‘সিন্ডিকেট’ অ্যাম্বুলেন্স না নেওয়ায় অক্সিজেন খুলে দেওয়া হয়, পথেই রোগীর মৃত্যু

0

বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স না নেওয়ায় সরকারি হাসপাতাল চত্বরে দাঁড়িয়ে থাকা ‘সিন্ডিকেট’ রোগীর নাকে লাগানো অক্সিজেন টিউব খুলে দিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। পথেই মৃত্যু হয় রোগীর। এ ঘটনায় তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ।

ঘটনাটি ঘটেছে পশ্চিমবঙ্গের সালারের ফুলরি মোড়ে। স্থানীয়রা জানান, অক্সিজেন টিউব খুলে ফেলায় সালার মাধইপুর গ্রামের চাঁদতারা বিবির মৃত্যু হয়। তিনি দীর্ঘদিন ধরে কিডনির সমস্যায় ভুগছিলেন।

ভারতীয় গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, সোমবার রাতে পরিবারের সদস্যরা তাকে সালার ব্লক গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করেন। প্রাথমিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর খুব দ্রুত ডায়ালাইসিস করতে হবে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। সে জন্য পরিবার কলকাতায় যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। কিন্তু পূর্বপরিচিত অ্যাম্বুলেন্সে রোগী নিতে চাইলে হাসপাতাল চত্বরে দাঁড়িয়ে থাকা অ্যাম্বুলেন্স চালকরা রোগীকে থামিয়ে দেন। তারা বলেন, রোগী নিতে চাইলে এখান থেকে অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে যেতে হবে।

চাঁদতারা বিবির ছেলে সাকিব আলী বলেন, আমরা যে অ্যাম্বুলেন্সে মাকে নিয়ে যাচ্ছিলাম, তার চালক আমাদের পরিচিত। অনেক দিন ধরেই মাকে নিয়ে যাচ্ছেন কলকাতায়। তাই সেখানকার রাস্তাগুলো সে ভালো করেই জানে। কিন্তু এখানকার (হাসপাতাল) অ্যাম্বুলেন্স চালকদের দাবি, তাদের অ্যাম্বুলেন্সে ওঠা উচিত। আমি আমার পছন্দের অ্যাম্বুলেন্স নেওয়ার জন্য তাদের কিছু ‘জরিমানা’ দিতেও রাজি হয়েছি। ঘণ্টাখানেক এভাবেই কেটে যায়। এরপর আবার ফুলুরী মোড়ে আমাদের গাড়ি থামিয়ে মারধর করা হয়। মায়ের নাকের অক্সিজেন টিউব খুলে দেওয়া হয়।

এ ঘটনায় ৪২ বছর বয়সী চাঁদতারা বিবি কলকাতায় পৌঁছার আগেই মারা যান। অক্সিজেনের অভাবে তার মৃত্যু হয়েছে বলে তার পরিবার জানিয়েছে। শাকিব আলী বলেন, আমার মাকে খুন করা হয়েছে। তাদের কঠিন শাস্তি চাই।

চাঁদতারা বিবিকে বহনকারী অ্যাম্বুলেন্সের চালক রিপন শেখ বলেন, আমি তাদের সঙ্গে করমর্দন করে বলি, এ পথে আর কোনোদিন অ্যাম্বুলেন্স চালাব না। এবারের মতো রোগীকে নিয়ে যাই। তারা এখনও আমাকে মারধর করে।

চাঁদতারার স্বজনরা সালার ব্লক গ্রামীণ হাসপাতালে গিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। ভাংচুর করা হয় হাসপাতাল চত্বরে দাঁড়িয়ে থাকা বিভিন্ন অ্যাম্বুলেন্স। মঙ্গলবার বিকেলে মরদেহ কান্দি মহকুমা হাসপাতালের মর্গে নিয়ে যাওয়া হয়।

এ ঘটনায় চাঁদতারা বিবির পরিবার ‘সিন্ডিকেট অ্যাম্বুলেন্স’ চালক আরিফ শেখ, জিয়ারুল শেখ ও টনি শেখের বিরুদ্ধে সালার থানায় লিখিত অভিযোগ করেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *