নৌকায় ভোট দিয়ে আবারো দেশ সেবার সুযোগ দিন।রংপুরের জনসভায় প্রধানমন্ত্রী

0

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আবারও নৌকায় ভোট দিয়ে জনগণের সেবা করার সুযোগ দিতে রংপুরবাসীর প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, জনগণ নৌকায় ভোট দিয়ে দেশের স্বাধীনতা পেয়েছে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে দেশের উন্নয়ন হবে। মানুষের ভাগ্য বদলেছে; প্রতিটি ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছেছে এবং আওয়ামী লীগের সমর্থনে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। নৌকায় ভোট দিয়ে আওয়ামী লীগকে আবারো আপনাদের সেবা করার সুযোগ দিন- এটাই আপনাদের কাছে চাই।

বুধবার বিকেলে রংপুর জেলা স্কুল মাঠে বিভাগীয় সাধারণ সভায় প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। সমাবেশের আয়োজন করে রংপুর জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ। মহাসমাবেশ শুরু হওয়ার আগেই অনুষ্ঠানস্থল ও এর আশপাশ জনসমুদ্রে পরিণত হয়। বিদ্যালয়ের মাঠ ও প্রাঙ্গণে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীসহ সর্বস্তরের হাজার হাজার মানুষ অংশ নেন।

বেলা সাড়ে তিনটার দিকে প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানস্থলে পৌঁছান। এর আগে দুপুর সোয়া ১টায় হেলিকপ্টারযোগে রংপুর সেনানিবাসের হেলিপ্যাডে পৌঁছান তিনি। সেখান থেকে তাকে রংপুর সার্কিট হাউসে নিয়ে যাওয়া হয়।

সেখানে রংপুর বিভাগীয় সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী।

গত সাড়ে ১৪ বছরে বাংলাদেশ বদলে গেছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই পরিবর্তিত বাংলাদেশ আরও উন্নত হবে। উন্নয়নশীল দেশ, এরপর উন্নত দেশ। ডেল্টা প্ল্যান করেছি। সব ক্ষেত্রেই দেশের অগ্রগতি অব্যাহত থাকবে। আজকের তরুণরাই হবে আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। তারাই দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে, উন্নত করবে।

তিনি বলেন, নৌকা ব্র্যান্ড ক্ষমতায় এলেই দেশের উন্নতি হবে। কৃষকের ভাগ্য বদলে গেছে। নৌকা ব্র্যান্ডে ভোট আছে বলেই ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ গেছে; বাংলাদেশ এগিয়েছে, এগিয়ে যাবে। তাই নৌকায় ভোট দিয়ে আওয়ামী লীগকে আবারো আপনাদের সেবা করার সুযোগ দেবেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রী সবাইকে হাত তুলে অনুরোধ করলে উপস্থিত সবাই হাত তুলে প্রতিশ্রুতি দেন।

বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট তার পিতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, মা ও ভাইদের হারানোর পর থেকে তিনি বাংলাদেশের জনগণকে আপন মনে করেছেন এবং এর জন্য জীবন উৎসর্গ করতে প্রস্তুত রয়েছেন। প্রয়োজনে দেশবাসী। তিনি বলেন, আমি আমার বাবা-মা, ভাইকে হারিয়েছি। বাংলাদেশের মানুষ, বাংলাদেশের মানুষ- এটা আমার পরিবার, তারা আমার মানুষ। তোমার মধ্যে আমি আমার পিতামাতার ভালবাসা খুঁজে পাই; ভাই বোনের ভালোবাসা। তাই প্রয়োজনে বাবার মতো হতে হবে; বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য বদলাতে আমি আমার বাবার মতো আমার জীবন দিতেও প্রস্তুত- সেটাও বলতে চাই।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, নৌকায় ভোট দিয়ে জনগণের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়- আমরা তা প্রমাণ করেছি। আওয়ামী লীগ আমলে মঙ্গা ছিল না। খালেদা জিয়া ২০০১ সালে ক্ষমতায় এসে দুই হাতে টাকা লুটপাট করেন। তিনি ও তার ছেলেরা মিলে এদেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে খেলেছেন। ২০০৯ সালে আমরা ক্ষমতায় আসার পর জনগণের আর কোনো ক্ষতি হয়নি।

আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বিএনপি ও তাদের মিত্রদের বিভিন্ন সন্ত্রাস ও অপকর্মের তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, এখানে একটি গোষ্ঠী আছে, যারা সবসময় বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে খেলা করে। জাতির পিতাকে হত্যার মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছিল খেলা। বারবার ক্ষমতা দখল আর গুপ্তহত্যা-ক্যু-ষড়যন্ত্রের রাজনীতি।

তিনি প্রশ্ন তোলেন, সড়কে চলন্ত বাস পুড়িয়ে মানুষ পুড়িয়ে মারা হয়েছে; তারা কি মানব জাতি? ক্ষমতায় থাকলে লুটপাট করে খায়, ক্ষমতার বাইরে থাকলে ধ্বংস করে। যে খালেদা জিয়া ও তার দুষ্ট ছেলে তারেক জিয়াকে পুড়িয়ে ধ্বংস করতে পারে। তারা জানে না কিভাবে মানুষের উপকার করতে হয়। দেশের টাকা পাচার করে বিদেশে নিয়ে গিয়ে এখন সেই টাকা ব্যবহার করছে। এত বিলাসিতা কোথা থেকে আসে – এটাই আমার প্রশ্ন।

আদালতের রায়ে তারেক রহমান ও তার স্ত্রী জোবায়দা রহমানের ৯ বছর ও ৩ বছরের কারাদণ্ডের বিষয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা তাদের দুর্নীতির মামলা করিনি। তারা ইয়াজউদ্দিন, ফখরুদ্দিন এবং মঈনুদ্দিনের প্রিয় ছিল। সেই মামলায় তাদের শাস্তি হয়েছে।

২০০১-পরবর্তী সময়ে বিএনপি-জামায়াত জোটের শাসনামলে আওয়ামী লীগের রেখে যাওয়া শিক্ষার হার ৬৫ শতাংশ থেকে ৪৪ শতাংশে নামিয়ে আনারও সমালোচনা করেন প্রধানমন্ত্রী। খালেদা জিয়া এসএসসিতে উর্দু ও গণিত ছাড়া সব বিষয়ে ফেল করেছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, খালেদা জিয়া নিজেও ফেল করার কথা ভেবেছিলেন, কেউ পাস করবে না। এ জন্য তারা শিক্ষার হার কমিয়েছে। আমরা আবারও উদ্যোগ নিয়ে শিক্ষার হার বাড়িয়েছি। আমরা বিনামূল্যে বই দিচ্ছি। কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।

শেখ হাসিনা বলেন, অনেক সংগ্রাম করে আমরা গণতন্ত্র ফিরিয়ে এনেছি। মানুষ এখন শান্তিতে ভোট দিতে পারবে। ভোটের জন্য ছবিসহ ভোটার তালিকা তৈরি করেছি। স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স। দেশের মানুষের ভাগ্য বদলাতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *