৩ কলেজ শিক্ষার্থীকে গুলি করে হত্যা।ভুয়া এনআইডি নিয়ে সৌদিতে ঘুরে এসেও ধরা
নোয়াখালী সরকারি কলেজের তিন শিক্ষার্থীকে গুলি করে হত্যার মামলার পঞ্চম আসামি বেগমগঞ্জ উপজেলার অনন্তপুর গ্রামের বাপ্পী (৩১)। ওই ঘটনার পর ২০১৬ সালে বাপ্পী নোয়াখালী ছেড়ে ফেনীতে চলে আসেন। সেখানে গিয়ে নিজের ও বাবার নাম ঠিকানা পরিবর্তন করে ফেনী সদর উপজেলায় জাল জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরি করেন। পরিচয়পত্রও নিয়ে যান সৌদি আরবে। তবে এত কিছুর পরও রক্ষা পাননি বাপ্পি।
দেশে ফেরার পর গত ৯ জানুয়ারি কুমিল্লার লাকসামে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। অভিযুক্তের পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর শাওনকে গ্রেপ্তার করা হয়। বুধবার নোয়াখালীর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক আ ন ম মোরশেদ খান এ আদেশ দেন। নোয়াখালী আদালতের এপিপি এমদাদ হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আদালতের ভাষ্যমতে, নোয়াখালী সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের পাশে একটি কুকুরকে গোসল করানো নিয়ে বিরোধের জের ধরে ২০১৬ সালের ২১ মার্চ রাত ৯টার দিকে একই গ্রামের হাজী কুদরত উল্লাহর ছেলে সাজু ও সৌরভ অনন্তপুর গ্রামের তিন শিক্ষার্থীকে গুলি করে হত্যা করে। . এতে ঘটনাস্থলেই কলেজ ছাত্র লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মাইজদী গ্রামের সাইফুল ইসলাম ওয়াসিম নিহত হন। এছাড়া তার দুই বন্ধু একই গ্রামের ফজলে রাব্বি রাজীব (২২) ও জামসেদুল হক ইয়াসিন (২৩)কে গুলি করে হত্যা করা হয়। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাদেরও মৃত্যু হয়।
২২ মার্চ রাতে রাজীবের মা কামরুন্নাহার বাদী হয়ে সাজুসহ আটজনের নাম উল্লেখ করে ৬-৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। এরপর অভিযুক্তরা আত্মগোপনে চলে যায়।
নিহত ছাত্রলীগ নেতা ইয়াসিনের মা জেনোয়ারা বেগম জানান, গ্রেফতার এড়াতে বাপ্পী নোয়াখালী ছেড়ে ফেনীতে আশ্রয় নেন। সেখানে তিনি তার নাম পরিবর্তন করে ফিরোজ মাসুদ বাপ্পি রাখেন এবং তার বাবা ফারুক মুহুরীর পরিবর্তে আব্দুর রহিম ব্যবহার করেন। ফেনী সদর উপজেলার স্থায়ী ঠিকানা দেখিয়ে জাতীয় পরিচয়পত্রও তৈরি করেন। ওই পরিচয়পত্র নিয়ে তিনি সৌদি আরব চলে যান। পরে দেশে ফিরে মাদক ব্যবসায় জড়িয়ে পড়েন বাপ্পি। চলতি বছরের ৯ জানুয়ারি লাকসাম থানা পুলিশ তাকে মাদকসহ আটক করে আদালতের মাধ্যমে কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠায়।
তিনি আরও জানান, বিষয়টি তিনি জানতে পেরে মিথ্যা মামলায় বাপ্পীকে গ্রেফতারের জন্য আদালতে আবেদন করেন। ওই আবেদনের পর আদালতের নির্দেশে নোয়াখালী পিবিআই বিষয়টি তদন্ত করে। বাপ্পির ভুয়া পরিচয়ের আসল পরিচয় জানার পর মঙ্গলবার তাকে কুমিল্লা থেকে নোয়াখালী কারাগারে আনা হয়। বুধবার তাকে নোয়াখালীর বিশেষ জজ আদালতে পাঠানো হয়েছে। আদালতে বাপ্পীও পরিচয় পরিবর্তনের কথা স্বীকার করেছেন।