সাগরে সুস্পষ্ট নিম্নচাপ ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে
আবহাওয়া অধিদফতরের সামুদ্রিক সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, দক্ষিণ আন্দামান সাগর এলাকায় নিম্নচাপটি দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর ও এর আশপাশের এলাকায় ঘনীভূত হয়েছে। সোমবার মধ্যরাতে একই এলাকায় এটি একটি স্বতন্ত্র নিম্নচাপে পরিণত হয়। এটি আরও ঘনীভূত হতে পারে।
আবহাওয়া অধিদফতরের সহকারী আবহাওয়াবিদ কাজী জেবুন্নেসা বলেন, “দুই দিন আগে দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন দক্ষিণ আন্দামান সাগরে একটি ঘূর্ণিঝড় (সাইক্লোনিক সার্কুলেশন) তৈরি হয়েছিল, যা একটি লঘুচাপে পরিণত হয়েছে। এরপর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। নিম্নচাপ, পরিষ্কার নিম্নচাপ, নিম্নচাপ, গভীর নিম্নচাপ অতিক্রম করলেই ঘূর্ণিঝড় ঘটবে। মঙ্গলবার এটি নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে। এর গতিবিধি ও প্রকৃতি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।
ভারতীয় আবহাওয়া অফিস তাদের পূর্বাভাসে বলেছে, মঙ্গলবার নিম্নচাপে পরিণত হওয়ার পর বুধবার ঘূর্ণিঝড়টি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে। প্রাথমিকভাবে উত্তর-উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হলেও ১১ মে ঘূর্ণিঝড়টি ধীরে ধীরে উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে বাংলাদেশ-মিয়ানমার উপকূলের দিকে মোড় নিতে পারে।
এদিকে মঙ্গলবারের আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, রাজশাহী, নেত্রকোনা, খুলনা, চুয়াডাঙ্গা ও কুষ্টিয়া জেলার ওপর দিয়ে তাপপ্রবাহ বিরাজ করছে এবং দেশের অন্যান্য স্থানে মৃদু থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহ বিরাজ করছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে। এমন তাপপ্রবাহ আরো দুই দিন থাকতে পারে। শনিবার থেকে তাপমাত্রা কমতে পারে এবং বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
মোস্তফা কামাল পলাশ, পিএইচ.ডি. কানাডার সাসকাচোয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া ও জলবায়ু বিষয়ক গবেষক বলেন, “ঘূর্ণিঝড়টি মোখা ভোলা ও কক্সবাজার জেলার মধ্যবর্তী উপকূলে আঘাত হানবে বলে আশঙ্কা রয়েছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের অগ্রভাগ দুপুরের মধ্যে উপকূলে আঘাত হানতে শুরু করবে। এবং ১৪ মে (রবিবার) মধ্যরাতে। উপকূল অতিক্রম করার সম্ভাবনা রয়েছে। ঘূর্ণিঝড়টির অর্ধেকটি উপকূল অতিক্রম করার সম্ভাব্য সময় ১৫ মে সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত। এটি উপকূলে আঘাত হানলে এটি খুব তীব্র হতে পারে।’
এদিকে সাগরে ঝড়ের জন্ম হলে দেশের অধিকাংশ এলাকায় তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। আবহাওয়া অধিদফতরের আবহাওয়াবিদ একেএম নামজুল হক বলেন, তিনটি কারণে তাপমাত্রা বাড়ছে। এপ্রিল এবং মে দেশের উষ্ণতম মাস। গত এপ্রিলে স্বাভাবিকের চেয়ে কম বৃষ্টিপাত হয়েছে। এই দুই মাসের বৈশিষ্টের কারণে এখন গরম থাকে। উষ্ণতা বৃদ্ধির দ্বিতীয় কারণ কম বৃষ্টিপাত। মে মাসের শুরুতে দেশের বিভিন্ন স্থানে কিছুটা বৃষ্টি হলেও গত দুই দিন বৃষ্টি খুব কম। আর এ কারণে গরম বাড়ছে। নাজমুল হক তাপমাত্রা বৃদ্ধির তৃতীয় কারণ হিসেবে সাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপকে উল্লেখ করেছেন। তার মতে, এখন সমুদ্র থেকে বাতাস আসছে না; পরিবর্তে, ভূপৃষ্ঠের বায়ু সমুদ্রের দিকে ধাবিত হচ্ছে। আর সেই কারণেই গরম।