দেশে প্রথম।পোড়া রোগীদের চিকিৎসার জন্য চালু হচ্ছে স্কিন ব্যাংক
কেউ পুড়ে গেলে ক্ষত দিয়ে শরীর থেকে পানি, লবণ, প্রোটিন ও তাপ বের হয়ে যায়। এতে মৃত্যুর ঝুঁকিও বাড়ে। শরীরের ক্ষতিগ্রস্থ অংশ অল্প সময়ের মধ্যে চামড়া দিয়ে ঢেকে দিতে পারলে রোগীর মৃত্যুর ঝুঁকি কমে। কিন্তু দেশে স্কিন ব্যাংক না থাকায় তা সম্ভব হচ্ছে না। পোড়া রোগীদের মৃত্যুর হারও বেশি। এমন পরিস্থিতিতে দেশে প্রথমবারের মতো চালু হচ্ছে স্কিন ব্যাংক।
শেখ হাসিনা ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারির অধীনে পোড়া রোগীদের অত্যাধুনিক চিকিৎসার আওতায় এই স্কিন ব্যাংক চালু করা হচ্ছে। এরই মধ্যে ল্যাবের যন্ত্রপাতি বসানোর কাজও শুরু হয়েছে। মৃত্যুর আগে কেউ চাইলে তার চামড়া ওই স্কিন ব্যাংকে দান করতে পারেন। মৃত্যুর পর যেমন চক্ষু ও দেহ দান করেন, তেমনি মৃত্যুর পরও চামড়াও দান করতে পারেন।
শেখ হাসিনা ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারির প্রধান সমন্বয়ক অধ্যাপক সামন্ত লাল সেন বুধবার বলেন, দেশে প্রথমবারের মতো স্কিন ব্যাংক চালুর প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে। শিগগিরই এই স্কিন ব্যাংকের যাত্রা শুরু হবে।
পোড়া রোগীদের চিকিৎসায় দেশীয় বিশেষজ্ঞারা বলেন দেশে এটি সহজলভ্য না হওয়ায় দগ্ধদের মৃত্যুর হার বেশি। সাধারণত শরীরের ১০ শতাংশ পুড়ে গেলেও মৃত্যুর আশঙ্কা থাকে। কিন্তু স্কিন ব্যাংক থাকলে সেখান থেকে চামড়া সংরক্ষণ করে দ্রুত রোগীর শরীরে প্রতিস্থাপনের মাধ্যমে রোগীর পুড়ে যাওয়া শরীরের ৪০ শতাংশ বাঁচানো সম্ভব।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মৃত্যুর ৮ থেকে ১২ ঘণ্টার মধ্যে এবং শরীরের সঠিক তাপমাত্রায় সংরক্ষণ করলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে চামড়া সংগ্রহ করা যায়। বিশ্বের অন্যান্য দেশে, মৃত ব্যক্তির পেছন এবং পা থেকে চামড়া নেওয়া হয় যাতে এটি সহজে কারও চোখে না পড়ে। স্কিন ব্যাংক চালু হলে কেউ মরণোত্তর চামড়া দান করতে চাইলে নীতিমালা অনুযায়ী নাম তালিকাভুক্ত করতে হবে।
ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন পার্থ শঙ্কর পাল বলেন, যারা এখন সাধারণত পোড়া রোগীর শরীর থেকে চামড়া নিয়ে ক্ষতস্থানে প্রতিস্থাপন করেন। আইন না থাকায় রোগীর স্বজনদের কাছ থেকে নেওয়া সম্ভব নয়। সেক্ষেত্রে একজনের শরীরের ৬০ শতাংশ পুড়ে গেলে বাকি ৪০ শতাংশের সঙ্গে চামড়ার চেয়ে বড় ক্ষত হলে সেখানে প্রতিস্থাপন সম্ভব নয়। তা ছাড়া রোগীর শরীরের অন্যান্য অবস্থাও বিবেচনায় রাখতে হবে। এজন্য স্কিন ব্যাংক প্রয়োজন এবং সরকার তা করার উদ্যোগ নিয়েছে।