খুলনা-মংলা রেল প্রকল্প।নতুন রেললাইন বাড়াবে সড়ক পথের ঝুঁকি

0

খুলনা-মংলা রেল প্রকল্পের আওতায় প্রায় ৬৫ কিলোমিটার রেললাইন স্থাপনের কাজ চলছে। নতুন রেললাইন খুলনা-সাতক্ষীরা আঞ্চলিক মহাসড়ক ও গল্লামারী-বটিয়াঘাটা-দাকোপ জেলা সড়কে ঝুঁকি বাড়িয়েছে। দুই সড়কের নিজখামার ও দারোগাভিটা এলাকায় যানজট ও দুর্ঘটনা ঘটছে। এ অবস্থায় ওই দুই স্থানে ওভারপাস নির্মাণের জন্য রেলওয়ের প্রকল্প পরিচালককে চিঠি দিয়েছে খুলনা সড়ক বিভাগ। চিঠিতে বলা হয়েছে, “দুই সড়কে রেলক্রসিং নির্মাণ করা হলে মহাসড়কের দুই পাশে প্রাণঘাতী দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে। জেলার মাসিক উন্নয়ন সমন্বয় সভায় বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা করা হয়। একটি ওভারপাস নির্মাণ জরুরি।

এছাড়া যানজট বেড়ে যাওয়ায় দুই স্থানে ওভারপাস নির্মাণের দাবিতে একাধিকবার সমাবেশ করেছে এলাকাবাসী। প্রকল্প কর্মকর্তাদের সঙ্গে খুলনার মেয়রসহ জনপ্রতিনিধিরাও বসেন। তাতে সমস্যার স্থায়ী সমাধান হয়নি।

সড়ক বিভাগ ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, খুলনা-সাতক্ষীরা আঞ্চলিক মহাসড়কটি দক্ষিণ উপজেলার সংযোগকারী একমাত্র সড়ক। এছাড়া ভোমরা স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে পণ্য আমদানি-রপ্তানির জন্য এই মহাসড়কটি ব্যবহৃত হয়। এ সড়কে প্রতিদিন প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় যানবাহন চলাচল করে। এই মহাসড়কের নিজখামার এলাকায় রাস্তা পার হয়ে গেছে খুলনা-মংলা রেললাইন।

সম্প্রতি সড়কটি ঘুরে সড়কের একপাশে রেললাইন বসানো হয়েছে; অন্য পাশে তৈরি রয়েছে। রেললাইন সড়ক থেকে তিন-চার ফুট উঁচু করা হবে। রেললাইন পার হতে যানবাহনের গতি কমাতে হয়। ফলে উভয় দিকে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে।

খুলনার গল্লামারী-বটিয়াঘাটা-দাকোপ-নলিয়ান ফরেস্ট ডিস্ট্রিক্ট রোডটি এই অঞ্চলের পাঁচ লাখের বেশি মানুষের চলাচলের একমাত্র রাস্তা। বটিয়াঘাটা ও দাকোপে একাধিক এলপি গ্যাস প্লান্ট স্থাপন করায় এ সড়ক দিয়ে পণ্যবাহী যানবাহন চলাচল করে। এ সড়ক দিয়ে প্রতিদিন ৪-৫ হাজার যানবাহন চলাচল করে। সড়কের দারোগাভিটা এলাকা দিয়ে রেললাইন চলে গেছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, রেললাইন সড়ক থেকে ৫-৬ ফুট উঁচুতে চলে গেছে। এ জন্য সড়কের দুই পাশে ঢালু করা হয়েছে এবং বিটুমিন দিয়ে কার্পেটিং করা হয়েছে। এ স্থানে রেলক্রসিং নির্মাণ করা হলে যানজট ও দুর্ঘটনা বাড়বে বলে আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।

সড়ক বিভাগ-খুলনার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আনিসুজ্জামান মাসুদ বলেন, খুলনা-মংলা রেললাইনের কারণে উভয় সড়কেই যানজট ও দুর্ঘটনা বাড়বে। এ জন্য গুরুত্বপূর্ণ দুটি সড়কে রেলক্রসিং ছাড়া ওভারপাস নির্মাণের জন্য একাধিক চিঠি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সাড়া মেলেনি।

বৃহত্তর খুলনা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটির সভাপতি শেখ আশরাফ উজ জামান বলেন, জনগণের স্বার্থে খুলনা-মংলা রেললাইন নির্মাণ করা হচ্ছে। এই লাইন যদি মানুষের দুভোর্গ বাড়ায় তা হবে কষ্টকর।রেলের সমস্যা সমাধান না হলে সরকারের অন্যান্য দপ্তরকে সমস্যা সমাধানে এগিয়ে আসতে হবে।

সার্বিক বিষয়ে খুলনা-মংলা রেলের প্রকল্প পরিচালক মো. আরিফুজ্জামান বলেন, ওই দুই জায়গায় ওভারপাস নির্মাণের বিষয়টি প্রকল্পে ছিল না। নতুন প্রকল্পের সময় বা খরচ বাড়ানো সম্ভব নয়। আমরা ডিসেম্বরের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ করব। সেক্ষেত্রে চলমান প্রকল্পে নতুন কিছু করা সম্ভব নয়। এরপরও জনপ্রতিনিধিদের দাবির কথা আমরা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানিয়েছি। তারা এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *