ইউক্রেনে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে জার্মানি রাশিয়ার জ্বালানির বড় ক্রেতা

0

২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়া ইউক্রেনে আক্রমণ করে। এরপর থেকে পশ্চিমা দেশগুলো দেশটির ওপর নানা ধরনের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। তবে রাশিয়ার জ্বালানি খাত এখনও নিষেধাজ্ঞা থেকে মুক্ত। আর এর মাধ্যমে যুদ্ধের প্রথম দুই মাসে দেশটি বিপুল পরিমাণ অর্থ আয় করেছে। এই সময়ের মধ্যে, জার্মানি মস্কো থেকে সবচেয়ে বেশি জ্বালানী আমদানি করেছে।

বৃহস্পতিবার স্বাধীন গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর রিসার্চ অন এনার্জি অ্যান্ড ক্লিন এয়ার একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। সেখান থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

তাদের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইউক্রেনে আক্রমণের পর থেকে রাশিয়ার জ্বালানির শীর্ষ ক্রেতা জার্মানি।

রিপোর্টে বলা হয়েছে, রাশিয়া ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে জীবাশ্ম জ্বালানি রপ্তানি থেকে ৬৩ বিলিয়ন ইউরো (৬৬.৫ বিলিয়ন ডলার) আয় করেছে।

ইউক্রেনের যুদ্ধের প্রথম দুই মাসে, জার্মানি তার বেশিরভাগ প্রাকৃতিক গ্যাস আমদানির জন্য রাশিয়াকে ৯.১ বিলিয়ন ডলার প্রদান করেছে, রিপোর্ট অনুযায়ী, মাসিক তথ্য এবং পাইপলাইনের মাধ্যমে শিপিং এবং গ্যাস সরবরাহের অনুমানের ভিত্তিতে।

ক্লডিয়া কেমফার্ট, জার্মান ইন্সটিটিউট ফর ইকোনমিক রিসার্চের সিনিয়র শক্তি বিশেষজ্ঞ। এই বিশেষজ্ঞ গবেষণার অংশ নন। তিনি বলেছেন জীবাশ্ম জ্বালানির ক্রমবর্ধমান ব্যয়ের কারণে পরিসংখ্যানগুলি “বিশ্বাসযোগ্য”। গত বছর, জার্মানি তেল, কয়লা এবং গ্যাস আমদানিতে ১০০ বিলিয়ন ইউরো ব্যয় করেছে। এই অর্থের এক-চতুর্থাংশ রাশিয়ার পকেটে গেছে।

জার্মান সরকার বলেছে যে তারা পরিসংখ্যান সম্পর্কে মন্তব্য করবে না।

এ ছাড়া তাদের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোনো তথ্য দেওয়া হয়নি। কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, এগুলো জ্বালানি সরবরাহের সঙ্গে জড়িত কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে আসতে হবে।

সেন্টার ফর রিসার্চ অন এনার্জি অ্যান্ড ক্লিন এয়ার ফিনল্যান্ড-ভিত্তিক সংস্থা। ইতালি (৬.৯ বিলিয়ন ইউরো) এর পরে চীন (৬.৭ বিলিয়ন ইউরো), যুদ্ধ শুরুর পর থেকে রাশিয়া থেকে জীবাশ্ম জ্বালানির দ্বিতীয় বৃহত্তম আমদানিকারক, সংস্থাটি বলেছে। যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান, ভারত এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও রাশিয়ার জ্বালানি কিনেছে, তবে ইউরোপীয় ইউনিয়নের তুলনায় কম।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই সময়ের মধ্যে রাশিয়ার তেল, গ্যাস ও কয়লা রপ্তানির ৭১ শতাংশ এসেছে ইইউভুক্ত দেশগুলো থেকে। পরিমাণ আনুমানিক ৪৪ বিলিয়ন ইউরো।

২০২১সালে একই সময়ে ইউরোপে জ্বালানি রপ্তানি থেকে রাশিয়ার আয় ছিল ১৮ বিলিয়ন ইউরো,” এজেন্সির প্রধান গবেষক লরি মিলেইভারতা বলেছেন। সুতরাং, ৪৪ বিলিয়ন ইউরো, যা গত বছরের দ্বিগুণেরও বেশি। বাজারে গ্যাসের দাম বেড়ে যাওয়ায় এমনটা হয়েছে।

ইউরোপ গ্যাসের জন্য রাশিয়ার ওপর অনেকটাই নির্ভরশীল। জার্মানি মহাদেশে রাশিয়ান গ্যাসের বৃহত্তম ক্রেতাদের মধ্যে একজন। ইউক্রেনে আগ্রাসন শুরু হওয়ার পর থেকেই জ্বালানি তেলের জন্য মস্কোর ওপর নির্ভরতা কমাতে জার্মানির ওপর চাপ বাড়াচ্ছে রাশিয়া। কিন্তু পরিসংখ্যান প্রমাণ করে যে জার্মানি চাপ বাড়ার পরও বিষয়টিকে গুরুত্ব দিচ্ছে না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *