সিপিডির প্রতিবেদন।সীতাকুণ্ডের মতো সব কন্টেইনার ডিপোই অগ্নিঝুঁকিতে

0

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিএম ডিপোতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের জন্য হাইড্রোজেন পারক্সাইড পরিচালনার দুর্বলতাকে দায়ী করেছে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)। সংস্থাটির দাবি, দেশের সব কন্টেইনার ডিপো একই ধরনের অগ্নিকাণ্ডের ঝুঁকিতে রয়েছে। পুরো আমদানি-রপ্তানি সরবরাহ চেইনও ঝুঁকিতে রয়েছে।

বুধবার ধানমন্ডি কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সিপিডির গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম ‘ইন্ডাস্ট্রিয়াল সেফটি ইন ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড অফ কেমিক্যাল অ্যান্ড হ্যাজার্ডাস প্রোডাক্ট: এক্সপেরিয়েন্স অব চিটাগাং ইনল্যান্ড কন্টেইনার ডিপো (আইসিডি) দুর্ঘটনা’ শীর্ষক প্রতিবেদন তুলে ধরে এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, সীতাকুণ্ডের বিএম ডিপোর তথ্য, সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা ও গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, দেশে শিল্পায়ন বাড়ছে। হাইড্রোজেন পারক্সাইডের মতো দাহ্য রাসায়নিকের ব্যবহারও ভবিষ্যতে বাড়বে। এমনকি দেশে বিভিন্ন রাসায়নিক দ্রব্য উৎপাদন করা হবে। ফলে সীতাকুণ্ডের মতো আরও দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। কন্টেইনারাইজড পণ্যগুলির তথ্য ব্যবস্থাপনায় ঘাটতি ছাড়াও, কীভাবে দাহ্য রাসায়নিকগুলি পরিচালনা করা যায় তার বড় দুর্বলতা রয়েছে। দুর্ঘটনা এড়াতে পুরো নিরাপত্তা কাঠামোকে নজরদারির আওতায় আনতে হবে। এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষ গঠনের প্রস্তাব দিয়েছে সিপিডি।

খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, নব্বইয়ের দশকে রাসায়নিকের কারণে খুব কম অগ্নি দুর্ঘটনা ঘটেছে। ২০১০ সাল থেকে এ ধরনের দুর্ঘটনা বেড়েছে। সীতাকুণ্ড ট্র্যাজেডি দুর্ঘটনার অনুপাতে অগ্নি নিরাপত্তা না বাড়ার একটি উদাহরণ। দুর্ঘটনার পর কর্তৃপক্ষ চরম দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিয়েছে। এমনকি ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরাও জানতেন না ডিপোতে কী ধরনের মালামাল মজুত রয়েছে।

রাসায়নিক উৎপাদন, মজুদ ও পরিবহনের ওপর কঠোর নজরদারি এবং বিদ্যমান আইন সংস্কারের পরামর্শ দিয়ে তিনি আরও বলেন, ২০১৭ সালের হিসাব অনুযায়ী দেশে ছোট-বড় ২৫১টি রাসায়নিক উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এসব কোম্পানিতে ৩৩ হাজার ৬৬০ জন শ্রমিক কাজ করেন। তাদের প্রয়োজনীয় অগ্নি নিরাপত্তা নেই।

এ সময় সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন বলেন, আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক চাহিদার কারণে বাংলাদেশ শিল্পায়নের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হবে। এরই মধ্যে দেশে গড়ে উঠছে বিভিন্ন অর্থনৈতিক অঞ্চল। কিন্তু শ্রমিকদের জীবন ঝুঁকিমুক্ত না হলে টেকসই শিল্পায়ন হবে না।

তিনি আরও বলেন, সীতাকুণ্ড ডিপোতে বিপজ্জনক রাসায়নিক হাইড্রোজেন পারক্সাইডের ২৭টি কেনটেইনারের মধ্যে ১৫টি বিস্ফোরিত হয়েছে। রাসায়নিকের তথ্য ও প্রস্তুতির অভাবে ১২ জন দমকলকর্মী প্রাণ হারিয়েছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *