কমেছে প্রোটিন গম আমদানি! পরিবর্তন আনা হয়েছে স্পেসিফিকেশন
নিম্নমানের গম আমদানিতে ‘স্পেসিফিকেশন’ পরিবর্তন করেছে সরকার। এ বিষয়ে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের ফরেন প্রকিউরমেন্ট শাখা থেকে ২০ মার্চ এক স্মারকলিপিতে বলা হয়, বাংলাদেশ জাতীয় পুষ্টি পরিষদের মতামতের ভিত্তিতে আন্তর্জাতিক উৎস থেকে আমদানি করা গমে প্রোটিনের মাত্রা ১২ দশমিক ৫ থেকে ১১ দশমিক ৫ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়েছে। তবে, নির্দেশের অন্যান্য সমস্ত মানদণ্ড অপরিবর্তিত থাকবে।
এ পর্যন্ত খাদ্য মন্ত্রণালয় ১২ দশমিক ৫০ শতাংশ প্রোটিন সমৃদ্ধ গম আমদানি করেছে। সরকারের বিভিন্ন স্তরে গম সরবরাহকারীদের জোরালো তদবিরের কারণে নতুন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। বাংলাদেশ জাতীয় পুষ্টি কাউন্সিল (BANC) এবং বাংলাদেশ গম ও ভুট্টা গবেষণা ইনস্টিটিউট প্রোটিনের মাত্রা পুনঃনির্ধারণে ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের প্রতি সমর্থন প্রকাশ করেছে।
তবে বাংলাদেশ পুষ্টি সমিতির সভাপতি ড. এসকে রায় বলেন, “বর্তমান প্রোটিনের মাত্রা কমিয়ে ১১.৫ শতাংশ প্রোটিন সমৃদ্ধ গম আমদানি করা গ্রহণযোগ্য নয়। সবার মতামত নিয়ে প্রোটিনের মান নির্ধারণ করা ভালো। দেশে উৎপাদিত গমে পর্যাপ্ত প্রোটিন নাও থাকতে পারে; কিন্তু দেশের মানুষ কেন বিদেশ থেকে আনা কম প্রোটিন গম খাবে?’
ডাঃ এস কে রায় বলেন, একজন ব্যবসায়ী বা ব্যবসায়ীর স্বার্থ রক্ষায় বিদেশ থেকে কম প্রোটিনযুক্ত গম আমদানি করা হলে তা কতটা যুক্তিযুক্ত তা সংশ্লিষ্টদের বিবেচনা করা উচিত।
সভায় সভাপতিত্ব করেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার। মোঃ আব্দুর রাজ্জাক, অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুন্সি, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিমসহ কমিটির অন্যান্য সদস্য ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
প্রস্তাবে দ্বিমত পোষণ করে বেশ কয়েকজন সদস্য তখন বলেন, বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। সেখানে কম প্রোটিন গম আমদানি কেন? সীমিত উপায়ে উৎকৃষ্ট খাদ্যশস্য আমদানি করা সম্ভব। কমিটির অধিকাংশ সদস্য এ বক্তব্যে একমত পোষণ করেন। এ কারণে প্রস্তাবটি প্রত্যাখ্যান করা হয়।
কিন্তু তারপরও গম সরবরাহকারী ব্যবসায়ী গ্রুপ তদবির অব্যাহত রেখেছে। সূত্র জানায়, সম্প্রতি অর্থনৈতিক বিষয়ক মন্ত্রিসভা কমিটি এবং এফপিএমসির বৈঠকে আমদানি করা গমে প্রোটিনের পরিমাণ কমানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে, আমদানি করা গমে প্রোটিনের পুনর্নির্ধারণের বিষয়ে বাংলাদেশ জাতীয় পুষ্টি কাউন্সিল (BANC) এবং বাংলাদেশ গম ও ভুট্টা গবেষণা ইনস্টিটিউটের কাছ থেকে মতামত চাওয়া হয়েছিল।
খাদ্য সচিব মো. মোছাম্মত নাজমানারা খানম বলেন, বাংলাদেশে উৎপাদিত গমও ১১ দশমিক ৫ শতাংশ প্রোটিন সমৃদ্ধ। কিন্তু এখন বৈশ্বিক সমস্যা চলছে। অনেক দেশ নিজেদের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গম আমদানি করতে চায় না। ভারত ইতিমধ্যেই ১২.৫ শতাংশ প্রোটিন সমৃদ্ধ গম আমদানি করছে। কিন্তু পর্যাপ্ত পাওয়া যাচ্ছে না। এর জন্য স্পেসিফিকেশন কিছুটা কমানো হয়েছে। তবে নিম্নমানের গম ক্ষতিগ্রস্ত হবে না বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।