গীতিকবি গাজী মাজহারুল আনোয়ার মারা গেছেন
কিংবদন্তি গীতিকার, চলচ্চিত্র পরিচালক ও প্রযোজক গাজী মাজহারুল আনোয়ার ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না…রাজিউন)। রোববার সকাল ৭টার দিকে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
বিষয়টি জানিয়েছেন তার ভাগ্নে অভিনেতা শাহরিয়ার নাজিম জয়। তিনি স্ত্রী, এক ছেলে, এক মেয়ে, নাতি-নাতনি ও বহু গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। মেয়ে দিতি আনোয়ারের আমেরিকা থেকে আসার কথা। তিনি আসার পর পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
গাজী মাজহারুল আনোয়ার ‘জয় বাংলা বাংলার জয়’, ‘একতারা তুমি দেশের কথা বল রে বার বল’, ‘একবার যেতে না দে আমার কত সোনার গাঁও’, ‘গানের বইয়ে স্বরলিপি লেখা’ সহ অসংখ্য কালোত্তীর্ণ গানের স্রষ্টা। ‘আকাশের হাতে হ্যায় একুশ নীল’।
তিনি ১৯৪৩ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার তালেশ্বর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৬৪ সাল থেকে তিনি তৎকালীন রেডিও পাকিস্তানের জন্য গান লেখা শুরু করেন। এ পর্যন্ত তার রচিত গানের সংখ্যা ২০ হাজারের বেশি। তার গানে মুক্তিযুদ্ধ, দেশপ্রেম, প্রকৃতি, জীবনবোধ, প্রেম, ঘৃণা, মমতা, অনুভূতি উঠে এসেছে।
মাজহারুল আনোয়ার গীতিকবি সংঘের আজীবন সদস্য ছিলেন। তিনি ২০০২ সালে একুশে পদক এবং ২০২১ সালে স্বাধীনতা পুরস্কার লাভ করেন। স্বাধীনতা যুদ্ধে বিশেষ অবদানের জন্য তিনি স্বাধীন দেশের প্রথম পুরস্কার ‘বাংলাদেশ প্রেসিডেন্ট স্বর্ণপদক পুরস্কার’ লাভ করেন। এছাড়াও, তিনি পাঁচবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, একাধিকবার বাচ্চাস পুরস্কার, বিজেএমই পুরস্কার, ডেইলি স্টার লাইফটাইম অ্যাওয়ার্ড সহ প্রায় ১১০টি পুরস্কার জিতেছেন।
গাজী মাজহারুল আনোয়ার ১৯৬২-৬৩ সালে মেডিকেল কলেজে পড়ার সময় তার প্রথম গান ‘বুঝেছি মনের বনে রঙে’ লেখেন। গানটির সুর করেছেন নাজমুল হুদা বাচ্চু এবং শিল্পী ফরিদা ইয়াসমিন। তিনি ১৯৬৪ সালে রেডিও পাকিস্তানের জন্য গান লিখে ৫০ টাকা উপার্জন করে একজন পেশাদার গীতিকার হিসাবে তার কর্মজীবন শুরু করেন।
১৯৬৫ সালে চলচ্চিত্রে যোগদানের পর গাজী মাজহারুল আনোয়ার চিত্রনাট্য, গান, সংলাপ ও গল্প লেখা শুরু করেন। বাংলাদেশ টেলিভিশনের জন্মের পর থেকে সর্বক্ষেত্রে তার অবদান ছড়িয়ে পড়েছে।
সর্বকালের সেরা ২০টি বাংলা গানের তিনটির সুরকার গুণী। গানগুলো হলো, ‘জয় বাংলা বাংলার জয়’, ‘একতারা তুমি দেশের কথা বল’ ও ‘একবার জানা দে না’।