খুন হলেন অভিনেত্রী শিমু।হত্যার সময় পাশের ঘরে দুই শিশু ঘুমিয়ে ছিল

0

অভিনেত্রী রাইমা ইসলাম শিমু নিহত হওয়ার সময় তার সন্তানেরা ফ্ল্যাটে ছিলেন। ঘটনার সময় তারা পাশের ঘরে ঘুমাচ্ছিলেন। হত্যার পর লাশ বস্তায় ভরে বাসা থেকে বের করে আনা হলেও তারা কিছুই বুঝতে পারেনি। হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় গ্রেপ্তার শিমুর স্বামী খন্দকার শাখাওয়াত আলীম নোবেল পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে এ তথ্য জানান। তাকে তিন দিন ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করছে কেরানীগঞ্জ মডেল থানা পুলিশ। একই ঘটনায় নোবেল বিজয়ী এসএমওয়াই আবদুল্লাহ ফরহাদকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে নোবেল দাবি করেছেন, শিমুকে হত্যার কোনো পরিকল্পনা তার ছিল না। উভয়ের মধ্যে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে তিনি তাকে চড় মারেন। তার ওপরও  শিমুও চড়াও হন।ক্ষিপত হয়ে স্ত্রীকে  গলা টিপে ধরলে নিস্তেজ হয়ে যায়। এরপর বন্ধু ফরহাদের পরিকল্পনায় লাশ গুম করার সিদ্ধান্ত নেন তারা। কি নিয়ে ঝগড়া হয়েছিল জানতে চাইলে নোবেল বলেন, তাদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। এ নিয়ে দাম্পত্য ও পারিবারিক কলহ চলছিল।

কেরানীগঞ্জ মডেল থানার ওসি আবদুস সালাম বলেন, নোবেল প্রকাশ্যে স্ত্রীকে হত্যার কথা স্বীকার করছেন। নোবেল দাবি করেছেন যে তিনি তার স্ত্রীকে কিছু বিষয়ে সন্দেহ করেছিলেন। তার স্ত্রীও তাকে সন্দেহ করে। পুরনো গাড়ির যন্ত্রাংশের ব্যবসা বন্ধ থাকায় কিছু করার চাপ ছিল তার। এটাই ছিল ঝগড়ার মূল কারণ।

তদন্তের ঘনিষ্ঠ সূত্র জানায়, শিমুরের লাশ বাড়ি থেকে সরিয়ে নেওয়ার আগে নোবেল ও ফরহাদ নিরাপত্তারক্ষীদের নাস্তা আনতে পাঠিয়েছিলেন। এর আগে তারা বাড়ির সিসিটিভি ক্যামেরার সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে অকেজো করে দেয়। একপর্যায়ে তারা বিদ্যুতের মেইন সুইচও বন্ধ করে দেয়। পরে শিমুর লাশ বস্তায় ভরে গাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়।

তদন্তে জড়িত এক পুলিশ কর্মকর্তা জানান, শিমু-নোবেল দম্পতির এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। মেয়েটি ‘ও’ লেভেলে পড়ছে। ছেলেটির বয়স ৫ বছর। পুলিশ মেয়েটির সঙ্গে কথা বলেছে। গত শনিবার রাতে ভাইবোন একসঙ্গে একটি ঘরে ঘুমাচ্ছিলেন। এত কিছু হয়েছে- তারা কিছুই যানেন না। রোববার গভীর রাতে ঘুম থেকে ওঠার পর বাবা-মা কাউকে দেখতে পাননি। ওই দিন দুপুরের দিকে মায়ের ফোনে কল দিলে মেয়েটি বন্ধ পায়।

পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে ফরহাদ দাবি করেছেন, হত্যার আগে তিনি কিছুই জানতেন না। বন্ধুর ফোনে সাড়া দিয়ে বাসায় গিয়েছিলেন।

গত রোববার থেকে শিমুর স্বামী নোবেল দাবি করে আসছেন অভিনেত্রী স্ত্রী ওই দিন সকালে বাড়ি থেকে বের হয়ে যান। তখন থেকে মোবাইল ফোনে পাওয়া যাচ্ছে না। এরপর স্বজনরা তাকে খুঁজতে থাকে। ওই রাতেই স্ত্রীর খোঁজে রাজধানীর কলাবাগান থানায় জিডি করেন নোবেল। প্রসঙ্গত, সোমবার সকালে কেরানীগঞ্জের আলীপুর ব্রিজের কাছে একটি ঝোপ থেকে অজ্ঞাতনামা এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তখন পরিচয় পাওয়া না গেলেও রাতে আঙুলের ছাপ পরীক্ষা করে নাম-ঠিকানা পেয়ে জানা যায় বস্তায় থাকা লাশটি অভিনেত্রী শিমুর। এরপর ঘটনার মোড় ঘুরতে থাকে। ওই রাতে পুলিশ গ্রিন রোডে শিমুর বাড়িতে গিয়ে একটি গাড়ি দেখতে পায়। এতেএকটি প্লাস্টিকের সুতার বান্ডিলে পাওয়া গেছে। শিমুর শরীরের বস্তা একই সুতো দিয়ে সেলাই করা হয়েছিল। এরপর নোবেলকে আটক করে পুলিশ। পরে তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী তার বন্ধু ফরহাদকেও আটক করা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *