আরো অস্থির চিনি বাজার।শুল্ক প্রত্যাহারের পর দাম কমার পরিবর্তে বেড়েছে।
• সরকার কর্তৃক নির্ধারিত মূল্য ১০৪ টাকা, প্রতি কেজি ১৩০ টাকা থেকে ১৩৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে
• কোম্পানিগুলো চিনি বন্ধ করে দাম বাড়াচ্ছে, অভিযোগ পাইকারদের
আমদানি শুল্ক কমলেও চিনির বাজার স্বাভাবিক হয়নি। সরকার খোলা চিনির দাম কেজি প্রতি ১০৪ টাকা নির্ধারণ করলেও এ হারে কোথাও পাওয়া যাচ্ছে না। খুচরা বিক্রেতারা প্রতি কেজি চিনি বিক্রি করছেন ১৩০ থেকে ১৩৫ টাকায়। খোলা চিনি পাওয়া যায় কিন্তু প্যাকেটজাত চিনি নয়। কেউ কেউ বেশি দামের কারণে বিক্রি বন্ধ করে দিয়েছেন। গতকাল শনিবার রাজধানীর মোহাম্মদপুর টাউন হল মার্কেট, কারওয়ান বাজারসহ কয়েকটি মার্কেটে খোঁজ নিয়ে এসব তথ্য জানা গেছে।
সরকার চিনির দাম কমানোর ঘোষণা দেওয়ায় বাজারে নতুন সংকট তৈরি হয়েছে বলে দাবি খুচরা ব্যবসায়ীদের। পাইকারি বাজারে চিনির দাম অস্বাভাবিক বেড়েছে। অতিরিক্ত চার্জের কারণে ডিলাররা ক্রয় রশিদ দিচ্ছেন না।
বাজারে চিনির দাম স্থিতিশীল রাখতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) গত ২৬ ফেব্রুয়ারি চিনি আমদানিতে নিয়ন্ত্রক শুল্ক ৩০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২৫ শতাংশ করে। একই সঙ্গে অপরিশোধিত চিনির প্রতি টন ৩ হাজার টাকা এবং পরিশোধিত চিনির ওপর ৬ হাজার টাকা আমদানি শুল্ক প্রত্যাহার করা হয়েছে। আমদানিকারক ও বিপণনকারীদের তথ্য অনুযায়ী, শুল্ক অব্যাহতির এই সুবিধার আওতায় চিনি আমদানি করা হলে প্রতি কেজিতে দাম ৫ থেকে সাড়ে ৫ টাকা কমবে বলে আশা করা হচ্ছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ৬ এপ্রিল বাণিজ্য মন্ত্রণালয় খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি খোলা চিনির দাম ১০৪ টাকা এবং প্যাকেটজাত চিনির দাম ১০৯ টাকা নির্ধারণ করেছে। কিন্তু রাজধানীর কোথাও এই দামে চিনি বিক্রি হয়নি। দাম কমানোর ঘোষণার পর থেকে কোম্পানি ও ব্যবসায়ীরা চিনির সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছে। চিনির দাম কমার বদলে বেড়েছে। সরকারি সংস্থা টিসিবি জানায়, গত এক বছরে চিনির দাম বেড়েছে ৫৩ শতাংশের বেশি।
মোহাম্মদপুর টাউন হল মার্কেটের আলম স্টোরের স্বত্বাধিকারী মোঃ রাসেল জানান, রোজার আগে কোম্পানির ডিলাররা কিছু প্যাকেট চিনি দিয়েছিলেন। কিন্তু রোজার সময় কোনো চিনির প্যাকেট পাওয়া যায়নি। ভেবেছিলাম ঈদের পর কোম্পানিগুলো চলে যেতে পারে। কিন্তু এখন প্যাকেট চিনির নামের গন্ধও পাওয়া যায় না। বাজারে কিছু খোলা চিনি পাওয়া যায়। তবে দাম বেশি। পাইকারি পর্যায়ে প্রতি কেজি ১২৫ টাকায় কেনা হয়। সেই সঙ্গে আছে শ্রম খরচ। তাই ১৩০ টাকার নিচে বিক্রি করা যাবে না।
কারওয়ান বাজারের জব্বার দোকানের এক বিক্রেতা জানান, গতকাল তারা পাইকারি দোকান থেকে এক বস্তা চিনি কিনছেন ৬ হাজার ৪০০ টাকায়। শ্রমের খরচ যোগ করে ঘাটতি বাদ দিলে প্রতি কেজি দাম পড়ে ১২৮ টাকার বেশি। ফলে ১৩৫ টাকার নিচে বিক্রি করা যাবে না।
পাইকারি ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, শোধনাগার ও বিপণনকারীরা চিনি বন্ধ করে দাম বাড়াচ্ছে। মৌলভীবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি বশির উদ্দিন বলেন, চিনির বাজার পুরোপুরি উল্টে গেছে। দাম আরও বেড়ে এখন পাইকারি পর্যায়ে বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ১৩০ টাকায়। বর্তমানে পাইকারি বিক্রেতাদের কাছে চিনির সরবরাহ খুবই কম। কোম্পানিগুলো পিছিয়ে আছে। এ কারণে চিনির বাজারে অস্থিতিশীলতা দেখা দিয়েছে।