সিএনএস বাদ, ২৫ পয়সায় ট্রেনের টিকিট বিক্রি করে দেবে সহজ
কম্পিউটার নেটওয়ার্ক সিস্টেম (সিএনএস) বাদ দিয়ে সহজ লিমিটেড বাংলাদেশের সাথে একটি চুক্তি করেছে, যা টানা ১৫ বছর ধরে ট্রেনের টিকিট বিক্রির দায়িত্বে রয়েছে। সিএনএস প্রতিটি টিকিট বিক্রির জন্য রেলওয়ে থেকে দুই টাকা ৯৯ পয়সা পেত। সহজ নিবে মাত্র ২৫ পয়সা! এত কম সার্ভিস চার্জে কোম্পানি কীভাবে টিকিট বিক্রি করবে তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।
সিএনএসের দুর্বল প্রযুক্তিগত সক্ষমতার কারণে টিকিট পেতে যাত্রীদের ভোগান্তির অভিযোগ রয়েছে। কিন্তু মাত্র ২৫ পয়সায় টিকিট বিক্রি কতটা সহজ হবে তা জানায়নি রেলওয়ে বা সংস্থা।
রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, রেলওয়ের ওয়েবসাইট এবং অ্যাপ থেকে বিজ্ঞাপনের কারণে পাঁচ বছরে টিকিট বিক্রি থেকে ২৫ কোটি ৩২ লাখ টাকা আয় হবে তা অনুমান করা সহজ। ২০ কোটি টিকিট বিক্রি করতে রেলের পাঁচ কোটি টাকা লাগবে। সে হিসেবে প্রতি টিকিটে আয় হবে ১ টাকা ৫১ পয়সা।
সিএনএস পাঁচ বছরে ২০ কোটি টিকিটের জন্য ২৪ কোটি টাকা দাবি করেছে, অর্থাৎ প্রতিটি টিকিটের জন্য এক টাকা ২০ পয়সা।
রেলওয়ে টেন্ডার মূল্যায়ন কমিটির সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সিএনএস সরকারের সেন্ট্রাল প্রকিউরমেন্ট টেকনিক্যাল ইউনিটের (সিপিটিইউ) কাছে অভিযোগ দায়ের করেছে সহজকে সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে বেছে নেওয়ার।
সিপিটিইউ রায় দিয়েছে যে বিজ্ঞাপনের অর্থ সরকারের। সহজ নিতে পারছি না। কিন্তু হাইকোর্ট সহজের পক্ষে রায় দেন।
রায়ের পর মঙ্গলবার রাজধানীর রেল ভবনে সহজের সঙ্গে রেলওয়ের চুক্তি হয়।
চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন বলেন, অনেক বাধা অতিক্রম করে চুক্তি হয়েছে। কালোবাজারি, টিকিট না পাওয়াসহ নানা অভিযোগ রয়েছে। মেয়াদ শেষ হওয়ার পরেও চুক্তি ছাড়াই পূর্ববর্তী অপারেটরের সাথে টিকিট বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছিল রেল।
বিজ্ঞাপনের টাকা পাওয়া সহজ হবে কি না জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, চুক্তিতে তেমন কিছু নেই।
কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মালিহা এম কাদির বলেন, আগামী ২১ দিনের মধ্যে ট্রেনের টিকিট ব্যবস্থাপনা ও বিক্রির দায়িত্ব বুঝে নিবে সহজ । পরবর্তী ১৮ মাস রেলওয়ে সার্ভারের মাধ্যমে টিকিট বিক্রি করবে, তারপর নিজস্ব সার্ভারের মাধ্যমে।
রেলওয়ের পক্ষে চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন্স) সরদার শাহাদাত আলী বলেন, চুক্তিতে বিজ্ঞাপনের রাজস্বের বিষয়টি উল্লেখ করা হয়নি। অপারেটর পাবে। হাইকোর্ট তাদের পক্ষে রায় দেন। রায় অনুযায়ী চুক্তি হয়েছে।
অপারেটর নিয়োগের জন্য রেল ২০২০ সালের জানুয়ারিতে দরপত্র আহ্বান করেছিল। সিএনএস গত এক বছর ধরে কোনো চুক্তি ছাড়াই টিকিট বিক্রি করছে। রেল প্রতিটি টিকিট বিক্রির জন্য চার টাকা ৩৫ পয়সা দরপত্রে অপারেটরকে অনুমান করেছিল।
সিপিটিইউর রায়ে বলা হয়েছে, প্রতি টিকিটের প্রাক্কলন ৪ দশমিক ৩৫ টাকা বেশি। দুর্নীতির জন্যই এমন অনুমান করা হয়েছে বলে প্রতীয়মান হয়। এতে দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ারও সুপারিশ করা হয়েছে।
তবে সহজের পক্ষে চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী মালিহা এম কাদির এসব বিষয়ে কথা বলেননি।