এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ, পাসের হার ৯৩,৫৮%

0

চলতি বছরের মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ফলাফল প্রকাশের মূল অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।

গণভবন থেকে ভার্চ্যূয়ালী যুক্ত হয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে ফলাফল ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরে সংবাদ সম্মেলনে ফলাফলের বিস্তারিত জানাবেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি।

শিক্ষা বোর্ডগুলোর তথ্য অনুযায়ী, মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) ও সমমানের পরীক্ষায় গড় পাসের হার ৯৩ দশমিক ৫৮ শতাংশ। এবার মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ২২ লাখ ৪০ হাজার ৩৯৫ জন। এর মধ্যে পাস করেছে ২০ লাখ ৯৬ হাজার ৫৪৭ জন।

৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডে গড় পাসের হার ৯৪.০৮, মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডে ৯৩.২২ এবং কারিগরি শিক্ষা বোর্ডে ৮.৪৯ শতাংশ।

ঢাকা শিক্ষা বোর্ডে পাসের হার ৯৩ দশমিক ১৫, জিপিএ ৫ পেয়েছে ৪৯ হাজার ৫৩০ শিক্ষার্থী।

ময়মনসিংহ বিভাগে পাসের হার ৯৭ দশমিক ৫২ এবং জিপিএ ৫ পেয়েছে ১০ হাজার ৯২ জন। যশোর শিক্ষা বোর্ডে পাসের হার ৯৩ দশমিক ০৩, জিপিএ ৫ পেয়েছে ১৬ হাজার ৪৬১ জন শিক্ষার্থী।

কুমিল্লা বোর্ডে গড় পাসের হার ৯৬,২৭ শতাংশ এবং ১৪ হাজার ৬২৬ জন শিক্ষার্থী জিপিএ ৫ পেয়েছে। চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডে গড় পাসের হার ৯১.১২শতাংশ, জিপিএ ৫ পেয়েছে ১২,৭৯১ শিক্ষার্থী। রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডে পাসের হার ৯৪ দশমিক ৭১ শতাংশ, জিপিএ ৫ পেয়েছে ২৭ হাজার ৭০৯ জন শিক্ষার্থী। বরিশাল শিক্ষা বোর্ডে গড় পাসের হার ৯০ দশমিক ১৯, জিপিএ ৫ পেয়েছে ১০ হাজার ২১৯ জন শিক্ষার্থী। সিলেট বিভাগে গড় পাসের হার ৯৬ দশমিক ৭৮ এবং জিপিএ ৫ পেয়েছে ৪ হাজার ৮৩৪ জন শিক্ষার্থী।

দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডে পাসের হার ৯৪ দশমিক ৮০ এবং জিপিএ ৫ পেয়েছে ১৬ হাজার ৫৭৮ জন শিক্ষার্থী।

বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি, উপ-শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন।

শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা এবং ২০৪১ সালের রূপকল্প প্রণয়নের মাধ্যমে আমরা শিক্ষা ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন আনতে চাই। জ্ঞানভিত্তিক শিক্ষার পরিবর্তে আমরা এখন দক্ষতা ও ব্যবহারিক শিক্ষাভিত্তিক পাঠ্যক্রম চালু করব। আমরা ২০২২ সালে ৬০টি স্কুলে এই পাঠ্যক্রমের পাইলট কার্যক্রম শুরু করব। ২০২৩ সালে, আমরা সারা দেশে এই শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করব।

এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফল যেকোনো মোবাইল ফোন থেকে এসএমএস, শিক্ষা বোর্ডের ওয়েবসাইট এবং নিজ নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ফলাফল জানা যাবে।

একই অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে শিক্ষার্থীদের মাঝে বিনামূল্যে বই বিতরণ কর্মসূচিরও উদ্বোধন করেন। প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে শিক্ষা বোর্ডগুলোর চেয়ারম্যানদের কাছ থেকে ফলাফলের অনুলিপি গ্রহণ করেন শিক্ষামন্ত্রী। দীপু মনি।

সকাল ১১টায় একই স্থানে সংবাদ সম্মেলনে ফলাফলের বিস্তারিত তুলে ধরবেন শিক্ষামন্ত্রী। এর পর থেকে ফল উন্মোচিত হয়।

২০২১সালে, পরীক্ষার্থীরা মাত্র তিনটি নির্বাচনী বিষয়ের মাধ্যমে মাধ্যমিকের প্রান্তিক সীমা অতিক্রম করার যুদ্ধে প্রবেশ করেছিল। দেশের ইতিহাসে এবারই প্রথম মাধ্যমিকে আংশিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। করোনা মহামারির কারণে ৫৪৪ দিন স্কুল বন্ধ ছিল এবং মাধ্যমিকের সব বিষয়ের পরীক্ষা নেওয়া হয়নি। একই কারণে মাধ্যমিকের পাঠ্যসূচিও আগে কমানো হয়েছিল।

করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় ৯ মাস বিলম্বের পর ১৪ নভেম্বর শুরু হয় এসএসসি পরীক্ষা। দেড় বছরের মধ্যে এটাই ছিল প্রথম পাবলিক পরীক্ষা। এবার এসএসসিতে পরীক্ষার্থী ছিল ২২ লাখ ২৬ হাজার ১১৩ জন।

যেভাবে জানা যাবে ফল

যেকোনো মোবাইল ফোন থেকে এসএমএসের মাধ্যমে ফলাফল পাওয়া যাবে। এর জন্য মোবাইল ফোনের মেসেজ অপশনে গিয়ে SSC লিখে স্পেস দিয়ে বোর্ডের নামের প্রথম তিন অক্ষর লিখে স্পেস দিয়ে রোল নম্বর লিখে স্পেস দিয়ে ২০২১ লিখে 16222 নম্বরে পাঠাতে হবে। মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের জন্য স্পেস দিয়ে দাখিল লিখে স্পেস দিয়ে বোর্ডের নামের প্রথম তিন অক্ষর লিখে স্পেস দিয়ে রোল নম্বর লিখে স্পেস দিয়ে ২০২১ লিখে ১৬২২২ নম্বরে পাঠাতে হবে। ফিরতি এসএমএসে ফল জানা যাবে।

এছাড়াও আপনি শিক্ষা বোর্ডের ওয়েবসাইট (http://ww/w.educationboardresults.gov.bd) ভিজিট করতে পারেন এবং রোল নম্বর, পরীক্ষার নাম এবং বোর্ড নির্বাচন করুন এবং সাবমিট বোতামে ক্লিক করুন। শিক্ষার্থীরাও তাদের নিজ নিজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে ফলাফল জানতে পারবে।

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো শিক্ষা বোর্ডগুলোর ওয়েবসাইটে (www.dhakaeducationboard.gov.bd) গিয়ে ‘রেজাল্ট কর্নার’-এ ক্লিক করে ‘EIIN’ নম্বর দিয়ে প্রতিষ্ঠানের ফলাফল পত্র ডাউনলোড করতে পারবে। এছাড়া কেন্দ্র ও প্রতিষ্ঠানের ফলাফল পত্রের সফট কপি জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার ই-মেইলে পাঠানো হবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোও ডিসি বা ইউএনও অফিস থেকে ফলের হার্ডকপি সংগ্রহ করতে পারবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *