আন্তর্জাতিক শাহাদাতে কারবালা মাহফিলে বক্তারা যারা ইসলামের মূলধারা থেকে বিচ্যুত তারাই পথভ্রষ্ট হয়
চট্টগ্রাম নগরীর জমিয়তুল ফালাহ জাতীয় মসজিদ প্লাজায় ১০ দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক শাহাদাতে কারবালা মাহফিলে আহলে বায়তে রাসূল (দ) প্রেমী মানুষের ঢল নামছে। বৃহস্পতিবার অষ্টম দিনে ইসলামী চিন্তাবিদ ও আলোচকরা বক্তব্য রেখেছেন।
বক্তারা বলেছেন, ইসলামের মূলধারা থেকে যারা বিচ্যুত তারাই মূলত বিপথগামী। দেশে সংখ্যাগরিষ্ঠ সুন্নি মুসলমানরা ইসলামের শান্তি ও সম্প্রীতির বার্তা হৃদয়ের গভীর থেকে ধারণ করেন। সুন্নি মুসলমানরাই শান্তিবাদী ও ইসলাম নির্দেশিত মধ্যপন্থা অবলম্বন করে আসছে। অন্যদিকে ইসলামের নামে নানা ভ্রান্ত মতবাদ পোষণকারীরাই বিপথগামী হচ্ছে।
গতকালের মাহফিলে সভাপতিত্ব করেন শাহাদাতে কারবালা মাহফিল পরিচালনা পরিষদের চেয়ারম্যান, প্রধান পৃষ্ঠপোষক এবং পিএইচপি ফ্যামিলির চেয়ারম্যান সমাজসেবায় একুশে পদকপ্রাপ্ত সুফি মোহাম্মদ মিজানুর রহমান।
তিনি বলেন, আমরা যা বলি বা করি তা আল্লাহ পাক দেখছেন তা মনে রেখে চলার নামই হচ্ছে তাকওয়া। ইয়াজিদিদের মধ্যে এই তাকওয়া ছিল না বলেই তারা নবী পরিবারের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধারণ করতে দ্বিধান্বিত হয়নি। সুন্নি সুফিবাদি জনতাই ইসলামের শান্তির বার্তা ধারণ ও লালন করে আসছে। আমরা আহলে বায়তের পতাকা ধারণ করে হোসাইনি মানবিক ইসলামের ওপর প্রতিষ্ঠিত থাকবো।
সাহাবিগণ নবীপ্রেমের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত বিষয়ে আলোচনা করেন চট্টগ্রাম বিশ^বিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের অধ্যাপক আল্লামা ড. মুহাম্মদ জাফর উল্লাহ। তিনি বলেন, প্রিয় নবীর (দ) সোহবত ও সাহচর্যধন্য সাহাবায়ে কেরামের সকলেই নিষ্পাপ ও পূত পবিত্র জীবনের অধিকারী। তাঁদের সমালোচনা বা ভুল বিচ্যুতি অন্বেষণ করা যাবে না।
ইসলামে বাইয়াত গ্রহণের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা বিষয়ে আলোচনা করেন শাহসূফি আল্লামা মীর মুহাম্মদ মঈনুদ্দিন নূরী সিদ্দিকী আল কুরাইশি। তিনি বলেন, জাগতিক প্রভূত কল্যাণের ভাগিদার ও পরকালের নাজাত পেতে খাঁটি পীর মুরশিদের বাইয়াত গ্রহণ জরুরি। আতিœক পরিশুদ্ধি অর্জনে বাইয়াত গ্রহণ ও তাকওয়া আবলম্বন করতে হবে।
মাইজভান্ডার দরবার শরীফের শাহ সুফি সৈয়দ মোহাম্মদ হাসান মাইজভান্ডারীর প্রেরিত লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনানো হয়।
আহলে বায়তে রাসূলের (দ) শান মর্যাদা নিয়ে আলোচনা করেন আশেকানে আউলিয়া ফাযিল মাদ্রাসার আরবি প্রভাষক আল্লামা মুহাম্মদ ইউসুফ আলকাদেরী। কুরআন মজিদ থেকে তেলাওয়াত করেন আন্তর্জাতিক ক্বারী আহমদ বিন ইউসূফ আল আজহারী। মাহফিল সঞ্চালনা করেন জমিয়তুল ফালাহর পেশ ইমাম হাফেজ মাওলানা মুহাম্মদ আহমদুল হক।
মাহফিলে অতিথি ছিলেন ব্যবসায়ী মোহাম্মদ আলমগীর পারভেজ, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি আবু সুফিয়ান, ইছাপুর দরবার শরীফের শাহজাদা সৈয়দ আমানুল্লাহ আহসান, পিএইচপি ফ্যামিলির পরিচালক মো. জহিরুল ইসলাম রিংকু, আঞ্জুমান ট্রাস্টের সিনিয়র সহসভাপতি মোহাম্মদ মহসিন, গাউছিয়া কমিটি বাংলাদেশের চেয়ারম্যান পেয়ার মোহাম্মদ কমিশনার।
মাহফিল পরিচালনা পর্ষদের শীর্ষস্থানীয়সহ কর্মকর্তাবৃন্দ, বিভিন্ন দরবারের সাজ্জাদানশীন, আওলাদবৃন্দ, বিভিন্ন মাদ্রাসার আলেমরা উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া মহফিলের প্রধান সমন্বয়ক পিএইচপি ফ্যামিলির পরিচালক মোহাম্মদ আলী হোসেন সোহাগ, খোরশেদুর রহমান, সিরাজুল মুস্তফা, মুহাম্মদ সাইফুদ্দিন, আমানত শাহ দরগাহ শরীফের শাহজাদা আবদুল্লাহ, ব্যবসায়ী নুর মোহাম্মদ, মোহাম্মদ ইদ্রিস, হাফেজ মুফতি কাজী জালাল উদ্দিন, জাফর আহমদ সওদাগর, প্রফেসর কামাল উদ্দিন আহমদ, আব্দুল হাই মাসুম, দিলশাদ আহমদ, মোহাম্মদ আবুল মনসুর সিকদার, এস এম শফি, ছালামত উল্লাহ, গাজী মুহাম্মদ ইদ্রিচ চেয়ারম্যান, মাহাবুবুল আলম, মাইনুদ্দীন মিঠু, খোরশেদ আলী চৌধুরী, নাজিব আশরাফ প্রমুখ।
শুক্রবার নবম দিনে মাহফিলে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত থাকবেন বড়পীর হযরত আবদুল কাদের জিলানী (রা.) বংশধর ও দরবার শরীফের সাজ্জাদানশীন শাহ সুফি সৈয়দ আফিফ আবদুল কাদের মনসুর আল জিলানী।