সাংসদ আনার হত্যাকান্ড,রিমান্ড শুনানিতে যা বললেন আওয়ামী লীগ নেতা মিন্টু
ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আনোয়ারুল আজিম আনার হত্যা মামলায় জড়িত সন্দেহে গ্রেপ্তার হওয়া ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল করিম মিন্টু নিজেকে নির্দোষ দাবি করেছেন। বৃহস্পতিবার ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম তোফাজ্জল হোসেনের আদালতে রিমান্ড শুনানিকালে তিনি এ দাবি করেন। শুনানি শেষে আদালত তাকে ৮ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এর আগে তাকে আদালতে হাজির করে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। এরপর মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবির ওয়ারী জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার মাহফুজুর রহমান তাকে ১০ দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করেন।
রাষ্ট্রপক্ষে রিমান্ডের আবেদন করেন মহানগর দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর আবদুল্লাহ আবু। অপরদিকে আসামিদের রিমান্ড বাতিল ও জামিনের আবেদন করেন আইনজীবীরা।
শুনানির সময় বিচারক সাইদুল করিম মিন্টুর কাছে কিছু বলার আছে কি না জানতে চাইলে তিনি নিজেকে নির্দোষ দাবি করে বলেন, আমি রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার। ৪৬ বছরের রাজনীতিতে আমার কোনো হত্যা-ধ্বংসের ইতিহাস নেই। ছাত্রলীগের রাজনীতি থেকে আজ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হয়েছি। এখন সংসদ সদস্য পদে মনোনয়ন চেয়ে অপরাধ করেছি।
সাইদুল করিম মিন্টু বলেন, ‘ওয়ান ইলেভেনে গ্রেপ্তার হয়েছিলাম। এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে আমি ১৩ বার গ্রেফতার হয়েছি। আমি জনগণের জন্য রাজনীতি করেছি, কিন্তু রাজনৈতিক কারণে আমাকে ফাঁসানো হচ্ছে।
রিমান্ড আবেদনের স্বপক্ষে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আবদুল্লাহ আবু বলেন, মামলার তদন্তে অনেক কিছুই বেরিয়ে আসছে। এ ঘটনায় ডিবি পুলিশ আসামির সম্পৃক্ততা খুঁজে পেয়েছে। পরিকল্পনাকারী কে, জবানবন্দিতে অনেকের নাম আসছে, তাকে অপহরণ করে হত্যা করা হয়েছে।
আসামিদের আইনজীবী রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন। তিনি বলেন, “ডিবি পুলিশ ১২ জুন সাইদুল করিম মিন্টুকে গ্রেপ্তার দেখিয়েছিল, কিন্তু আমি জানতে পারি যে ১১ জুন বেলা ৩টায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাকে ২৪ ঘন্টার মধ্যে আদালতে হাজির করা হয়নি। এখানে ডিবি পুলিশ আবেদন করেনি। তিনি (মিন্টু) ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের বক্তব্যের ভিত্তিতেই তিনবার নির্বাচিত হয়েছেন শুধু তার রাজনৈতিক ক্যারিয়ার ধ্বংস করার জন্য তাকে এই মামলায় জড়িয়ে হয়রানি করা হচ্ছে।
১১ জুন জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাইদুল করিম মিন্টুকে রাজধানীর ধানমন্ডি থেকে আটক করে ডিবি। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাকে গ্রেফতার করে আজ রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে।
এর আগে, ১৩ মে কলকাতার সঞ্জীব গার্ডেনের একটি ফ্ল্যাটে সাংসদ আনারকে হত্যা করা হয় বলে পুলিশ জানিয়েছে। কিন্তু তার লাশ এখনো পাওয়া যায়নি। ওই ফ্ল্যাট থেকে মাংসের টুকরো উদ্ধার করা হয়। ফরেনসিক পরীক্ষায় জানা গেছে এটি মানুষের মাংস। তবে ওই মাংসের টুকরো আনারের শরীরের অংশ কি না, তা ডিএনএ পরীক্ষার পর জানা যাবে। দক্ষিণ 24 পরগনার বাগজোলা খাল থেকে হাড় উদ্ধার। পুলিশের দাবি, আনারের শরীরের কিছু অংশ এই খালে ফেলে দেওয়া হয়েছে।