কারণে বাংলাদেশ বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা (ডব্লিউটিও) থেকে মেধাস্বত্ব অব্যাহতির সুবিধা পাচ্ছে। স্বল্পোন্নত দেশ কাতার ছেড়ে যাওয়ার পরও এই সুবিধা আরও কয়েকদিন বাড়ানোর অনুরোধ জানিয়েছে ঢাকা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *