সিংড়ায় আ.লীগের কোন্দলে বাড়িঘর ও দোকান ভাংচুর।আইসিটি প্রতিমন্ত্রীর স্ত্রীর ফেসবুক পোস্ট নিয়ে আলোচনা
নাটোরের সিংড়া উপজেলার পাকুরিয়া গ্রামে পূর্ব বিরোধের জের ধরে স্থানীয় আওয়ামী লীগের এক পক্ষ অপর পক্ষের বাড়ি ও দোকান ভাংচুর করেছে। গত সোমবার সন্ধ্যায় পাকুরিয়া বাজারে জয় বাংলা স্লোগান দিতে গিয়ে প্রায় দুই শতাধিক লোক দেশীয় অস্ত্র নিয়ে এ হামলা চালায়। এ সময় দুটি বাড়ি ও আটটি দোকান ভাংচুর ও লুটপাট করা হয়।
ভুক্তভোগীরা জানায়, সাবেক ইউপি সদস্য আলিফ হোসেন ও ইতালিয়ান ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি শফিকুল ইসলাম হামলায় নেতৃত্ব দেন। স্থানীয় ইটালিয়ান ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আরিফুর রহমান আরিফের নির্দেশে এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত সাবেক ইউপি সদস্য ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মুক্তলাল চক্রবর্তী বাদী হয়ে ইউপি চেয়ারম্যান আরিফসহ সাতজনের নাম উল্লেখ করে সিংড়া থানায় প্রায় ২৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন ডিসি, এসপিসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
এদিকে মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে স্থানীয় এমপি আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের স্ত্রী সিংড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আরিফা জেসমিন কণিকার একটি ফেসবুক পোস্ট নিয়ে আলোচনার ঝড় উঠেছে। সেখানে তিনি হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর হামলার অভিযোগ তোলেন। তিনি আরো বলেন, ইউপি চেয়ারম্যান আরিফের নেতৃত্বে হামলা হয়েছে।
তবে স্থানীয়রা জানান, হামলায় হিন্দু সম্প্রদায়ের মতে শুধু মুক্তালালের বাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। তাও আওয়ামী লীগ নেতা হিসেবে। আর কণিকার সঙ্গে আরিফের আগের বিরোধ রয়েছে বলে তারা শুনেছে।
আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেছেন, এটা তার স্ত্রীর ব্যক্তিগত বিষয়। তিনি যা পোস্ট করেছেন তা তার নিজের কথা। এ বিষয়ে তিনি আর কিছু বলবেন না।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, গত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে পাকুরিয়া আওয়ামী লীগে নৌকার প্রার্থী ও বিদ্রোহী প্রার্থী নিয়ে দুটি দল গড়ে ওঠে। এ ছাড়া এলাকায় আধিপত্য বিস্তার ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কমিটি গঠন নিয়ে বিরোধ প্রকাশ্যে রূপ নেয়। স্থানীয় ইউপি সদস্য জাহাঙ্গীর আলম একপাশে ও সাবেক ইউপি সদস্য আলিফ হোসেন অন্য পাশে রয়েছেন। এরই জের ধরে সোমবার আলিফের দল পাকুরিয়া বাজারে ইউপি সদস্য জাহাঙ্গীরের কার্যালয়, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মুক্তা লালের বাড়িতে ও বাজারে হামলা চালায়।
আলিফ অবশ্য হামলার কথা অস্বীকার করেছেন। পূর্ব বিরোধের জের ধরে ওই ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামের লোকজন এ হামলা চালিয়েছে বলে দাবি করেন তিনি। তিনি এর সাথে জড়িত নন। ইউপি চেয়ারম্যান আরিফুল ইসলাম আরিফ জানান, বিষয়টি তিনি শুনেছেন। তিনি প্রশাসনকে ব্যবস্থা নিতে বলেন।
নাটোরের এসপি সাইফুর রহমান জানান, ইউপির সাবেক ও বর্তমান দুই সদস্যের মধ্যে পূর্ব বিরোধের জের ধরে হামলা ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। মামলা হয়েছে। জড়িতদের গ্রেফতারে পুলিশ মাঠে নেমেছে।