গাজীপুরে কয়েক ঘণ্টার মধ্যে পাঁচটি স্থানে আগুন লেগেছে
কয়েক ঘণ্টার মধ্যে গাজীপুরে পাঁচটি স্থানে আগুন লেগেছে। চারটি তুলার গুদাম, একটি পাটের গুদাম এবং একটি টিনশেড কলোনি পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। কোটি কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আজ সোমবার (১ ডিসেম্বর) ভোর ৫টা থেকে ১০টার মধ্যে গাজীপুরের শ্রীপুর, পুবাইল মাজুখান, গাজীপুর সদর চৌরাস্তা চন্দ্র, কোনাবাড়ি থানার আমবাগ এবং কালিয়াকৈর পৌরসভার চন্দ্রা পল্লী বিদ্যুৎ এলাকার দীঘির পাড় এলাকায় এই আগুন লেগেছে।
প্রত্যক্ষদর্শী এবং ফায়ার সার্ভিসের তথ্য অনুযায়ী, আজ ভোর ৫টার দিকে গাজীপুরের পুবাইল মাজুখান এলাকার একটি তুলার গুদামে আগুন লাগে। সেই সময় আগুন আরও দুটি গুদামে ছড়িয়ে পড়ে। পরে স্থানীয়রা ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেয়। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের চারটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে এক ঘন্টা ধরে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে। তিনটি গুদামের মালামাল পুড়ে ছাই হয়ে যায়।
অন্যদিকে, গাজীপুর শহরের কোনাবাড়ি আমবাগ পূর্ব পাড়া এলাকায় পলাশ মিয়া নামে এক ব্যবসায়ীর গুদামে আগুন লেগেছে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের চারটি ইউনিট প্রায় দেড় ঘন্টা চেষ্টা করে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। আগুনে গুদামের সমস্ত মালামাল পুড়ে যায়। এদিকে, সকাল সাড়ে ৯টার দিকে কালিয়াকৈর পৌরসভার চন্দ্র পল্লীবিদ্যুৎ দীঘির পাড় এলাকার একটি টিনশেড কলোনিতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। কলোনীর ৮০টি কক্ষ আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে যায়।
জানা গেছে, সকালে কলোনিতে বসবাসকারী লোকজন বিভিন্ন কর্মক্ষেত্রে বেরিয়ে পড়েছিলেন। এ সময় একটি কক্ষ থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। আশেপাশের লোকজন আগুন দেখতে পেয়ে চিৎকার করে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে। এ সময় আগুনের তীব্রতা বেড়ে যায় এবং আশেপাশের এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে কালিয়াকৈর ফায়ার সার্ভিসের চারটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে দেড় ঘন্টা চেষ্টা করে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
এর আগে, গতকাল রাত ২টার দিকে গাজীপুরের সদরের চান্দা মোড় এলাকায় একটি দোকানে আগুন লাগে। প্রথমে স্থানীয়রা আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করে। পরে, খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
একই দিন রাত ১০টার দিকে শ্রীপুর পৌরসভার বৈরাগীরচালা গ্রামে মৃত কফিল উদ্দিনের পুত্রবধূ মুন্নি বেগমের বাড়িতে আগুন লাগে। স্থানীয়রা জানান, রাত ১০টার দিকে স্থানীয় এক ব্যক্তি হঠাৎ মুন্নি বেগমের বাড়িতে আগুন দেখতে পান। পরে ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেওয়া হলে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করেন। ঘটনার খবর পেয়ে শ্রীপুর মডেল থানার এসআই মতিউর রহমান তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাস্থলে পৌঁছান।
পরিদর্শন শেষে তিনি বলেন, আমরা তথ্য পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করতে দেখেছি। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, চার থেকে পাঁচ লক্ষ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হবে। তিনি আরও বলেন, স্থানীয়রা বলছেন যে মুন্নি বেগমের ছেলে হাসান শেখ আগুন লাগিয়েছে। তবে বিষয়টি তদন্ত না করে আমরা কিছু বলতে পারছি না।
মাওনা ফায়ার সার্ভিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নরুল করিম বলেন, “খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে পৌঁছেছি এবং ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট পাঁচ থেকে সাত মিনিটের মধ্যে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, চার থেকে পাঁচ লক্ষ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। গাজীপুর ফায়ার সার্ভিসের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ মামুন বলেন, “সকাল থেকে গাজীপুরে পাঁচটি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করেছেন। বর্তমানে সব আগুন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। কোনও ঘটনায় হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।”
