গ্যাস সংকট নিরসনে আটটি কূপ খনন করবে বাপেক্স

0

আগামী দুই মাসের মধ্যে আটটি গ্যাস কূপ খনন ও সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন কোম্পানি (বাপেক্স)। এসব কার্যক্রম সফলভাবে বাস্তবায়িত হলে জাতীয় গ্রিডে ১০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস যুক্ত হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এটি গভীর গ্যাস সংকটের মুখে থাকা দেশটিকে অন্তত কিছুটা গ্যাস সরবরাহ করতে সহায়তা করবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

বাপেক্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ শোয়েব বলেন, বাপেক্স গ্যাস কূপ খনন ও উত্তোলনের জন্য নিরন্তর কাজ করছে। অনেক ক্ষেত্রে সফলতাও এসেছে। সরকারি অনুমোদন সাপেক্ষে, বাপেক্সের মোট ১০০টি কূপ খননের পরিকল্পনা রয়েছে। আগামী দুই মাসের মধ্যে আটটি কূপ খননসহ অনেক ব্লকে সমীক্ষার কাজ করা হবে।

আগামী দুই মাসে যেসব কূপ খনন করা হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে বেগমগঞ্জ-৪ (পশ্চিম), যা বিজয়-১০ রিগ ব্যবহার করে সম্পন্ন হয়েছে। এই কূপের তিনটি স্তরে গ্যাস পাওয়া গেছে। প্রতিদিন ১২-১৯ মিলিয়ন ঘনফুট হারে গ্যাস পরীক্ষা করা হচ্ছে। এ ছাড়া একই রিগ ব্যবহার করে জানুয়ারি থেকে জামালপুর-১ অনুসন্ধান কূপ খনন শুরু হবে। নোয়াখালী থেকে জামালপুর রিগ স্থানান্তরের কাজ প্রায় শেষ।

বিজয়-১১ রিগ ব্যবহার করে তিতাস-১৬ কূপের কাজ শুরু হয়েছে। আগামী মাসের মধ্যে কাজ শেষ করে হবিগঞ্জ-৫ কূপটি তিতাসের স্থান থেকে হবিগঞ্জ-৫ এ স্থানান্তর করা হবে। এছাড়াও বিজয়-১২ রিগ ব্যবহার করে সম্প্রতি জকিগঞ্জ-১ কূপের ওয়ার্কওভারের কাজ শেষ হয়েছে।

এখানে প্রতিদিন ১০-১৩ মিলিয়ন ঘনফুট হারে গ্যাস উত্তোলন বা সরবরাহ সম্পন্ন হয়েছে। কৈলাশটিলা-৭ ওয়ার্কওভার কাজের জন্য এর রিগ স্থানান্তর করা হচ্ছে। সম্প্রতি বিজয়-১৮ রিগ ব্যবহার করে সিলেট-৭ কূপের ওয়ার্কওভার কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে। এখানে প্রতিদিন ১০ থেকে ১২ মিলিয়ন ঘনফুট হারে গ্যাস পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে বা পরীক্ষামূলক উত্তোলন করা হয়েছে। এ ছাড়া কৈলাশটিলা-১ বা রূপগঞ্জ-১ ওয়ার্কওভার কাজের জন্য রিগ স্থানান্তরের প্রস্তুতি চলছে। সম্প্রতি আইপিএস কর্ডওয়েল রিগ এর কমিশনিং সম্পন্ন হয়েছে।

কোম্পানিটি শীঘ্রই সুন্দলপুর-৪ অনুসন্ধান কূপ খননের জন্য রিগ স্থানান্তরের কাজ শুরু করবে। ইতিমধ্যে নোয়াখালী লক্ষ্মীপুর এলাকায় টুডি সিসমিক বা দ্বিমাত্রিক জরিপের কাজ শুরু হয়েছে এবং ৪৭৭ লাইন কিলোমিটার জরিপ সম্পন্ন হয়েছে। এ ছাড়া ভোলা ট্রানজিশন এলাকায় শীঘ্রই টুডি সিসমিক সার্ভের কাজ শুরু হবে। জকিগঞ্জ, পাথারিয়া এলাকায় থ্রিডি বা ত্রিমাত্রিক সিসমিক জরিপের ফিল্ড ডাটা সংগ্রহের পর বর্তমানে ডাটা ইন্টারপ্রিটেশনের কাজ চলছে। এ ছাড়া শেরপুর-ময়মনসিংহ সীমান্তে ভূতাত্ত্বিক তথ্য সংগ্রহ ও জরিপের কাজ নভেম্বর মাস থেকে চলছে বলে বাপেক্স সূত্রে জানা গেছে।

উল্লেখ্য, দেশে গ্যাসের দৈনিক চাহিদা প্রায় ৫ হাজার মিলিয়ন ঘনফুট। এর বিপরীতে সরবরাহ করা হচ্ছে ২ হাজার ৭০০ থেকে ৩ হাজার মিলিয়ন ঘনফুট। এর মধ্যে এক হাজার মিলিয়ন ঘনফুট এলএনজি আমদানির মাধ্যমে এবং ১৮০০ থেকে দুই হাজার মিলিয়ন ঘনফুট অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে সরবরাহ করা হচ্ছে।

গ্যাসের অভাবে এরই মধ্যে ২০০টি শিল্প কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে এবং আরও ৩০০টি কারখানা বন্ধের পথে। স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি আমদানিতে সরবরাহকারীদের আগ্রহের অভাব এবং আর্থিক সংকট গ্যাস সরবরাহে বাধা সৃষ্টি করছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *