সীতাকুণ্ডে ভয়াবহ বিস্ফোরণ।কারো হাত উড়ে গেছে, কারো পা চলে গেছে

0

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক থেকে ২০০ গজের মধ্যে সীমা অক্সিজেন প্ল্যান্ট। সড়কের উত্তর পাশে কয়েক একর জমির ওপর কারখানাটি অবস্থিত। কারখানার মাঝখানে প্ল্যান্ট স্থাপন করা হয়। সেটাই এখন মৃত্যু উপত্যকা। প্ল্যান্টের ২০০ গজের মধ্যে একজন শ্রমিকের পোড়া হাত। একটু দূরে শ্রমিকদের প্যান্ট ও পা ঝুলতে দেখা গেছে। এমন ভয়াবহতা ছড়িয়ে আছে সীতাকুণ্ডের কদমরসুল অক্সিজেন প্লান্টে।

সে কারখানায় হেলপার হিসেবে কাজ করত। ফোরকান। অন্য দিনের মতো শনিবারও কাজ করছিলেন তিনি। আকস্মিক বিস্ফোরণ। এরপর আর কিছুই মনে নেই তার। হাসপাতালের বেডে চমেকের জ্ঞান ফিরলে তিনি দেখতে পান তার বাম হাতের দুটি আঙুল উড়ে গেছে। এখন হাতে ব্যান্ডেজ। আরেকটি আঙুলের অবস্থা খুবই খারাপ। তার মতোই মাসুদের ডান পা উড়ে গেছে। লোহার ব্লেডের আঘাতে রিপনের বুক ও উরু থেঁতলে যায়। তাদের মতো বিস্ফোরণে আহত হয়েছেন ১৮ জন। আহতদের কারো পায়ে ক্ষত, কারো মাথায়, কারো চোখে গুরুতর আঘাত রয়েছে। কেউ কেউ পুড়ে গেছে। মৃত দুজনের ডাল ফুরিয়ে গেছে। বিস্ফোরণে আহতদের চিকিৎসার জন্য ছুটতে হয়েছে চমেক হাসপাতালের চিকিৎসকদের। হাসপাতালের সামনে উৎসুক জনতা জড়ো হয়।

চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম আহসান জানান, হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ২১ জনের মধ্যে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। আমাদের সকল ডাক্তার, নার্স এবং কর্মীরা আহতদের চিকিৎসা করছেন।

কদমরসুল এলাকার বাসিন্দা কামাল উদ্দিন জানান, বিস্ফোরণের পর আশেপাশে টিনের টুকরো ও লোহার টুকরো পড়ে আছে। কারখানার ভেতরে আহত অনেকের হাতের কব্জি উড়ে গেছে। কারো পা উড়ে গেছে। অনেকে পুড়ে গেছে। মুসলিম উদ্দিন নামের এক বাসিন্দা বলেন, অনেকের হাত-পা কেটে ফেলা হয়েছে। আধা কিলোমিটার দূরে এখান থেকে উড়ে যাওয়া লোহার টুকরার আঘাতে শামসুল আলম নামে একজনের মৃত্যু হয়।

অক্সিজেন প্লান্ট বিস্ফোরণ: সাত সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন

নিহত ফরিদের স্ত্রী রাশেদা জানান, তাদের তিন মেয়ে রয়েছে। সবাই ছোট। তার আয়েই চলে ফরিদের সংসার। হেলপারের কাজ করে প্রতিমাসে ১৩ থেকে ১৫ হাজার টাকা আয় করতেন। এখন মেয়েদের কে দেখভাল করবে, কে সংসার চালাবে কেউ জানে না।

প্রসঙ্গত, শনিবার বিকেলে সীতাকুণ্ডের কদমরসুল (কেশবপুর) এলাকায় সীমা অক্সিজেন অক্সিকো লিমিটেডের প্লান্টে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ছয়জন নিহত হয়েছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *