যুবলীগের সমাবেশ থেকে বিএনপি কার্যালয়ে হামলা ও ভাংচুর

0

যশোর জেলা যুবলীগের একাংশের মিছিল থেকে জেলা বিএনপি কার্যালয় ব্যাপক ভাংচুর করা হয়েছে। রোববার বিকেল ৫টার দিকে জেলা যুবলীগের ব্যানারে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। মিছিলটি জেলা বিএনপি কার্যালয়ের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় সেখান থেকে এ হামলা চালানো হয় বলে জানা গেছে।

এ সময় বিএনপি কার্যালয়ের ভেতরে থাকা চেয়ার, টেবিল, ব্যানার ফেস্টুন ব্যাপক ভাংচুর করা হয়। এর আগে নগরীতে সাবেক মন্ত্রী ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য প্রয়াত তরিকুল ইসলামের ছেলে অনিন্দ্য ইসলাম অমিতের গাড়ি ও বিএনপির খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদকের গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। পরে তার বাড়িতেও হামলা ও ভাংচুর করা হয় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

যুবলীগের নেতা-কর্মীরা মহড়া দিচ্ছিলেন এবং প্রতিটি মোড়ে পুলিশ মোতায়েন থাকায় বিকেল থেকে নগরজুড়ে উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। জেলা যুবলীগের সহ-সভাপতি সৈয়দ মেহেদী হাসান ও সদর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন বিপুলের নেতৃত্বে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতারা শহরের গ্যারেজে আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয় চত্বরে জড়ো হন। পরে নগরীর বিভিন্ন সড়কে নেতাকর্মীদের মহড়া দিতে দেখা যায়।

জেলা বিএনপির সদস্য সচিব সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু বলেন, আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা তাণ্ডব চালিয়েছে। রাজনৈতিক দলের পবিত্র স্থান হল দলীয় কার্যালয়। তাও সহিংসতার হাত থেকে রেহাই পায়নি। বিএনপির খুলনা বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিতকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে।

তার গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে বলেও জানান তিনি। আওয়ামী সন্ত্রাসীরা তাদের বাড়িতে হামলা চালায়। তাদের অত্যাচার থেকে আমরা কেউই নিরাপদ নই। আওয়ামী লীগের জেলা পর্যায়ের অভিভাবকদের ভূমিকাও প্রশ্নবিদ্ধ। তারা আসলে কি চায়? তারা নৈরাজ্যের পরিবেশ সৃষ্টি করতে চাইলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে। তাদের ভূমিকায় আমরা হতবাক।

জানা যায়, সদর উপজেলার রুপদিয়া বাজারে সহিংসতার ঘটনায় গ্রেফতার ২৮ নেতাকর্মীকে রোববার দুপুরে আদালতে হাজির করা হয়। বেলা ৩টার দিকে আদালতে নেতাকর্মীদের দেখতে যান বিএনপির খুলনা বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত। এ সময় পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে তার বাকবিতণ্ডা হয়।

একপর্যায়ে পুলিশ কর্মকর্তারা নগরীতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন জোরদার করেন। এরই মধ্যে আদালত থেকে ঘোপের বাড়ি যাওয়ার পথে যুবলীগের বিক্ষোভ মিছিলের সামনে পড়ে অনিন্দ্য ইসলাম অমিতের বহনকারী প্রাইভেটকারটি। এ সময় তার গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। এরপর বিকেল সাড়ে চারটার দিকে জেলা যুবলীগের ব্যানারে একটি মিছিল জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে এসে বিক্ষোভ করে। মিছিলটি নগরীর লালদীঘি পাড়ে বিএনপি কার্যালয় পার হওয়ার সময় বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা হামলা চালায়।

এ সময় বিএনপি কার্যালয়ের ভেতরে থাকা চেয়ার, টেবিল, ব্যানার ও ফেস্টুন ব্যাপক ভাংচুর করা হয়। ভাংচুরের পর মিছিলটি জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে গিয়ে শেষ হয়। দলীয় কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে বিএনপির সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড রুখতে যুবলীগের নেতাকর্মীরা রাজপথে থাকবে বলে ঘোষণা দেওয়া হয়।

সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক যুবলীগ নেতা আনোয়ার হোসেন বিপুল, জেলা যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম রফিক, প্রচার সম্পাদক পৌর কাউন্সিলর শেখ জাহিদ হোসেন মিলন প্রমুখের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য দেন। জেলা যুবলীগের সহ-সভাপতি সৈয়দ মেহেদী হাসান।

সমাবেশে নেতারা বলেন, বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দাকে পুঁজি করে বিএনপি দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে। অমিত যশোরকে বিপর্যস্ত করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত বিএনপির খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম। তার নেতৃত্বে বিএনপি আন্দোলনের নামে নৈরাজ্য করছে। ইতিমধ্যে একজন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধির গাড়ি ভাংচুর করেছে। তাদের নিষ্ক্রিয়তা যশোরে চলতে দেওয়া হবে না। শুধু নগরী নয়, কোনো ওয়ার্ডেই কর্মসূচি পালনের নামে বিশৃঙ্খলা হতে দেওয়া হবে না। যুবলীগের নেতাকর্মীরা তাদের প্রতিহত করবে।

অপরদিকে, রোববার বিকেলে ঘোপে সাবেক মন্ত্রী ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য প্রয়াত তরিকুল ইসলামের বাড়িতে হামলা চালায় যুবলীগের একদল নেতাকর্মী। এ সময় কয়েকজন সাংবাদিক বাড়ির বাইরে থাকায় তাদের মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়। রোববার বিকেল থেকেই সরগরম হয়ে উঠেছে যশোর নগরী। শহরের কয়েকটি স্থানে গাড়ি ভাংচুরের ঘটনাও ঘটেছে।

বিএনপির খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত বলেন, রাজনৈতিকভাবে আমাদের মোকাবিলা করতে না পেরে তারা একের পর এক বিএনপির শীর্ষ নেতাদের ওপর হামলা চালিয়েছে। জনগণ যখন রাজপথে নেমেছে; তখন আওয়ামী লীগ নেতারা মন হারিয়েছেন। এ কারণেই তারা। আমাদের উপর হামলা করছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *