বঙ্গোপসাগরে ২০ হাজার মেগাওয়াট বায়ু বিদ্যুৎ উৎপাদনের সম্ভাবনা
বঙ্গোপসাগরে ২০,০০০ মেগাওয়াট বায়ু শক্তি উৎপাদনের সম্পদ রয়েছে। রিসোর্স ম্যাপিং ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে। অন্যদিকে, নেট মিটারিংয়ের আওতায় সোলার স্থাপনে নতুন মাত্রা যোগ করা হয়েছে। তবে সকল চেম্বার ও ব্যাংক রুপটপ স্থাপনে সচেতনতা বৃদ্ধির উদ্যোগ নিলে ব্যাপক সাফল্য অর্জিত হবে। নেট মিটারিংয়ের মাধ্যমে বিদ্যুৎ বিক্রি করলে সোলার হোম সিস্টেম স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে পারে। বিশেষ করে যারা সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় আর্থিক সহায়তা পান, তারা ওই টাকা সোলারে বিনিয়োগ করলে তারাও লাভবান হবেন এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানি উৎপাদনের পরিমাণও বাড়বে। আমাদের এখন নতুন প্রযুক্তি হাইড্রোজেন বা নাইট্রোজেন নিয়ে কাজ শুরু করতে হবে।
শনিবার স্রেডা এবং জিআইজেড-এর সহযোগিতায় এনার্জি অ্যান্ড পাওয়ার আয়োজিত ইপি টকস অন ২৬ শীর্ষক আলোচনায় প্রধান অতিথি আবুল কালাম আজাদ একথা বলেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ এনার্জি ফোরামের সভাপতি ও সিভিএফ প্রেসিডেন্সির বিশেষ দূত আবুল কালাম আজাদ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন টেকসই ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ও সরকারের অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ আলাউদ্দিন। প্রাক্তন অতিরিক্ত সচিব, জলবায়ু আলোচক ও নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির ফ্যাকাল্টি ড. নুরুল কাদির। বিদ্যুৎ খাতের একটি থিংক ট্যাংক পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ হোসেন এবং ইন্ডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটির উপ-পরিচালক ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট মোঃ জিয়াউল হক। মিজান আর খান ও প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর ইঞ্জিনিয়ার আল মুদাবির বিন আনাম। অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন জ্বালানি ও বিদ্যুৎ সচিব মোল্লা আমজাদ হোসেন।
আবুল কালাম আজাদ বলেন, জ্বালানি বা জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে অনেক আগ্রহ রয়েছে। জীবাশ্ম জ্বালানি এবং কয়লা নিয়ে ব্যাপক আলোচনার পর -এ এই প্রথম একটি চুক্তি হয়েছে। তবে চূড়ান্ত কৃতিত্ব অর্জিত হয়নি। উন্নত দেশসহ বিশ্বের সব দেশকে প্রতি দুই বছর পর পর এনডিসির হালনাগাদ তথ্য দেওয়ার যে বাধ্যবাধকতা রয়েছে তা এবারের সাফল্য। আর বিশ্বনেতাদের সক্রিয় অংশগ্রহণ খুবই আশাব্যঞ্জক। যাতে আমরা আগামী দিনে আরও পরিকল্পিতভাবে আলোচনাকে এগিয়ে নিতে পারি।
মোহাম্মদ আলাউদ্দিন বলেন, কপ ২৬ ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছে। সবার মধ্যে সচেতনতা বেড়েছে। সোলার নিয়ে আমাদের অনেক সাফল্য। তবে জলবিদ্যুৎ আমদানিতে আমাদের নজর দিতে হবে। মাস্টার প্ল্যানে যা আছে তা অনুসরণ করতে হবে। মহাপরিকল্পনা অনুযায়ী বর্তমানে জ্বালানি দক্ষতার ওপর পাঁচটি কর্মসূচি রয়েছে। কার্বন দূষণ কমাতে শক্তি সাশ্রয়ী পণ্যের ব্যবহার খুবই কার্যকর হতে পারে। প্রাথমিক শক্তি ব্যবহার কমাতেও কাজ করছে।
মোহাম্মদ হোসেন বলেন, আমাদের এনডিসি লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে হলে আমরা যেভাবে নবায়নযোগ্য জ্বালানি নিয়ে কাজ করছি তার অগ্রগতি ৪ গুণ বাড়াতে হবে। বর্তমানে নবায়নযোগ্য শক্তিতে আমাদের অবস্থান প্রায় ৭০০ মেগাওয়াট। ৪ গুণ অর্থাৎ ২৮০০ মেগাওয়াট নবায়নযোগ্য মোট কার্বন দূষণ কমাতে কোনো ভূমিকা রাখবে না। আসলে উন্নত দেশগুলোকে দায়িত্ব নিতে হবে। জলবায়ু পরিপ্রেক্ষিত পরিকল্পনায় যা বলা হয়েছে তা প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে।
জিয়াউল হক বলেন, এবারের কপে প্রথমবারের মতো ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস প্রশমনের সংখ্যা নির্ধারণ করা হয়েছে এবং ২০৩০ সালের মধ্যে এটি কার্বন নিঃসরণ ৪৫% কমিয়ে দেবে। তবে প্রতিটি দেশকে এনডিসির মাধ্যমে ১.৫ ডিগ্রি তাপমাত্রা বজায় রাখার পরিকল্পনা নিয়ে আসতে হবে। দুই বছর পর, ২০২৪ সালে এর অগ্রগতি জানাতে হবে। সৌর, হাইড্রো, নিউ হাইড্রো, বায়ু সকলকে ২০৩০ সালের মধ্যে তাপমাত্রা কমিয়ে রাখার লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে কাজ করতে হবে। বাংলাদেশের পক্ষে আন্তর্জাতিক সহায়তা পাওয়া খুবই সম্ভব। কিন্তু নাইট্রোজেন প্রযুক্তি ব্যবহার করতে পারলে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সহজ হবে।