ঘূর্ণিঝড় ‘মওকা’ উপকূল অতিক্রম করছে
ঘূর্ণিঝড় ‘মোকা’ কক্সবাজার-উত্তর মিয়ানমার উপকূল অতিক্রম করতে শুরু করেছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর। রোববার সকালে অধিদপ্তরের ১৮ নম্বর বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত অতি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ‘মওকা’ উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে উত্তর-পূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় ঘনীভূত হচ্ছে বলে জানা গেছে। রোববার সকাল ৬টায় এটি চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৩৮৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৩০৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ-পশ্চিমে, মংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৪৫০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ-পূর্বে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৩৭০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থিত ছিল। এটি কক্সবাজার-উত্তর মিয়ানমার উপকূল অতিক্রম করতে থাকে। এটি আরও উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে রবিবার বিকেল বা সন্ধ্যায় মিয়ানমারের সিটওয়ের কাছে কক্সবাজার-উত্তর মিয়ানমার উপকূল অতিক্রম করতে পারে।
ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৭৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের সর্বাধিক স্থায়ী গতিবেগ হল ১৯৫ কিমি/ঘন্টা, দমকা বা দমকা আকারে ২১৫ কিমি/ঘণ্টা পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। সুপার সাইক্লোন কেন্দ্রের আশপাশে সাগর খুবই উত্তাল রয়েছে। কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ১০ নম্বর দুর্যোগ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
চট্টগ্রাম ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৮ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। মংলা সমুদ্রবন্দরকে ৪ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা কক্সবাজার এবং এর অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলো ১০ নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে। চট্টগ্রাম, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা জেলা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলো ৮ম দুর্যোগ সংকেতের আওতায় থাকবে।
অত্যন্ত শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ের অগ্রবর্তী প্রান্তের প্রভাব এবং চাপের পার্থক্যের অতিরিক্ত প্রভাবের কারণে কক্সবাজার ও চট্টগ্রামের উপকূলীয় জেলা এবং তাদের প্রত্যন্ত দ্বীপ ও চরগুলোর নিচু এলাকা ৮-১২ ফুট উঁচু বাতাস চালিত জোয়ারে প্লাবিত হতে পারে। স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে।
অতি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ের অগ্রবর্তী প্রান্তের প্রভাবে এবং অতিরিক্ত চাপের পার্থক্যের কারণে উপকূলীয় জেলা ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা এবং তাদের নিম্নাঞ্চলের নিম্নাঞ্চল। কাছাকাছি দ্বীপ ও চরগুলো স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৫-৭ ফুট বেশি বাতাস চালিত জোয়ার অনুভব করবে। প্লাবিত হতে পারে।
অতি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে চট্টগ্রাম, সিলেট ও বরিশাল বিভাগে ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে। ভারী বর্ষণে কক্সবাজার, বান্দরবান, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও চট্টগ্রামের পাহাড়ি এলাকায় ভূমিধসের আশঙ্কা রয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।