রাশিয়া প্রতি ব্যারেল ডিজেল ৫৯ ডলারে দিতে চায়
রাশিয়া থেকে স্বল্পমূল্যে জ্বালানি তেল কেনার ব্যাপারে বাংলাদেশ ইতিবাচক মনোভাব প্রকাশ করেছে। এখন তেল কেনা-বেচায় মুদ্রা বিনিময় ব্যবস্থা কী হবে তা নিয়ে কাজ করছে সরকার।
সূত্র জানায়, রোসনেফ্ট বাংলাদেশের কাছে প্রতি ব্যারেল ৫৯ ডলারে ডিজেল বিক্রি করতে চায়। কোম্পানিটি চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর পর্যন্ত এই হারে ডিজেল সরবরাহ করতে ইচ্ছুক। গত সপ্তাহে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) এ প্রস্তাব পেয়েছে। রাষ্ট্রীয় সংস্থা এ ধরনের একাধিক প্রস্তাব পেয়েছে। তারা সব প্রস্তাব খতিয়ে দেখছেন। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। বর্তমানে আন্তর্জাতিক বাজারে পরিশোধিত ডিজেলের দাম প্রায় ১৩৫ ডলার।
ইউক্রেনের যুদ্ধের কারণে ইউরোপসহ অন্যান্য দেশে রাশিয়ার তেল রপ্তানি কমে গেছে। ফলস্বরূপ, বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম তেল উৎপাদনকারী দেশ এশিয়া ও আফ্রিকায় নতুন বাজার খুঁজতে শুরু করে। এর আগে মস্কো বাংলাদেশকে অপরিশোধিত তেল বিক্রির প্রস্তাব দেয়। দেশে রাশিয়ার অপরিশোধিত পরিশোধন ক্ষমতা না থাকায় ঢাকা প্রস্তাবটি নিয়ে এগোয়নি। প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় রাশিয়া থেকে জ্বালানি তেল আমদানির বিষয়টি পর্যালোচনার নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মুদ্রা বিনিময় ব্যবস্থা নিয়েও কাজ করতে বলেন তিনি। এরপর এ বিষয়ে জোর তৎপরতা শুরু করেছে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়।
একাধিক বিপিসি সূত্র জানিয়েছে যে তারা রাশিয়ার প্রস্তাব নিয়ে কাজ করছে। এ জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারা সুপারিশ করবে কিভাবে রাশিয়ান তেল কিনবেন, মুদ্রা বিনিময় ব্যবস্থা কেমন হবে।
জানতে চাইলে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, তারা রাশিয়ার প্রস্তাব পর্যালোচনা করছেন। কম দামে তেল কিনতে পারলে বাংলাদেশের জন্য সুবিধা হবে।
জ্বালানি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, রাশিয়ার তেল কেনার জন্য কীভাবে অর্থ প্রদান করা হবে তা নিয়ে আলোচনা চলছে। রুবেলে তেলের দাম দিতে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ঘাটতির বিষয়টি মাথায় রাখা হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে সোভিয়েত আমলের মতো বাটা পদ্ধতিতে লেনদেনের বিষয়ে মস্কোকে প্রস্তাব দেওয়ার কথা ভাবছে বাংলাদেশ। এভাবে বাংলাদেশে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থাকবে রাশিয়ার। বাংলাদেশ তেল আমদানি করে ওই অ্যাকাউন্ট নম্বরে টাকা জমা দেবে। সেই টাকা দিয়ে বাংলাদেশে কিনবে রাশিয়া। এ ছাড়া আরও পদ্ধতি বিবেচনা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন জ্বালানি বিভাগের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা। এ জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক, পরিকল্পনা কমিশনসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ রক্ষা করা হচ্ছে।
বাংলাদেশে জ্বালানি তেলের বার্ষিক চাহিদা ৬৫-৭০ হাজার টন। প্রায় ৫০ লাখ টন পরিশোধিত তেল আনা হয়।