ভালো পানির সন্ধানে তুরাগে এসে ডলফিন মারা যাচ্ছে
ঢাকার তুরাগ নদীতে ডলফিনের সাঁতারের খবর উঠে আসে দেড় বছরেরও বেশি আগে। এ সময় জেলেদের জালে একটি ডলফিনও ধরা পড়ে। লকডাউনের কারণে নদীতে দূষণও কমে যাওয়ায় ডলফিনগুলো তুরাগে ফিরে আসছে বলে অনেকের ধারণা। এখন আবার ডলফিনের দেখা মিলতে শুরু করেছে। সোমবার বিকেল ও রবিবার সন্ধ্যায় তুরাগের আশুলিয়া এলাকা থেকে দুটি মৃত ডলফিন উদ্ধার করেছে ঢাকা জেলা মৎস্য বিভাগ। স্থানীয়দের দাবি, আশুলিয়ার ঘাটের জেলেরা ডলফিনটিকে টেনে দুই তীরে নিয়ে যায়। এ সময় মুখ দিয়ে রক্ত বের হচ্ছিল। দুটি মৃত ডলফিনের ওজন তিন থেকে পাঁচ পাউন্ড। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভালো পানির সন্ধানে দূষিত পানির ফাঁদে পড়ে তারা মারা যাচ্ছেন। সাভার উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম সরকার জানান, ডলফিন দুটি কর্ডাটা ঋতুর স্তন্যপায়ী প্রাণী প্লাটিনেস্টিডি পরিবারের অন্তর্ভুক্ত। এটিকে সাধারণ বাংলায় প্লেটিনিস্টা গঞ্জেটিকা বা গাঙ্গেটিক ডলফিন বা ডলফিন নামেও ডাকা হয়। এটি একসময় পদ্মা ও যমুনা নদীর তীরে অভয়ারণ্য ছিল। মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে তিনি বলেন, ঢাকার আশপাশের পরিবেশ দূষণের কারণে জলজ জীববৈচিত্র্য মারাত্মক হুমকির মুখে রয়েছে। এছাড়া তুরাগ নদীতে এ প্রাণীর খাবার এখন পাওয়া যায় না। এটি বিষাক্ততা, অপুষ্টির কারণেও মারা যেতে পারে। গবেষণায় মৃত্যুর কারণ জানা যাবে। তুরাগ পাড়ের স্থানীয়রা জানান, দুই দশক আগেও তুরাগের বুক চিরে ডলফিন ভেসে বেড়াত। কিন্তু দখল ও দূষণের কারণে নদীর প্রকৃত চরিত্র হারানোর পর ডলফিনও হারিয়ে যাচ্ছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের চেয়ারম্যান নিয়ামুল নাসের বলেন, তারা ভালো পানির খোঁজে এসে দূষণে পড়েছেন। আশেপাশে এরকম আরও ডলফিন পাওয়া যাবে। এ বিষয়ে গবেষণা প্রয়োজন। পানি দূষণ নিয়ন্ত্রণ বা জলজ পরিবেশের উন্নতি এখন সময়ের দাবি।