নড়াইলে কোটিপতির সঙ্গে লাখপতির লড়াই।জেলা পরিষদ নির্বাচন

0

নড়াইল জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে এক কোটিপতির বিরুদ্ধে লড়ছেন দুই লাখপতি। এখানে প্রার্থীরা হলেন- আওয়ামী লীগ সমর্থিত জেলা সভাপতি অ্যাডভোকেট সুবাস চন্দ্র বোস, লোহাগড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ ফয়জুল আমীর ও লোহাগড়া উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শেখ মোঃ সুলতান মাহমুদ বিপ্লব। নির্বাচন কমিশনে (ইসি) দাখিল করা হলফনামায় প্রার্থীরা তাদের জীবনবৃত্তান্ত ও সম্পদের বিবরণ দিয়েছেন। তাদের হলফনামা অনুযায়ী তিনজনই শিক্ষিত। কিন্তু সুবাস চন্দ্র আর্থিক সম্পদে অনেক এগিয়ে।

হলফনামায় দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, সুবাস চন্দ্রের অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ ২ কোটি ১৪ লাখ ৭ হাজার ৭৪৬ টাকা এবং স্ত্রী মিনতি বোসের নামে বিনিয়োগ রয়েছে ১ কোটি ৭১ লাখ ২৫ হাজার টাকা। আওয়ামী লীগের দুই বিদ্রোহী প্রার্থীর চেয়ে এই দম্পতির সম্পত্তি তিনগুণ বেশি। এর মধ্যে সৈয়দ ফয়জুল আমীরের জমার পরিমাণ ৩০ লাখ ৪৬ হাজার ৯১ টাকা এবং বিপ্লবের ব্যবসায়িক মূলধন ৬৯ লাখ টাকা।

হলফনামা অনুযায়ী, কৃষি, বাড়ি-দোকান ভাড়া, শেয়ার, সঞ্চয়পত্র, ব্যাংক আমানতসহ বিভিন্ন খাত থেকে সুবাস চন্দ্রের বার্ষিক আয় ৩৪ লাখ ৬৩ হাজার ৯৪৩ টাকা। তার নির্ভরশীলদের আয় ১৬ লাখ ৭৫ হাজার ৪১৭ টাকা। হাতে নগদ দেড় লাখ টাকা। সুবাস চন্দ্রের স্থাবর সম্পদের মধ্যে রয়েছে এক বিঘা কৃষি, ১৩ শতাংশ অকৃষি, স্ত্রীর নামে এক একর ৫ শতাংশ অকৃষি জমি, একটি দোতলা বাড়ি এবং একটি ব্যক্তিগত গাড়ি।

সুবাস চন্দ্রের প্রতিদ্বন্দ্বী লোহাগড়া উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সৈয়দ ফয়জুল আমীরের বিভিন্ন খাত থেকে বার্ষিক আয় ৬ লাখ ৮০ হাজার ১৯৬ টাকা। সেখানে নগদ দেড় লাখ টাকা। স্ত্রীর নামে স্বর্ণ ৩১ ভূরি রয়েছে। স্থাবর সম্পত্তির মধ্যে ৩ একর ৫০ শতাংশ কৃষি, ৩০ শতাংশ অকৃষি, বাগান-আবাসিক ও বাণিজ্যিক জমি ৩ একর ৫৬ দশমিক ৫ শতাংশ এবং নিজের নামে ১০ শতাংশ দোতলা বাড়ি।

আরেক বিদ্রোহী চেয়ারম্যান প্রার্থী হলেন লোহাগড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও সাবেক জেলা পরিষদের প্রশাসক শেখ সুলতান মাহমুদ বিপ্লব। তার বার্ষিক আয় ১১ লাখ ২৫ হাজার টাকা। নগদ আড়াই লাখ টাকা। তার নামে পাঁচ এবং স্ত্রীর নামে ২০ভরি সোনা রয়েছে।

এদিকে মেহেরপুর জেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থী অ্যাডভোকেট আবদুস সালামের চেয়ে এগিয়ে রয়েছেন দলের বিদ্রোহী প্রার্থী মো. দাস বার্তা হলফনামায় পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, বিভিন্ন খাতে আবদুস সালামের বার্ষিক আয় সাড়ে ৬ লাখ টাকা, গোলাম রসুলের আয় ৮ লাখ ৪৮ হাজার টাকা।

আবদুস সালামের কাছে নগদ ২৫০,০০০ এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানে ১৫২.০০০ রয়েছে। তার নামে ২০ভরি স্বর্ণ এবং স্ত্রীর নামে ২৫ ভরি স্বর্ণ রয়েছে। ব্যবসায় বিনিয়োগ ১৫ লাখ ৩০ হাজার টাকা। ১৪ বিঘা কৃষি ও অকৃষি জমি, ১,২৫০ বর্গফুটের একটি চারতলা বাড়ি এবং ৬০ শতাংশ জমিতে ১,৬০০ বর্গফুটের একটি অ্যাপার্টমেন্ট রয়েছে।

এখানে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী (স্বতন্ত্র) গোলাম রসুলের নগদ দেড় লাখ ও আর্থিক ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ রয়েছে ৬ লাখ ৯৫৭ টাকা। তিনি পাঁচটি এবং তার স্ত্রীর ২৫ভরি স্বর্ণ রয়েছে। এই দম্পতির প্রায় ৩৬ বিঘা কৃষি ও অকৃষি জমি রয়েছে। একটি দোতলা ও একটি তিনতলা বাড়ি রয়েছে। তবে ব্যাংকটির ঋণ রয়েছে ৭৬ লাখ ৭০ হাজার ৯৪৪ টাকা।

গোলাম রসুল ২০১৬ সালের জেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত মিয়াজান আলীর বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে জয়ী হন। পরে জেলা প্রশাসকের দায়িত্ব পান। গতবারের মতো এবারও আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না চেয়ে বিদ্রোহী হয়েছেন গোলাম রসুল।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আল-মামুন সরকার ও জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি ও জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক চেয়ারম্যান শফিকুল আলম। এখানে ১৭ অক্টোবর ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। দুই প্রার্থীর হলফনামা থেকে বোঝা যায় যে কোনোটিই অন্যটির চেয়ে কম নয়। তবে ঢাকায় বেশ কিছু ফ্ল্যাট ও দোকান থাকায় সম্পদের দিক থেকে এগিয়ে রয়েছেন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী শফিকুল আলম। তিনি পিছিয়ে থাকলেও স্ত্রীর নামে অনেক টাকা লাগিয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী। বিভিন্ন খাতে শফিকুলের বার্ষিক আয় ১৫ লাখ ১১ হাজার ৯০৮ টাকা। ২১২ দশমিক ২৫ শতক কৃষি জমি, ঢাকায় চার বিঘা পতিত জমি, টঙ্গীতে দোকান, ঢাকার বারিধারায় একটি ফ্ল্যাট এবং পূর্বাচলে চার কাঠা জমি।

অস্থাবর সম্পদের মধ্যে শফিকুলের নগদ ৬১ লাখ ১১ হাজার ৮৬১ টাকা, স্ত্রীর কাছে ৫০ লাখ টাকা, ব্যাংকে ১ কোটি ৮৭ লাখ ৩৬ হাজার ১৩৯ টাকা, ৩৫ লাখ ৩০ হাজার টাকা মূল্যের দুটি গাড়ি, ২০ হাজার টাকার অলংকার, ১ লাখ ২০ হাজার টাকা। তার স্ত্রীসহ অন্যদের নামে ব্যাংকে হাজার টাকা ব্যবসার মূলধন রয়েছে ২ লাখ ৪৫ হাজার টাকা।

হলফনামা অনুযায়ী, আল-মামুনের কৃষি থেকে বার্ষিক আয়, বাড়ি ভাড়া, শেয়ার, সঞ্চয়পত্র, ব্যাংক জমা ও স্বাধীনতা সংগ্রাম হিসেবে প্রাপ্ত সম্মানী।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *