সেই ভাগ্যবান ১৬জন কারা?

0

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রামের ১৬টি সংসদীয় আসনে আওয়ামী লীগের রেকর্ডসংখ্যক প্রার্থী দলীয় মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও জমা দিয়েছেন। গত ১৮ নভেম্বর থেকে শুরু হওয়া আওয়ামী লীগের মনোনয়নপত্র বিতরণ শেষ হয় ২১ নভেম্বর। এই চার দিনে চট্টগ্রামের ১৬টি আসনে ২১৭ জন প্রার্থী আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চান। দলের একাধিক সূত্র জানায়, এত রেকর্ড সংখ্যক মনোনয়ন প্রত্যাশীর সংখ্যা অতীতে ছিল না।

শেষ মুহূর্তে চট্টগ্রামের ১৬টি আসনে ২১৭ জন মনোনয়ন প্রত্যাশীর মধ্যে কে হচ্ছেন ১৬ আসনের নৌকার মাঝি সেটাই এখন দেখার বিষয়। এ জন্য আওয়ামী লীগের সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ডের বৈঠক পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। যার কারণে সবার দৃষ্টি এখন গণভবনের দিকে। বিশেষ করে তিন-চারজন মন্ত্রী ও সংসদ সদস্য ছাড়া অন্য আসনের সংসদ সদস্য থেকে শুরু করে শীর্ষ নেতারা এখন শেষ মুহূর্তে নানা তৎপরতায় ব্যস্ত। বলতে গেলে দলীয় হাইকমান্ড থেকে সবুজ সংকেত না পাওয়া আসনের প্রার্থীরা এখনো দ্বিধাদ্বন্দ্বে রয়েছেন। তারা নানা পদ্ধতির মাধ্যমে ভাগ্য পরীক্ষার অপেক্ষায় থাকে। এবার চট্টগ্রামের একাধিক সংসদ সদস্য তাদের সংসদীয় আসনে দলের অভ্যন্তরে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছেন। তাদের বিরুদ্ধে দলের অনেকেই মনোনয়ন ফরম জমা দিয়েছেন।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রামের ১৬টি আসনের মধ্যে চট্টগ্রাম-২ ফটিকছড়ি আসন তরিকত ফেডারেশন, চট্টগ্রাম-৫ হাটহাজারী আসন জাতীয় পার্টিকে এবং চট্টগ্রাম-৮ চান্দগাঁও-বোয়াখালী আসন জাসদকে দেওয়া হয়। চট্টগ্রাম-৮ আসন থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য মইনুদ্দিন খান বাদলের জাসদের মৃত্যুর পর এ আসনে আওয়ামী লীগের মোসলেম উদ্দিন আহমেদ মনোনয়ন পেয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। নোমান আল মাহমুদ তার মৃত্যুর পর মনোনয়ন পান এবং তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিতও হন। আগামী ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠেয় দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম-২, চট্টগ্রাম-৫ আসন ছাড়াও আরও একটি বা দুটি আসন বিভিন্ন জোটকে ছেড়ে দেওয়া হতে পারে বলে গুঞ্জন রয়েছে।

দলীয় সূত্রগুলো বলছে, বিএনপি ও তার মিত্রদের নির্বাচনে আসার সম্ভাবনা খুবই কম। এটা ধরে নিয়ে নির্বাচনকে প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক করতে এবং ভোটার বৃদ্ধির লক্ষ্যে তৃণমূল বিএনপি, কল্যাণ পার্টি, বিএনএফ, বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টিসহ আরও কয়েকটি দল নির্বাচনে অংশগ্রহণের প্রস্তুতি নিয়েছে।

এসব দল আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোটগতভাবে নির্বাচন না করলেও চট্টগ্রামের ১৬টি সংসদীয় আসনের মধ্যে জাতীয় পার্টি, বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি, তৃণমূল বিএনপি ও কল্যাণ পার্টিকে একটি করে আসন দেওয়ার গুঞ্জন রয়েছে।

অন্যদিকে, ভোটের মাঠে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেলে জয় প্রায় নিশ্চিত বলে ধারণা করা হচ্ছে, চট্টগ্রামের ১৬টি সংসদীয় আসনে রেকর্ড সংখ্যক প্রার্থী মনোনয়ন পেতে আগ্রহী। আওয়ামী লীগের মনোনয়ন। এ ছাড়া নির্বাচনকে প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক করতে এবং ভোটার উপস্থিতি বাড়াতে স্বতন্ত্র বা বিদ্রোহী প্রার্থীদের ব্যাপারে দলীয় হাইকমান্ড খুবই নমনীয় হবে বলেও মনে করছেন এসব প্রার্থী। এ অবস্থায় তারা দলীয় মনোনয়ন ফরম জমা দিলেও দলীয় মনোনয়ন না পেলেও স্বতন্ত্র প্রার্থীর দৌড়ে এগিয়ে রয়েছেন।

এদিকে বৃহস্পতিবার আওয়ামী লীগের সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ডের প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তবে আজকের বৈঠকে চট্টগ্রাম বিভাগের প্রার্থী চূড়ান্ত হয়নি। আজকের বৈঠকে রাজশাহী, খুলনা ও রংপুর বিভাগের প্রার্থী চূড়ান্ত করা হবে বলে জানা গেছে। বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় রাজধানীর তেজগাঁওয়ে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে আওয়ামী লীগের সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ডের সভা অনুষ্ঠিত হবে। এই বৈঠকে সভাপতিত্ব করবেন দলের সভাপতি ও মনোনয়ন বোর্ডের সভাপতি শেখ হাসিনা। মনোনয়ন বোর্ডের আজকের মুলতবি বৈঠকে চট্টগ্রাম-ঢাকাসহ অন্যান্য বিভাগের প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করা হবে।

এবার চট্টগ্রাম-১১ (বন্দর-পতেঙ্গা) ও চট্টগ্রাম-৮ (চান্দগাঁও-বোয়ালখালী) আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী রয়েছে সবচেয়ে বেশি। চট্টগ্রাম-৮ (বোয়ালখালী ও চসিক আংশিক) আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য নোমান আল মাহমুদের সঙ্গে দলীয় মনোনয়নের জন্য কঠিন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ২৭ জন। অপরদিকে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পেতে চট্টগ্রাম-১১ (বন্দর-পতেঙ্গা) আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য এম আবদুল লতিফের সঙ্গে তাদের দলের ২৭ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এছাড়াও চট্টগ্রাম-২ (ফটিকছড়ি): এ আসনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশীর তালিকায় রয়েছেন ২১ জন।

চট্টগ্রাম-১০ (পাহাড়তলী-ডবলমুরিং) আসনের সংসদ সদস্য মো. মহিউদ্দিন বাচ্চুর সঙ্গে দলীয় মনোনয়ন পেতে তার দলের ১৯ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এদিকে চট্টগ্রাম-১৬ (বাঁশখালী উপজেলা) : বর্তমান সংসদ সদস্যের সঙ্গে দলীয় মনোনয়ন পেতে লড়ছেন আরও ১৯ জনের প্রতিদ্বন্দ্বী।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *