আঙুলের ছাপ না মিললে ভোটের সুজোগ কমছে।ইভিএম সংক্রান্ত নতুন বিধান হচ্ছে

0

ইভিএমে ভোটারের আঙুলের ছাপ না পাওয়া গেলে সর্বোচ্চ এক শতাংশ ভোটারকে ভোট দিতে দেওয়ার বিধান যুক্ত করে আইনের সংশোধনীর খসড়া তৈরি করেছে নির্বাচন কমিশন। গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধনের চূড়ান্ত প্রস্তাব শিগগিরই আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার। আলমগীর।

সোমবার নির্বাচন ভবনে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের তিনি এ সিদ্ধান্তের কথা জানান। ইসির এই প্রস্তাব মানা হলে কোনো ভোটকেন্দ্রে ১০ শতাংশের বেশি ভোটারের আঙুলের ছাপ না পাওয়া গেলে তারা ভোট দেওয়ার সুযোগ পাবেন না।

ইসি কর্মকর্তারা জানান, জাতীয় পরিচয়পত্র বিতরণের আগে প্রত্যেক ভোটারের আঙুলের ছাপ নেওয়া হয়। ইভিএমে ভোট দিতে আঙুলের ছাপ না মিললে ব্যালট ইউনিট ওপেন হয় না। কোনো ভোটার এই সমস্যার সম্মুখীন হলে, সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার তার/তার আঙুলের ছাপ দিয়ে কেন্দ্রে তাৎক্ষণিক সমাধানের জন্য ব্যালট ইউনিট খুলতে পারেন। যাইহোক, বিদ্যমান আইনে একজন কর্মকর্তা সর্বোচ্চ কতজন ভোটার এই পদ্ধতি ব্যবহার করতে পারবেন তা নির্দিষ্ট করেনি।

মো: আলমগীর বলেন, যাদের আঙুলের ছাপ মিলছে না, তাদের ভোট দেওয়ার অধিকার আছে। প্রিসাইডিং অফিসার পরীক্ষায় সন্তুষ্ট হলে ভোটারকে ভোট দেওয়ার অনুমতি দেন। প্রিসাইডিং অফিসার শুধুমাত্র ভোট দেওয়ার অনুমতি দেন। ভোটার গোপন কক্ষে গিয়ে নিজেই ভোট দেন। প্রিসাইডিং অফিসারের কাছে একটি কেন্দ্রে সর্বাধিক ১ শতাংশ ভোটারকে এই সুবিধা দেওয়ার বিকল্প রয়েছে। এ নিয়ে সংশয় এড়াতে আইনের কাঠামোতে আনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ইসি প্রস্তাবটি আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠাচ্ছে। তিনি বলেন, প্রিজাইডিং অফিসারের ক্ষমতা ৫০ শতাংশ। ইভিএম মেশিন সেই অনুযায়ী কাস্টমাইজ করা হয়। সে তার চেয়ে বেশি দিতে পারে না।

সাধারণত এক শতাংশের বেশি ভোটারের ক্ষেত্রে এই ক্ষমতা প্রয়োগের প্রয়োজন হলে প্রিজাইডিং অফিসার নির্বাচন কমিশনের বিশেষ অনুমতি নেন। তবে ইসির এই প্রস্তাব গৃহীত হলে সেই সুযোগ আর থাকবে না। এ বিষয়ে মো: আলমগীর বলেন, ১ শতাংশের বিষয়টি আইনি কাঠামোতে এলে সেই বিশেষ ব্যবস্থা থাকবে না।

এমন ক্ষেত্রে একজন ভোটারের সাংবিধানিক অধিকার ক্ষুণ্ন হবে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে ড. আলমগীর বলেন, এটা বৃহত্তর ভালোর জন্য করা হচ্ছে। সন্দেহ, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এটা নিয়ে প্রশ্ন তোলে, তাই বৃহত্তর স্বার্থে ইসি এটা করতে যাচ্ছে।

নির্বাচন কমিশনার আলমগীর আরও বলেন, এখন সব ভোটারের ১০ আঙুলের ছাপ নেওয়া হচ্ছে। এতে আঙুলের ছাপ নিয়ে আর কোনো সমস্যা হবে না। কারণ কিছু আঙুলের ছাপ মিলবে। তাহলে ১ শতাংশেরও এই সুযোগের প্রয়োজন হবে না।

ইভিএমে প্রধানত দুটি অংশ থাকে। একটি কন্ট্রোল ইউনিট (নিয়ন্ত্রণ অংশ), অন্যটি ব্যালট ইউনিট (যেখানে প্রার্থীর নাম ও প্রতীক)। ইভিএমে ভোট দেওয়ার ক্ষেত্রে কন্ট্রোল ইউনিটে ভোটারের আঙুলের ছাপ ব্যবহার করে বৈধ ভোটার শনাক্ত করা হয়। আঙুলের ছাপ মিলে গেলে ইভিএমের ব্যালট ইউনিট সক্রিয় করা হয়। কিন্তু নানা কারণে অনেক ভোটারের আঙুলের ছাপ মিলছে না। সেক্ষেত্রে সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার তার আঙুলের ছাপ দিয়ে ব্যালট ইউনিট সক্রিয় করেন। এরপর ভোটার গোপন কক্ষে গিয়ে ভোট দেন। এটি ‘ওভাররাইট’ করার ক্ষমতা হিসাবে পরিচিত। তবে সহকারী প্রিজাইডিং কর্মকর্তারা এই ক্ষমতার অপব্যবহার করলে ভোটে কারচুপির সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করেন নির্বাচন কর্মকর্তারা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *