সবকিছু করেও মাঠের সেরা সাকিব

0

জাতীয় দলের সাবেক কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ চলাকালীন সিডনিতে এক সাক্ষাৎকারে বলেন, সাকিবের মতো সেঞ্চুরিতে মাত্র দু-একজন ক্রিকেটার আসে। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ ভবিষ্যতে অনেক বড় ক্রিকেটার তৈরি করতে পারলেও একজন সাকিব পাবে না। বাঁহাতি ক্রিকেটারের প্রতিভা ও প্রজ্ঞার প্রশংসা করেছেন চন্ডিকা। সাকিব নিজেও প্রতিনিয়ত প্রমাণ করে যাচ্ছেন তিনি বাড়াবাড়ি করেননি। আন্তর্জাতিক ও জাতীয় পর্যায়ের ক্রিকেটে বাঁহাতি এই অলরাউন্ডারের উপস্থিতি উত্তেজনা ছড়াচ্ছে। সংসার সামলানো থেকে শুরু করে বিজ্ঞাপনের কাজ, ব্যবসা-বাণিজ্যের পাশাপাশি ক্রিকেট মাঠেও উজার করে দেন নিজেকে। কোনো কিছুই তার পারফরম্যান্সে প্রভাব ফেলতে পারে না।

ভারতের বিপক্ষে হোম সিরিজের পর তিনি কিছুটা বিশ্রাম পেয়ে স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র থেকে দেশে ফিরেছেন। মাগুরায় পারিবারিক পিকনিক উদযাপন এবং ঢাকায় ফিরে ব্যস্ত। বিজ্ঞাপনের কাজ ছাড়াও বিপিএলের দল ফরচুন বরিশালের সঙ্গে পরিকল্পনা করতে হচ্ছে তাকে। কারণ তিনি দলের প্রাণ। তাকে ঘিরেই সব আয়োজন। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত সারাদিনের ব্যস্ততার পর অক্লান্ত সাকিব। ৩৬ বছর বয়সেও শরীর ও মন এখনো তারুণ্যময়। মাঠে ঢোকার সঙ্গে সঙ্গে তার শরীরে কোনো জড়তা নেই।

বিপিএল শুরুর আগে থেকেই বিজ্ঞাপনের কাজে ব্যস্ততা। টুর্নামেন্ট ম্যাচগুলির মধ্যে অনুমোদনের কম কিছুই থামে না। ক্রিকেট মাঠে সতীর্থদের সঙ্গে আড্ডাও থেমে নেই। মাঠে, পাশের লোকজনের সঙ্গে খুনসুটিও হয়। সর্বোপরি তিনি একজন পারফরমার ক্রিকেটার। এই বিপিএলে ফরচুন বরিশাল চার ম্যাচের তিনটিতে জিতেছে। যেখানে বাঁহাতি অলরাউন্ডারের পারফরম্যান্স অনস্বীকার্য। গতকাল চট্টগ্রামে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের বিপক্ষে ৮১ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলেছেন। ৪৫ বলে ৮টি চার ও ৪টি ছক্কা মেরে ইনিংসটি শেষ করেন তিনি। একটি উইকেটও নেন তিনি। অলরাউন্ড দক্ষতায় ম্যাচ সেরার পুরস্কারও জিতে নেন তিনি। সিলেট স্ট্রাইকার্সের বিপক্ষে তাদের প্রথম ম্যাচে হারলেও, তারা ২০৯.৩৭ স্ট্রাইক রেটে ৩২ বলে ৬৫ রানের ইনিংস খেলে।

সাকিবের সমসাময়িক অনেক ক্রিকেটারই খেলছেন বিপিএলে। সাকিব আল হাসান, মাশরাফি বিন মুর্তজা, তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের সঙ্গে দেশের ক্রিকেটে পঞ্চপাণ্ডবের জাগরণ সৃষ্টি হয়, মাশরাফিকে নিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের আকাশ থেকে প্রথম নক্ষত্রের পতন ঘটে। বাকি চারজন এখনো জাতীয় দলে কোনো না কোনো ফরম্যাটে খেলছেন। সাকিবই একমাত্র ব্যতিক্রম, যিনি তিনটি সংস্করণেই ধারাবাহিকভাবে খেলে যাচ্ছেন। ফিরেছেন টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি দলের নেতৃত্বে।

সেখানেই টি-টোয়েন্টি ছেড়েছেন তামিম ও মুশফিক। টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়া মাহমুদউল্লাহ টি-টোয়েন্টি দল থেকে বাদ পড়েছেন। এই তিনজনই বিপিএলে খেলছেন। তবে মাঠের পারফরম্যান্সে তাদের কেউই সাকিবের ধারে কাছে নেই। সিলেট স্ট্রাইকার্সের হয়ে দুটি সংক্ষিপ্ত কার্যকরী ইনিংস খেলেছেন শুধু মুশফিক। কিন্তু তামিম বা মাহমুদউল্লাহর ব্যাট সেভাবে হাসছে না। এ কারণেই মাহমুদউল্লাহ কোনো দ্বিধা ছাড়াই বলেছেন- সাকিবের ক্রিকেট প্রতিভা অন্য মাত্রায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *