ডেঙ্গু রোগী ৩৫ হাজার ছাড়াল। একদিনে আরও ৯ জনের মৃত্যু, আক্রান্ত  ২২৯৩

0

দেশে ডেঙ্গুর সংক্রমণ বেড়েই চলেছে। এদিকে এ বছর বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ৩৫ হাজার ছাড়িয়েছে। পরিস্থিতি জনস্বাস্থ্যের ‘জরুরি’ পর্যায়ে পৌঁছেছে। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা এই সংকট থেকে উত্তরণের জন্য দেশে সমন্বিত উদ্যোগের আহ্বান জানিয়েছেন। তারা বলছেন, ডেঙ্গু সমস্যার সমাধান না হলে রাজ্যে মানুষের আস্থার সংকট তৈরি হবে। এদিকে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলছেন, ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ বা মশা নিয়ন্ত্রণ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কাজ নয়; স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কাজ চিকিৎসা সেবা দেওয়া।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গত শনিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত (এক দিনে) এ বছর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২ হাজার ২৯৩ জন। ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ৩৫ হাজার ২৭০ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন। এর মধ্যে ঢাকায় চিকিৎসা নিয়েছেন ২১ হাজার ১৮৭ জন এবং ঢাকার বাইরে ১৪ হাজার ৮৩ জন। জুলাইয়ের ২৪ দিনেই ভর্তি হয়েছেন ২৭ হাজার ২৯২ জন।

সোমবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত একদিনে ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। তারা ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। এ বছর মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৮৫। এর মধ্যে চলতি মাসের ২৪ দিনে মারা গেছেন ১৩৮ জন।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, বর্তমানে দেশের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে মোট ৭ হাজার ৪৬৩ জন ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছে। বর্তমানে ঢাকার সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে ৪ হাজার ৩৯৫ জন এবং অন্যান্য বিভাগের বিভিন্ন হাসপাতালে ৩ হাজার ৬৮ জন রোগী ভর্তি রয়েছেন। এ বছর ডেঙ্গুর প্রকোপ দ্রুত বাড়ছে। ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে জুনে ৫ হাজার ৯৫৬ জন হাসপাতালে ভর্তি হলেও জুলাইয়ের ২৪ দিনে এ সংখ্যা সাড়ে ছয় গুণ বেড়েছে। আক্রান্তের পাশাপাশি মৃত্যুও বেড়েছে। গত মাসে ৩৪ জন মারা গেলেও এ মাসে মারা গেছে ১৩৮ জন।

গাইবান্ধা-১ আসনের সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী গতকাল এক গোলটেবিল বৈঠকে বলেন, এটা জলবায়ু পরিবর্তন নয়, বিশ্ব এখন জলবায়ু বিপর্যয় প্রত্যক্ষ করছে। এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় বাড়ছে ডেঙ্গু। বিশ্বের প্রায় ৫০ শতাংশ মানুষ ডেঙ্গুর ঝুঁকিতে রয়েছে। ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনকে একসঙ্গে এ পরিস্থিতির সমাধান করতে হবে। এছাড়াও আমাদের নিজ নিজ জায়গা থেকে আরও সক্রিয় হতে হবে। এখানে একটি সমন্বিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন। ডেঙ্গু সমস্যার সমাধান না হলে রাজ্যের প্রতি মানুষের আস্থা কমে যাবে।

ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ)

বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন অব দ্য রুরাল পুওর (ডিওআরপি) ও ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির (ডিআইইউ) যৌথ উদ্যোগে ‘পানি, স্যানিটেশন অ্যান্ড ক্লাইমেট চেঞ্জে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব’ শীর্ষক গোল টেবিলে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন ডর্পের উপ-নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ জোবায়ের হাসান।

বাংলাদেশ হেলথ রিপোর্টার্স ফোরামের সভাপতি রাশেদ রাব্বি বলেন, ডেঙ্গু নির্মূল করতে হলে আগে এর উৎস অর্থাৎ মশার প্রজনন ক্ষেত্র নির্মূল করতে হবে। ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সরকারের একাধিক মন্ত্রণালয় জড়িত থাকার মন্তব্য করে রাশেদ রাব্বি বলেন, এ ক্ষেত্রে ডেঙ্গু মোকাবেলায় কার্যকর টাস্কফোর্স তৈরি করা প্রয়োজন।

এদিকে গতকাল ঢাকা মেডিকেল কলেজে এক অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, ‘ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ করা আমাদের (স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়) কাজ নয়। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কাজ চিকিৎসা সেবা দেওয়া।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *