পদ্মাপাড়ে ইলিশের উৎপাত।আকারের উপর নির্ভর করে প্রতি কেজি ৫০০-২০০০ টাকা

0

পিক সিজনে পদ্মায় ঝাঁকে ঝাঁকে ধরা পড়ে স্বাদে-গন্ধে অতুলনীয় ইলিশ। এতে পদ্মাপাড়ের রাস্তায় কেনাকাটার ধুম পড়েছে। সকাল থেকে শুরু হয়ে সকাল ৮টা পর্যন্ত এসব আড়তে ক্রেতা-বিক্রেতাদের ভিড় থাকে। আকার ভেদে প্রতি কেজি ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৫০০ থেকে দুই হাজার টাকায়।

মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ের মাওয়া মাছ ধরার মাঠ ঘুরে দেখা যায়, ইলিশের সরবরাহ যথেষ্ট। স্থানীয় বাজারের পাইকারি বিক্রেতাসহ ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ ও আশপাশের বিভিন্ন এলাকা থেকে ক্রেতারা আসছেন। অন্যান্য মাছ থাকলেও পদ্মার ইলিশের বিশেষ চাহিদা রয়েছে এসব মাছের।

মাওয়া মাছের বাজার সংশ্লিষ্টরা জানান, পদ্মাপাড়ের মাওয়ায় প্রতিদিন ৩২টি বাজারে বেচাকেনা হয়। রাতভর নদীতে ধরা মাছ নিয়ে আসেন জেলেরা। এরপর শুরু হয় বিক্রি।

বিক্রেতারা জানান, দেড় থেকে দুই কেজি ওজনের ইলিশ ১৮০০-২০০০ টাকা, ১ কেজি থেকে ১৪০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ১৪০০-১৬০০ টাকা, ৮০০-৯০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ প্রতি কেজি ১২০০-৫০০ টাকা। প্রতি কেজি ৫০০-৮০০ টাকায় বিক্রি হয়।

স্থানীয় বাসিন্দা মিজানুর রহমান ঝিলু জানান, দুই সপ্তাহ ধরে প্রতিদিন সকালে মাওয়া মাছ বাজার এলাকায় ক্রেতা-বিক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড়। এক সপ্তাহ ধরে ইলিশের পাইকারি ও খুচরা বিক্রি বেড়েছে।

জেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা গেছে, পদ্মা নদী মুন্সীগঞ্জের লাউহাজং, শ্রীনগরের ভাগ্যকুল ও সদর উপজেলার কিছু অংশ জুড়ে প্রায় ৩০ কিলোমিটার। সদর ও গজারিয়া উপজেলার ৩৫ কিলোমিটার এলাকায় মেঘনা নদী। এই বিশাল নদীর গভীর থেকে সাড়ে তিন হাজারের বেশি জেলে ইলিশ আহরণ করে।

মাওয়ায় ৩২ জন অ্যাংলার মাছ ধরতে দেখা গেছে। লৌহজং, শরীয়তপুর, মাদারীপুরের শিবচর, নড়াইলের মহাজন, পাবনা, চাঁদপুর ও সিরাজগঞ্জের অন্তত ১০ হাজার জেলে মাছ বিক্রি করতে আসেন।

খুচরা মাছ বিক্রেতা রুবেল মিয়া জানান, মাওয়া আড়তে এখন সবই পদ্মার ইলিশ।

জেলে আক্তার হোসেন বলেন, ‘নদীর গভীরে গিয়ে ইলিশ ধরছি। নদীতে এখন সব সাইজের ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে। আগের তুলনায় দাম কিছুটা কমেছে।

রাজধানীর মধ্য বাসাবো এলাকার বাসিন্দা রাসেল মিয়া বলেন, ‘বুধবার সকালে তাজা ইলিশ কিনতে মাছ কিনতে এসেছি। ছয় দিন আগে যে মাছটি ৫ হাজার টাকায় কিনেছিলাম, বুধবার একই সাইজের মাছ কিনেছি ৪ হাজার টাকায়। দাম কম থাকায় বাজারে আগের চেয়ে জমজমাট হয়ে উঠেছে।’

মাওয়া ফিশিং অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক হামিদুল ইসলাম জানান, দূরদূরান্ত থেকে ক্রেতারা আসছেন। তারা ন্যায্য মূল্যে ইলিশসহ বিভিন্ন মাছ কিনছেন। কোন অতিরিক্ত সাবস্ক্রিপশন বা অন্য কোন ফি দিতে হবে।

লাউহজং উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ ফরিদুল ইসলাম জানান, গত কয়েক বছরের তুলনায় এবার পদ্মায় ইলিশের উৎপাদন বেড়েছে। বর্তমানে ইলিশ মাছ সাগর থেকে পদ্মা নদীতে বিনা বাধায় প্রবাহিত হচ্ছে। এতে পদ্মার মুন্সীগঞ্জ অংশে আগের চেয়ে বেশি ইলিশ ধরা পড়ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *