ইসি গঠন নিয়ে রাষ্ট্রপতির সংলাপ আজ শুরু , প্রথমেই যাচ্ছে জাতীয় পার্টি

0

রাষ্ট্রপতির সঙ্গে নির্বাচন কমিশনে (ইসি) নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর সংলাপ আজ থেকে শুরু হচ্ছে। নতুন নির্বাচন কমিশন নিয়োগ নিয়ে এই সংলাপকে ঘিরে রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনা চলছে। তবে পাঁচ বছর আগেও রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে কোন্দল থাকলেও এবারও একই অবস্থা। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ বলছে সার্চ কমিটির মাধ্যমে ইসি গঠন করতে হবে। বিএনপি বলছে, এর আগেও সংলাপের নামে প্রহসন হয়েছে, এই সরকারের অধীনে নির্বাচন হচ্ছে না, সংলাপও হবে না। তবে নতুন আইন নিয়ে একাধিক রাজনৈতিক দল কথা বলছে।

প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টি ও আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের অনেক সদস্যই এবার নির্বাচন কমিশন গঠনে নতুন আইনের কথা বলছেন। ইসি গঠনে প্রতি পাঁচ বছর অন্তর রাজনৈতিক বিরোধ এড়াতে সংবিধানের বিধান অনুযায়ী আইন প্রণয়নের পক্ষে তারা। অন্যদিকে, আগের দুই সংলাপে অংশ নিলেও এবার রাষ্ট্রপতির ডাকে অংশ নেওয়া নিয়ে নেতিবাচক মনোভাব রয়েছে বিএনপিতে। সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরাও সংঘাতের স্থায়ী সমাধান খোঁজার লক্ষ্যে নতুন আইন প্রণয়নের পক্ষে মত দিয়েছেন।

রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব জয়নাল আবেদীন বলেন, প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টিকে এরই মধ্যে প্রথম দল হিসেবে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। সংলাপে অংশ নিতে আজ বিকাল ৪টায় বঙ্গভবনে যাচ্ছে জাতীয় পার্টি। দ্বিতীয় দল হিসেবে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ)কে। স্বাস্থ্যবিধি মেনেই এই সংলাপ অনুষ্ঠিত হবে। রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিনিধিদের বঙ্গভবনে প্রবেশে কভিড টেস্ট বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।

আজকের সংলাপে জাতীয় পার্টির পক্ষে আট সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল অংশ নিচ্ছে। দলের চেয়ারম্যান জিএম কাদেরসহ সাতজনের মধ্যে রয়েছেন মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু, সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, কো-চেয়ারম্যান কাজী ফিরোজ রশীদ, রুহুল আমিন হাওলাদার, সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা ও সালমা ইসলাম।

সংলাপ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, নিজেদের মধ্যে কথা হয়েছে। তবে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আগের প্রস্তাবে নতুন কিছু যোগ করা হবে কি না তা এখনো পরিষ্কার নয়। সংলাপে যাওয়ার আগে আজ আরেকটি বৈঠক হবে। এরপরই সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হবে।

আজ শুরু হওয়া সংলাপ জানুয়ারির মাঝামাঝি শেষ হতে পারে। বঙ্গভবন সূত্রে জানা গেছে, সব দলের সঙ্গে সংলাপের তারিখ এখনো চূড়ান্ত হয়নি। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার পর রাষ্ট্রপতি আপিল বিভাগের বিচারপতির নেতৃত্বে সার্চ কমিটি গঠন করবেন। এতে হাইকোর্ট বিভাগের একজন বিচারক, অডিটর জেনারেল এবং কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল (সিএজি) এবং বেশ কয়েকজন বিশিষ্ট নাগরিক অন্তর্ভুক্ত থাকবেন। কে এম নুরুল হুদার নেতৃত্বাধীন বর্তমান নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ ১৪ ফেব্রুয়ারি শেষ হচ্ছে। এর আগে রাষ্ট্রপতি কমিশনে নতুন সদস্যদের নিয়োগ দেবেন।

কে এম নুরুল হুদার নেতৃত্বাধীন বর্তমান ইসি নিয়োগের আগে ২০১৬ সালের ১৮ ডিসেম্বর রাষ্ট্রপতি মো: আবদুল হামিদ ওই সময় সংসদের বাইরে থাকা বিএনপির সঙ্গে সংলাপ শুরু করেন। ৩১টি দলের সঙ্গে এক মাস ধরে চলা সংলাপ ২০১৭ সালের ১৮ জানুয়ারি শেষ হয়। সার্চ কমিটি গঠনের পর মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ প্রজ্ঞাপন জারি করে। কমিটির সাচিবিক কাজও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের হাতে।

সংবিধানে একজন প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং সর্বোচ্চ চারজন নির্বাচন কমিশনার নিয়ে একটি নির্বাচন কমিশন গঠনের বিধান রয়েছে। সংবিধানে বলা হয়েছে যে রাষ্ট্রপতি প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং অন্যান্য নির্বাচন কমিশনারদের এই বিষয়ে প্রণীত আইনের বিধান সাপেক্ষে নিয়োগ করবেন। তবে সংবিধানে আরও বলা আছে, প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শে রাষ্ট্রপতি নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *