এক এলসিতে বাড়তি চার্জ ৮৯০ কোটি টাকা।অগ্রণী ব্যাংক
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতিমালার আলোকে, ব্যাংক এলসি কমিশনের জন্য প্রতি প্রান্তিকে সর্বোচ্চ ০.৪০ শতাংশ চার্জ করতে পারে। সর্বোচ্চ হার নির্ধারণ করা হলেও সরকারি প্রকল্পের আমদানিতে কোনো কমিশন বা নামমাত্র কমিশন ছাড়াই এলসি খোলে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো। তবে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ সাবমেরিন ঘাঁটি নির্মাণ প্রকল্পে শীর্ষস্থানীয় ব্যাংকটি করেছে উল্টো। ৮ হাজার ৬৬১ কোটি টাকার এলসির বিপরীতে কমিশনের নামে কাটা হচ্ছে মাত্র ৮৯০ কোটি টাকা। পাঁচ বছরে সব মিলিয়ে এক হাজার ৬৩৪ কোটি টাকা কেটে নেওয়া হবে। ইতিমধ্যে দুই কিস্তিতে ৬৫৩ কোটি টাকা নিয়েছে ব্যাংকটি। এখন তৃতীয় কিস্তি নেওয়ার সময় বেঁধে দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সর্বশেষ কিস্তি পরিশোধের পর এলসির কোনো কার্যক্রম নেই। এলসি ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে খোলা হয়েছিল। ব্যাঙ্ক গ্যারান্টিটি ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে জমা দেওয়া হয়েছিল। প্রথম কিস্তি ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০-এ দেওয়া হয়েছিল। এর মানে হল ২০২৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে ১০ কিস্তি পরিশোধ করা হবে।
এখন, অগ্রণী ব্যাংক ২০২১-২২ অর্থবছরের জন্য ৩২৬ কোটি ৭০ লাখ টাকার তৃতীয় কিস্তির জন্য ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের মতিঝিল অফিসে আবেদন করেছে। এ পর্যায়ে অতিরিক্ত কমিশন নেওয়ার বিষয়টি ধরা পড়ে তা বন্ধ করা হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের পর্যালোচনায় দেখা গেছে, এলসির মাধ্যমে আমদানি পণ্যের মূল্য পরিশোধে ব্যাংক ঝুঁকি নেয়। প্রতিটি কিস্তি পরিশোধের পর ঝুঁকি কমে যাওয়ায় কমিশনও কমে যাবে। প্রতিটি কিস্তিতে পরিশোধিত অংশ কেটে কমিশন গণনা করা হবে। ব্যাঙ্কিং পরিভাষায় যা রানডাউন মূল্য হিসাবে বিবেচিত হয়। অগ্রণী ব্যাংকের শাখা বিবরণীতেও এভাবে দায় হিসাব করা হয়েছে। আবার, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের চার্জের সময়সূচীতে এলসি-র বিপরীতে প্রতি ত্রৈমাসিকে সর্বোচ্চ ০.৪০ শতাংশ কমিশন প্রদান করা হয়েছে। এলসি কমিশন সর্বোচ্চ হার নির্ধারণ করলেও সাধারণত দর কষাকষির মাধ্যমে তা নির্ধারণ করা হয়। নৌবাহিনী কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন প্রকল্পে দর কষাকষির কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
জানা গেছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের মতিঝিল অফিসে অতিরিক্ত কমিশন কাটার বিষয়টি ধরা পড়লে তা মন্তব্যের জন্য ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগে পাঠানো হয়। অধিদপ্তর অনুসারে, এলসিটি দীর্ঘমেয়াদী এবং মূল্য ৮ হাজার ৬৬১ কোটি টাকা। ফলে সর্বোচ্চ হারে কমিশন নির্ধারণ কোনোভাবেই যৌক্তিক হতে পারে না।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মতিঝিল অফিসও এ ক্ষেত্রে কমিশন নির্ধারণ করতে পারে অন্যান্য সরকারী এলসি কমিশনের সাথে মিল রেখে যা দর কষাকষির মাধ্যমে নির্ধারিত হয়। এবং একাধিক কিস্তিতে প্রদেয় এলসির ক্ষেত্রে, প্রতিটি কিস্তি পরিশোধের পরে সম্পূর্ণ পরিমাণে কমিশন নির্ধারণ করা যুক্তিযুক্ত নয়। বিভিন্ন পর্যায়ে পর্যালোচনা করে নিয়ম অনুযায়ী কমিশন হার নির্ধারণের নির্দেশনা দিয়ে গত এপ্রিলে ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে চিঠি দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। প্রাপ্তির ১০কার্যদিবসের মধ্যে