নিজেদের হেফাজতে নারীর মৃত্যুর বিষয়ে যা বললো র‌্যাব

0

কিশোরগঞ্জের ভৈরবে র‌্যাবের হেফাজতে সুরাইয়া খাতুন (৫২) নামে এক নারীর মৃত্যুর ঘটনা তদন্ত করা হবে বলে জানিয়েছেন বাহিনীটির মুখপাত্র ও আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার আরাফাত ইসলাম। শনিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‌্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ তথ্য জানান।

কমান্ডার আরাফাত ইসলাম বলেন, “চলতি মাসের ১৩ তারিখে ময়মনসিংহে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে একটি মামলা দায়ের করা হয়। এর আগে ময়মনসিংহের নান্দাইলে এক অন্তঃসত্ত্বা নারীর মৃত্যুর ঘটনায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। ২৬ এপ্রিল। মামলার দুই আসামিকে গ্রেপ্তারের পর ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে একজন অসুস্থ বোধ করলে তাকে স্থানীয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করেন।

থানা থেকে তাদের র‌্যাব ক্যাম্পে নেওয়ার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে র‌্যাবের মুখপাত্র বলেন, থানা থেকে আটকের কোনো তথ্য নেই। তবে র‌্যাব হেফাজতে মৃত্যুর বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে। র‌্যাব আইনি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যাবে। এছাড়া ডাক্তারি পরীক্ষার মাধ্যমে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।

প্রসঙ্গত, গত বছর যৌতুকের দাবিতে অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূ রেখা আক্তারকে হত্যার ঘটনায় স্বামী, ও শ্বশুর-শাশুড়ির বিরুদ্ধে ময়মনসিংহের নান্দাইল থানায় মামলা হয়। গত বৃহস্পতিবার রাতে পৃথক স্থান থেকে স্বামী ও শাশুড়িকে আটক করে ভৈরব ক্যাম্পে নিয়ে আসে র‌্যাব। পরে দুপুর ১২টা ৪৬ মিনিটে সাংবাদিকদের জানানো হয়, শুক্রবার সকাল ১০টায় সংবাদ সম্মেলন হবে।

কিন্তু সকাল ৭টার দিকে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন অভিযুক্ত সুরাইয়া। তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

সুরাইয়া খাতুনের স্বামী আজিজুল ইসলাম বলেন, রেখা আক্তার আত্মহত্যা করেছে। তারপরও তার পরিবার আমাদের নামে মামলা করেছে। আমরা আইনি ব্যবস্থা নেব। শুক্রবার রাতে নান্দাইল থানায় ফোন করে আমার স্ত্রী ও ছেলেকে ভালো অবস্থায় র‌্যাবের কাছে হস্তান্তর করা হয়। রাতে খবর পেলাম আমার স্ত্রী মারা গেছে। র‌্যাব আমার স্ত্রীকে নির্যাতন করে হত্যা করেছে।

ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. বুলবুল আহমেদ বলেন, ‘শুক্রবার সকাল ৭টায় সুরাইয়া খাতুন নামে এক নারীকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন র‌্যাব সদস্যরা। তাকে নিয়ে আসার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক বিনিত দাস তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তাকে হাসপাতালে আনা হয় মূলত মৃত।

এর আগে ভৈরব র‌্যাব ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার লেফটেন্যান্ট ফাহিম ফয়সাল জানান, এ ঘটনায় র‌্যাব সদর দপ্তর থেকে সংবাদ সম্মেলন করা হবে। সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত জানানো হবে।

কিশোরগঞ্জ জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইসরাত জাহান জানান, জেলা প্রশাসকের নির্দেশে র‌্যাব হেফাজতে থাকা নারী আসামি সুরাইয়া বেগমের লাশ প্রস্তুত করে ময়নাতদন্তের জন্য কিশোরগঞ্জ মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পর মৃত্যুর কারণ জানা যাবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *