ত্রিশালে বাস-ট্রাকের সংঘর্ষ। দুধ খাওয়া হলো না সিন্নাতুন নূর , ফিডার রাস্তায় পড়ে থাকল
মায়ের কোলে মাথা রেখে ফিডারে দুধ পান করছিলেন সাত মাসের শিশুকন্যা সিন্নাতুন নূর। মা কি জানতেন এটাই তার একমাত্র সন্তানের শেষ দুধ?
বুধবার ময়মনসিংহের ত্রিশালে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের কাজির সিমলায় যাত্রীবাহী বাস ও ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে শিশুটির মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন অন্তত ৪০ জন যাত্রী।
দুর্ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ময়মনসিংহ সদর উপজেলার সুতিয়াখালী গ্রামের রুবেল মিয়া স্ত্রী অমি আক্তার ও শিশু কন্যা সিন্নাতুন নূরকে নিয়ে নরসিংদীতে কর্মস্থলে ফিরছিলেন।
ঢাকা থেকে শেরপুরগামী মক্কা-মদিনা পরিবহনের বাসের বাম পাশের সিটে মেয়েকে নিয়ে বসেছিলেন মা অমি আক্তার। বাসে বসে মেয়েটিকে ফিডারে খাওয়াচ্ছিলেন তিনি। কিছু বুঝে ওঠার আগেই অমি আক্তারের পা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় এবং কোল থেকে পড়ে যায় তার শিশুকন্যা।
মর্মান্তিক দুর্ঘটনার পরপরই হাইওয়েতে দুধের ফিডার পড়ে থাকতে দেখা যায়।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, বুধবার দুপুর সোয়া ১২টার দিকে শেরপুর থেকে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়া মক্কা-মদিনা নামের একটি যাত্রীবাহী বাস ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের ত্রিশালের কাজির সিমলা এলাকা অতিক্রম করছিল। হঠাৎ বাসের সামনে থাকা বালি ভর্তি ট্রাকের একটি চাকা বিস্ফোরিত হলে অন্যটি খুলে যায়। এরপর ট্রাকের সঙ্গে বাসটির সংঘর্ষ হয়। এতে বাসের বাম পাশে বিস্ফোরণ ঘটে।
এ সময় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে প্রায় আধা ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ থাকে। পরে ত্রিশাল থানা পুলিশ যান চলাচল স্বাভাবিক করে।
ত্রিশাল থানার ওসি তদন্ত আবু বকর সিদ্দিক জানান, পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর আগেই স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। সিন্নাতুন নুরকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
সিন্নাতুনের বাবা রুবেল মিয়া ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। মা অমি আক্তারের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।