‘৫৫ হাত’ পানির নিচে ছিল ডুবে যাওয়া লঞ্চটি
নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদীতে ডুবে যাওয়া এমভি আশরাফ উদ্দিন নামের লঞ্চটিকে ৫৫ হাত পানির নিচ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। সোমবার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে উদ্ধারকারী জাহাজ প্রত্যয় লঞ্চটি টেনে নদীর তীরে আলামিননগর এলাকায় রাখে।
তবে নারায়ণগঞ্জ সদর নৌ পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুজ্জামান জানান, লঞ্চের ভেতরে তল্লাশি করে নতুন কোনো লাশ পাওয়া যায়নি।
তিনি বলেন, আত্মীয়রা এখনো নিখোঁজ চারজনের নাম নথিভুক্ত করেছেন। নিখোঁজদের উদ্ধারে নদীতে তল্লাশি চালানো হচ্ছে।
ওসি মনিরুজ্জামান জানান, লঞ্চ ডুবির ঘটনায় এ পর্যন্ত মোট ছয়জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। চারজনের মরদেহ তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। তারা সবাই মুন্সীগঞ্জের বাসিন্দা। দুজনের পরিচয় এখনো পাওয়া যায়নি।
নারায়ণগঞ্জের ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের উপ-সহকারী পরিচালক আবদুল্লাহ আল আরেফিন বলেন, ডুবে যাওয়া লঞ্চটিকে ৫৫ ফুট পানির নিচে উদ্ধার করা হলেও ভেতরে কোনো লাশ পাওয়া যায়নি।
সোমবার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে লঞ্চটি টেনে নদীর তীরে রাখা হয়।
এ পর্যন্ত ৬ জনের মরদেহ পাওয়া গেলেও ৪ জনের নাম পরিচয় পাওয়া গেছে। তারা হলেন, মুন্সীগঞ্জ পৌরসভার উত্তর ইসলামপুর এলাকার জয়নাল ভূঁইয়া (৫০), রমজানবেগ এলাকার আরিফা (৩৫), তার সন্তান সাফায়েত (দেড় বছর) ও গজারিয়া উপজেলার ইসমানিরচর এলাকার শিল্পা রানী।
নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক মঞ্জুরুল হাফিজ জানান, লঞ্চ ডুবির প্রতিটি লাশের জন্য প্রাথমিকভাবে ২৫ হাজার টাকা করে অনুদান দেওয়া হচ্ছে। উদ্ধার কাজ এখনও চলছে। এছাড়া জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। উদ্ধার অভিযান শেষ হলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এর আগে রোববার বিকেলে নারায়ণগঞ্জে পণ্যবাহী জাহাজের ধাক্কায় এমভি আশরাফ উদ্দিন নামের মুন্সীগঞ্জগামী একটি লঞ্চ ডুবে যায়। চর সৈয়দপুরের আল আমিননগর এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ছয়জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এমভি আশরাফ উদ্দিন প্রায় ৭০ জন যাত্রী নিয়ে নারায়ণগঞ্জ কেন্দ্রীয় লঞ্চ টার্মিনাল থেকে মুন্সীগঞ্জ যাচ্ছিলেন। কিন্তু পথে এমভি রূপসী-৯ নামের একটি কার্গো জাহাজ লঞ্চটিকে ধাক্কা দেয়। মুহূর্তের মধ্যে লঞ্চটি ডুবে যায়।
এ সময় ১৫ থেকে ২০ জন যাত্রী সাঁতরে তীরে উঠতে পারলেও বাকিরা নিখোঁজ রয়েছে। তবে লঞ্চটিতে কতজন যাত্রী ছিলেন তা নিশ্চিত করতে পারেননি কেউ।