কিংসের মুকুট এখন আবাহনীর
প্রায় ২০ মিনিট বাকি থাকতেই ম্যাচ শেষ হয়ে যেত। তিন গোলে এগিয়ে থাকায় কমলাপুর বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী মোস্তফা কামাল স্টেডিয়াম আবাহনী সমর্থকদের নিয়ন্ত্রণে। ‘আবাহনী, আবাহনী’ স্লোগানে মুখরিত পুরো গ্যালারি। বিপরীতে, স্টেডিয়ামের বাম পাশে লাল রং করা কিংস সমর্থকরা হতাশ। ভুভুজেলার সুরে বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে শিরোপা উদযাপন করে আবাহনী। রাজাদের দুঃখের রাতে নীল-লাল আবাহনীর বর্ণিল উৎসব। শনিবার কমলাপুরে নতুন প্রতিপক্ষ বসুন্ধরা কিংসকে ৩-০ গোলে হারিয়েছে স্বাধীনতা কাপ চ্যাম্পিয়ন মারিও লেমোসের দল। ২০১৮ সালে এই টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হওয়া কিংসের মুকুট এখন আবাহনীর। ট্রফি জয়ের মধ্য দিয়ে ফুটবলে পুনর্জন্ম হলো ঐতিহ্যবাহী ক্লাবটির।
পেশাদার ফুটবলে বসুন্ধরার কাছে হেরে যাওয়া আবাহনী করপোরেট দলকে হারিয়ে মৌসুমের প্রথম ট্রফি জিতেছে। প্রতিশোধের মধ্য দিয়ে তিন দশকের দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটল অ্যাকোয়া-ব্লু জার্সিধারীদেরও। ১৯৯০ সালের পর আবার স্বাধীনতা কাপের রাজা আবাহনী। টুর্নামেন্টে এটি তাদের দ্বিতীয় শিরোপা। আবাহনীর হয়ে ব্রাজিলিয়ান ডোরেল্টন গোমেজ দুটি ও রাকিব হোসেন একটি গোল করেন। আবাহনীর কোচ হিসেবে এটি মারিও লেমোসের প্রথম শিরোপা।
কলিনড্রেস, রাফেল এবং ডোরেল্টনের সাথে আবাহনীর বিদেশী লাইন আপ এই মৌসুমে সবচেয়ে ভারসাম্যপূর্ণ। ইনজুরির কারণে তপু বর্মন ও জোনাথন ফার্নান্দেজের অনুপস্থিতি কিংসের জন্য বড় ধাক্কা। এদিন বসুন্ধরা তাদের অভাব অনুভব করেছে। তবে তিন বছরের ব্যর্থতা কাটিয়ে ওঠার মিশনে শুরু থেকেই দুর্দান্ত ছিল আবাহনী। ফাইনালের আগে প্রতিদ্বন্দ্বিতার ইঙ্গিত সত্ত্বেও ম্যাচের ৯০তম মিনিটে তিনি উপস্থিত হননি। উল্টো আবাহনীর খেলোয়াড়রা সব সময় দারুণ ছন্দে ছিলেন। তিন গোলের পর বসুন্ধরা সীমান্তে ডোরেল্টন-কলিনড্রেস আক্রমণের ঝড় তোলে। আট ম্যাচে দ্বিতীয়বার বসুন্ধরার কাছে হেরে যাওয়া আবাহনী ম্যাচের ৫৪ মিনিটে এগিয়ে যায়।
খেলা শেষে ক্লাবের পতাকা হাতে নিয়ে গ্যালারিতে থাকা দর্শকদের দিকে ছুটে আসেন আবাহনীর খেলোয়াড়রা। ম্যানেজার সত্যজিৎ দাস রুপুকে বাতাসে ভাসিয়ে উল্লাস করতেন খেলোয়াড়রা। আতশবাজির আলোয় রঙিন আবাহনীর গ্যালারি। না খেললেও আবাহনীর ‘প্রাণ’ খ্যাত মিডফিল্ডার প্রাণতোষ কুমার দাস ট্রফি জিতে সতীর্থদের হাতে বিদায় নেন। নতুন মৌসুমে আবাহনীর সাফল্যে গল্পের অবসান ঘটলেও ক্লাবটির ১৮ বছরের ক্যারিয়ার শেষ হয়ে গেছে।