করোনার আরেক ঢেউয়ের দ্বারপ্রান্তে বাংলাদেশ

0

দেশে করোনা পরিস্থিতি আবারো ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। জ্যামিতিক হারে প্রতিদিন সংক্রমণ বাড়ছে। ২৬দিনের মধ্যে, সনাক্তকরণের হার ১.৩০ শতাংশ থেকে ১৪ শতাংশে ছাড়িয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, ন্যূনতম ১৪ দিনের মধ্যে শনাক্তকরণের হার ৫ শতাংশের বেশি হলে তা মহামারী হিসেবে বিবেচিত হবে। বাংলাদেশে আট দিন ধরে শনাক্তের হার ৫ শতাংশের ওপরে। ওমিক্রনের প্রভাবে যে হারে সংক্রমণ বাড়ছে তাতে বাংলাদেশ করোনার নতুন তরঙ্গের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছেছে বলে মনে করছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আফ্রিকায় শনাক্ত করা করোনার ধরন ওমিক্রন অন্যান্য ধরনের তুলনায় বেশি সংক্রামক। দেড় মাসে তা ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্বের প্রায় দুই শতাধিক দেশে। বাংলাদেশেও এর সামাজিক সংক্রমণ শুরু হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে দেশে আরেকটি ভাইরাসের ঢেউ আসছে।

দেশে করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, দুই দিনের নমুনা পরীক্ষার তুলনায় শনাক্তের হার ১৪ শতাংশের ওপরে। গত বছরের ২১ সেপ্টেম্বর রোগী শনাক্তকরণের হার ৫ শতাংশের নিচে নেমে আসে। ওই দিন শনাক্তকরণের হার ছিল ৪ দশমিক ৬৯ শতাংশ। সে হিসেবে ১০৮ দিন পর ৮ জানুয়ারি শনাক্তের হার ছিল ৫ শতাংশের বেশি। ওই দিন শনাক্তকরণের হার ছিল ৫ দশমিক ৬ শতাংশ।

গতকাল শনাক্তকরণের হার কিছুটা কমলেও তা ১৪ শতাংশের নিচে পড়েনি। নমুনা পরীক্ষার তুলনায় গত ২৪ ঘন্টায় সনাক্তকরণের হার ছিল ১৪.৩৫ শতাংশ। ২০ সপ্তাহ পরে, পরপর দুই দিন সংক্রমণ ১৪ শতাংশের বেশি ছিল।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের সংশ্লিষ্ট শাখার এক কর্মকর্তা বলেন, শুক্রবার সরকারি ছুটির দিন থাকায় নমুনা পরীক্ষা কম হয়েছে। এ কারণে পরের দিন রোগী শনাক্ত হয় কম। গত দুই বছরের সংক্রমণ পরিস্থিতি পর্যালোচনা করলে বিষয়টি পরিষ্কার হবে।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের সাপ্তাহিক প্যাথলজিক্যাল পর্যালোচনা বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ডিসেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহ থেকে সংক্রমণ বাড়তে থাকে। গত বছরের ২০ ডিসেম্বর থেকে শনিবার পর্যন্ত ২৬ দিনে শনাক্তকরণের হার 1১.৩০ শতাংশ থেকে বেড়ে ১৪ শতাংশ হয়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক এবিএম খুরশীদ আলম বলেন, ওমিক্রনের সামাজিক উত্তরণ শুরু হয়েছে। একই সঙ্গে ডেল্টা টাইপ সংক্রমণ ছড়াচ্ছে। কিন্তু সংক্রামক ওমিক্রন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ও ভাইরোলজিস্ট অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম বলেন, ওমিক্রন যে হারে ছড়িয়ে পড়ছে তাতে বাংলাদেশ এখন আরেকটি ঢেউয়ের দ্বারপ্রান্তে। জ্যামিতিক হারে সংক্রমণ বাড়ছে। হাসপাতালে রোগীর সংখ্যাও বাড়ছে। তাই হাসপাতালের জেনারেল ও আইসিইউ শয্যা দ্রুত বাড়াতে হবে। একই সঙ্গে পর্যাপ্ত অক্সিজেনের সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। এছাড়া সরকার কর্তৃক আরোপিত স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে জনসাধারণকে। অন্যথায় পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *