বাবা আর দাদার পথ ধরে মহিষের গাড়িতে চড়ে বিয়ে

0

ছোটবেলার স্বপ্ন ছিল মহিষের গাড়িতে বিয়ে করতে যাওয়া। কারণ তার বাপ-দাদাও মহিষের গাড়িতে চড়ে বিয়ে করতে গিয়েছিল। ওই পথ ধরে উমর ফারুক (২৯) নামে এক যুবক মহিষের গাড়িতে করে কনের বাড়িতে যান। শুক্রবার রাতে তিনি মহিষের গাড়িতে চড়ে কনের বাড়িতে আসেন। পরে সেখানে তাদের বিয়ে সম্পন্ন হয়।

উমর ফারুক কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার সদরের চন্দ্রখানা মুসুল্লি পাড়া গ্রামের কৃষক ফজলুল হকের ছেলে। তিনি পেশায় উপ-সহকারী মেডিকেল অফিসার।

ঘটক রাজু সরকার জানান, উভয়ের মতামতের ভিত্তিতে লালমনিরহাট সদর উপজেলার কুলাঘাট ইউনিয়নের দেবদেবীর হাট এলাকার বেলাল হোসেনের মেয়ে বিলকিস আক্তারের (২৩) সঙ্গে উমর ফারুকের বিয়ে ঠিক হয়। শুক্রবার রাতে তারা মেয়ের বাড়িতে বিয়ে করতে আসে। ৯ লাখ টাকা দেনমোহরে বিয়ে হয়েছে। এ উপলক্ষে বরের সঙ্গে ছিল ২টি মহিষের গাড়ি। এছাড়া ৭টি মাইক্রোবাস ও মোটরসাইকেলে করে বিয়ে বাড়িতে আসেন স্বজনরা।

ফুলবাড়ী মহিলা ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক জয়নাল আবেদীন ও স্থানীয় সামিউল ইসলাম বেনু মাষ্টার জানান, ছেলে নিজ ইচ্ছায় মহিষের গাড়িতে করে বিয়ে করতে গিয়েছিল। এ দৃশ্য দেখে গ্রামের নারী-পুরুষ রাস্তার দুই পাশে জড়ো হন।

জানা গেছে, ফুলে সজ্জিত মহিষের গাড়িতে বরকে দেখে অনেকেই সেলফি তুলতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে বরের সঙ্গে মহিষের গাড়ির ছবি পোস্ট করেন কেউ কেউ।

বর উমর ফারুক বলেন, আমার দাদা হাতির পিঠে চড়ে বিয়ে করতে গিয়েছিলেন। আর বাবা গিয়েছিলেন মহিষের গাড়িতে চড়ে বিয়ে করতে। বংশের পুরনো ঐতিহ্য ধরে রাখতে আমারও স্বপ্ন ছিল মহিষের গাড়িতে বিয়ে করার। সেই স্বপ্ন পূরণ করতে এবং পরিবারের ঐতিহ্য ধরে রাখতে শুক্রবার বিকেলে মহিষের গাড়িতে চড়ে বিয়ে করতে যাই।

বরের চাচা শরীয়তুল্লাহ ও বড় বোন ফাতেমা জানান, এমন ঘটনা দেখে তারা মুগ্ধ।

কনের বাবা বেলার হোসেন জানান, বর মহিষের গাড়িতে বিয়েতে আসায় তারা খুশি। জামাই পুরানো দিনের স্মৃতি আগলে রেখেছেন। এ কারণে তারা ছাড়াও গ্রামের লোকজন বরকে ফুল দিয়ে অভিনন্দন জানায়।

তিনি বলেন, জামাই মহিষের গাড়ি নিয়ে আমার মেয়েকে বিয়ে করতে এসেছে- এটা আমাদের এলাকায় স্মৃতি হয়ে থাকবে। আমার মেয়ে লালমনিহাট সরকারি কলেজের উদ্ভিদ বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *