আবারও রপ্তানির দরজা না খোলায় লোকসানের মুখে পড়েছেন আম চাষিরা
গত দুই বছরে করোনার কারণে আম রপ্তানি না হওয়ায় লোকসানের মুখে পড়েছেন মেহেরপুরের অনেক বাগান মালিক ও ব্যবসায়ী। এ বছর করোনার প্রকোপ কমাতে কিছু বাগান মালিক আমের ব্যাগিং শুরু করেছেন। তবে বিদেশি ক্রেতারা সাড়া দেননি। ফলে লোকসানের আশঙ্কা করছেন তারা।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, মেহেরপুরে এখন ২ হাজার ৬৫০ হেক্টর জমিতে আমের বাগান রয়েছে। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ৩৬ হাজার টন। হিমসাগর, ল্যাংড়া, বোম্বাই, ফজলি, আম্রপালিসহ বিভিন্ন জাতের আমের কদর রয়েছে সারা দেশে।
সদর উপজেলার ঝাউবাড়িয়া গ্রামের কৃষক শাহিন আলম জানান, প্রতিটি বস্তার বাজার মূল্য চার টাকা। প্রতিটি আমের ব্যাগিংয়ের দাম এক টাকা। রক্ষণাবেক্ষণ, সংরক্ষণ এবং প্রক্রিয়াজাতকরণের জন্য প্রতি কেজি আমের অতিরিক্ত খরচ হয় ২০ থেকে ২৫ টাকা। প্রতি কেজি কীটনাশক প্রয়োগে খরচ হয় চার থেকে পাঁচ টাকা। এত খরচ করেও তারা আম বিদেশে পাঠাতে পারছেন না। এখন তাদের লাভ-লোকসান নির্ভর করছে দেশের বাজারের ওপর।
রপ্তানিকারক প্রতিনিধি মফিজুর রহমান জানান, করোনার প্রভাব কমে যাওয়ার পর তাদের আম কেনার কথা ছিল। রপ্তানিকারকের সাথেও যোগাযোগ করা হয়। তারা বলেন, বিদেশে চুক্তি করতে পারছি না বলে এ বছর আম কিনছি না।
বুড়িপোতা গ্রামের সিরাজ উদ্দিন বিশ্বাস বলেন, আড়াই লাখ টাকা খরচ করে ১১০টি গাছ থেকে আম তুলেছি। অন্তত ১০ লাখ টাকা বিক্রি হবে বলে আশা করছিলাম। করোনা হতাশ। রপ্তানিকারকরা আম না কেনায় এ বছর আম বিদেশে পাঠাতে পারছি না।
হাসানুজ্জামান খোকন নামের এক ব্যবসায়ী বলেন, এতে আমি লোকসানে পড়েছি। আমের বাজারে ভালো দাম না পেলে আরও ক্ষতিগ্রস্ত হব।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) মো. সামছুল আলম বলেন, এ বছর আমের ভালো ফলন হয়নি। আবার রপ্তানির সঙ্গে জড়িত কেউ কৃষি বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ করেননি। রাজ্যাভিষেকের সময় রপ্তানিকারক পাওয়া যায়নি। কাঁচামাল সংরক্ষণাগার বিষয়ে উদ্যোক্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে। তাহলে চাষিরা ইচ্ছেমতো আমসহ বিভিন্ন কাঁচামাল বিক্রি করতে পারবেন।