রামুতে বিজিবি ও চোরাকারবারিদের সংঘর্ষে ১ জন নিহত
কক্সবাজারের রামু উপজেলার পূর্ব কাউয়ারখোপ এলাকায় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্যদের সঙ্গে চোরাকারবারিদের সংঘর্ষে আবদুল জব্বার (৩৬) নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। এতে তিন বিজিবি সদস্য আহত হয়েছেন। গত শনিবার রাতে পূর্ব কাওয়ারখোপ কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
আব্দুল জব্বার রামুর কাউয়ারখোপ ইউনিয়নের বৌলতলী গ্রামের জাকের আহমদের ছেলে। সে স্থানীয় একটি রড-সিমেন্টের দোকানের শ্রমিক। কাউয়ারখোপ ইউপি চেয়ারম্যান শামসুল আলম, সদস্য আজিজুল হক ও গ্রামবাসী তার পরিচয় নিশ্চিত করেছেন। তবে বিজিবির দাবি, আবদুল জব্বার চোরাকারবারি। আহত বিজিবি সদস্যরা হলেন- নাইক্ষ্যংছড়ি ১১ বিজিবি হাবিলদার মোহাইমিনুল ইসলাম, নায়েক মোঃ লুৎফর রহমান ও আবুল কালাম।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে চেয়ারম্যান শামসুল আলম জানান, রাত ৯টার দিকে। শনিবার পূর্ব কাউয়ারখোপ কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ-সংলগ্ন এলাকা থেকে মিয়ানমার থেকে পাচার করা ৫-৬টি গরু জব্দ করেছে বিজিবির নাইক্ষ্যংছড়ি ১১ ব্যাটালিয়নের সদস্যরা। পাচারকারীরা জব্দ করা গরুগুলো নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। এক পর্যায়ে তারা বিজিবি সদস্যদের লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে। বিজিবি সদস্যরা আত্মরক্ষার্থে গুলি ছোড়ে। এতে ঘটনাস্থলেই আব্দুর জব্বার গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন। ঘটনার পর বিজিবি সদস্যরা তার মরদেহ নিয়ে যায়।
স্থানীয়দের দাবি, আবদুল জব্বার চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। গুলির শব্দ শুনে তিনি জনতাসহ ঘটনাস্থলে ছুটে যান। এরপর সেখানে তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়। গতকাল বিকেলে আবদুল জব্বারের মরদেহ কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন।
১১ বিজিবি এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, সীমান্তে চোরাই গরু আটকের পর টহল দল পায়ে হেঁটে ক্যাম্পে ফিরছিল। প্রায় ২০০-৩০০ সশস্ত্র চোরাকারবারী, দুর্বৃত্ত এবং স্থানীয় সহযোগীরা দেশীয় অস্ত্র, লাঠি ও ইট নিয়ে রাত ৮:৪০টায় কাওয়ারখোপ এলাকায় অতর্কিত হামলা চালায়। টহল দলের সবাই কমবেশি আহত এবং তিন সদস্য গুরুতর আহত হয়। টহলদল আত্মরক্ষার্থে গুলি চালাতে বাধ্য হয়। এক চোরাকারবারীকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে একটি দেশীয় সিঙ্গেল ব্যারেল বন্দুক, একটি ক্রাচ ও দা জব্দ করা হয়েছে। আহত বিজিবি সদস্যদের চিকিৎসার জন্য পার্শ্ববর্তী নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়েছে। গুরুতর আহত তিন সদস্যকে উন্নত চিকিৎসার জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ব্যাপারে আইনি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
রামু থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ারুল হোসেন জানান, গতকাল বিকেল পর্যন্ত বিজিবির পক্ষ থেকে কোনো মামলা হয়নি।